সুজিত দেবনাথ, ফিচার রাইটার ও শিক্ষক, মালদহ:

ভালো মানুষের জীবনে বারবার খারাপ কিছু আসে। শক্ত পাথুরে অনুর্বর মাটির বিপরীতে, ভালো মানুষরা ঠিক উর্বর নরম মাটির মতো হয়। উর্বর মাটিকে লাঙ্গলের ফলা দ্বারা কেটে চূর্ন বিচূর্ন করা হলেই, সেই মাটি সবুজ শস্যের জন্ম দিতে সক্ষম হয়। 

অনুরূপভাবে ভালো মানুষকে অনেক খারাপ পরিস্থিতি লাঙ্গলের মতো কেটে ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। আর ভালো মানুষগুলো তখনই কর্ষিত মাটির ন্যায় জীবনে ভালো কিছু জন্ম দিতে সক্ষম হয়। ভালো মানুষের জীবন প্রাকৃতিক পরিবেশের সব সূত্র দ্বারা পরিচালিত হয়। তাদের জীবনে রাত আছে, দিন আছে, সূর্যোদয় আছে, সূর্যাস্ত আছে, চ্যালেঞ্জ আছে, ক্ষুদ্র পরাজয় আছে, বৃহৎ জয় আছে। হয়তো আপনি এখন রাতে আছেন, শুধু জানবেন সূর্যোদয় হবে। 

যে নকল করে পরীক্ষায় পাস করে, আপাতদৃষ্টিতে তাকে সফল সুখী মনে হলেও সে ভীষন অসুখী মানুষ,কারন সে কখনো নিজেকে বিচার করার সুযোগই পেল না। অবশ্য এই সমস্ত লোকগুলোই ভালো মানুষগুলোকে বিচার করতে আসে। তাদের পথে বাঁধা হয়ে আসে। খারাপের বাঁধাকে অতিক্রম করার সামর্থ্য থাকলেই তো আপনি ভালো। 

আর ভালো মানুষরা কোনরূপ নকল ছাড়াই জীবনের প্রত্যেকটা পরীক্ষা দিয়ে সফল হতে চায়। তাই তারা হয়তো কিছুবার আশানুরূপ ফল না পেয়ে ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে অবশেষে সফলতা নিয়েই বাড়ি ফেরে। ভালো মানুষগুলো টিকে থাকাটাকেই ভালো থাকা মনে করে। 

সে হলো ভালো মানুষ, যে কেটে চূর্ন বিচূর্ন হবার পরেও নিজের শুভ শক্তি দ্বারা খারাপকে জয় করতে পারে। যোদ্ধা তো সে ব্যক্তিই হয়, যে খারাপের বিচ্ছিন্ন সব আঘাতে শরীর জর্জরিত হয়ে যাবার পরও লড়তে থাকে, যতক্ষন প্রান থাকে শরীরে।

যখন আপনার শরীর বেয়ে রক্ত ঝরছে, তখন আপনি ভগবানের প্রতি হতাশ হয়ে যদি ভগবানকে বলেন-- প্রভু দেখো খারাপ লোকগুলো কতো সুখে আছে, যুদ্ধক্ষেত্রে ওদের শরীরে আঁচড় কাঁটা রক্ত নেই, আর আমি ভালোর জন্য লড়াই করেও কেন রক্তাক্ত?

তখন ভগবান বলবে-- তুমি শুধু লড়ে যাও, তোমার শরীরের ক্ষতগুলো নিরাময় হয়ে যাবে একদিন, খারাপগুলোর তো মুন্ডু যাবে একদিন যা কখনোই নিরাময় হবে না।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours