দীপ্তেন্দু চক্রবর্তী, প্রবাসী লেখক, টরোন্টো, কানাডা:

অনেকদিন আগে বুদ্ধদেববাবুর আমলে কতকগুলো রাজ্যের সংস্কার নিয়ে কিছু পরিকল্পনা লিখেছিলাম। আমি দৃঢ় ভাবে মনে করি একটি দেশের বা রাজ্যের ভিত্তি হলো তার শাসন ব্যবস্থা। পুলিশ তার শক্ত পিলার আর আদালত হচ্ছে ছাদ যেখানে মানুষ গিয়ে আশ্রয় পেতে পারে। আমি বহুকাল বিদেশে থাকা দরুন দেখেছি প্রথম বিশ্বর শক্তিশালী হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে তার শাসন ব্যবস্থা আর পুলিশ আদালতের কঠোর আপোষহীন যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে। আমাদের রাজ্যে আমরা খুব অসহায়। মাফিয়ারা দেশ নিয়ে নিয়েছে। সর্বদলীয় দলেরা নিজেদের মধ্য সমঝোতা করে নিয়েছে বহুদিন হলো যে তারা কখনো নিজেদের মধ্যে কাউকে শাস্তি দেবে না। রাজ্যের মানুষদের যেন বিন্দু মাত্র সচেনতটা নেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার। দেখছেন না তামাশা? জেল খাটা  অপরাধী সে আজ টিভিতে বসে নানা রকমের কথা বলে চলছে। মিডিয়া এই মাফিয়াদের সাথে যুক্ত। আমাদের কোনো উপায় নেই আবার দেশকে স্বাধীন করার এই মাফিয়াদের হাত থেকে। লোকসভা অপরাধীতে ভর্তি। বিশ্বের কোনো দেশে কোনো অভিযুক্ত বা অপরাধী নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে না। অথচ দেশের কোনো প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট বা কোনো সাংসদ কোনোদিন প্রতিবাদ করেনি যে এই অপরাধীপূর্ণ  লোকসভায় তিনি ঢুকবেন না। ছাত্র বিপ্লব ছাড়া এই মাফিয়া শাসন মুক্ত করা সম্ভব না। তবুও লিখেছিলাম কয়েকটা রিফর্মের কথা যাতে আমাদের রাজ্যকে খানিকটা পাল্টানো যায়। সেটাই আপনাদের কাছে বলছি।:

১) পুলিশ রিফর্ম। আমাদের পুলিশ রিফর্ম করতেই হবে। পুলিশকে সরকারের কব্জা থেকে ছাড়িয়ে আনতে হবে আইন করে। মনে করুন এক নতুন সরকার এসে আইন পাশ করলো যেখানে কোনো নেতা, কাউন্সিলর, মন্ত্রী বা আমরা কেউ পুলিশের সাথে কোনো ব্যাপারে কথা বলতে পারবে না। এদেশের মতো অর্থাৎ কানাডার অনুরূপ। কোনো মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী পুলিশের সাথে কোনো কথা বলে না। পুলিশ কোনো মন্ত্রীকে পাহারা দেয় না বা স্যালুট করে না। পুলিশ চালায় এদেশের মিউনিসিপালিটি একটা সিভিল কমিশন দিয়ে। এই কমিশন পুলিশের কাজ দেখে। পুলিশের প্রমোশন বদলি সব পুলিশ কর্তারাই করে থাকে। সরকারের  কোনো অধিকার নেই এখানে কোনো রকমের হস্তক্ষেপ করার। আমাদের পুলিশের যথেষ্ট দক্ষ। কিন্তু তাদের স্যালুট করতে হয় একজন অশিক্ষিত গুন্ডা কাউন্সিলর বা মন্ত্রীকে। আইন আনতেই হবে যাতে কনস্টেবল থেকে যেকোনো পুলিশ অফিসার বুক ফুলিয়ে নির্ভয়ে কাজ করতে পারে। মনে করুন একটা পাঁচ জনের কমিশন করা হলো অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি, সচিব, পুলিশ কর্ত্তাদের নিয়ে। এরা পুলিশের ভালো মন্দ দেখবেন। এদের হাতে সম্পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হবে ইলেকশন কমিশনের মতো। এদের নিজস্ব একদল পুলিশ থাকবে  যারা "ওয়াচ  ডগ " হিসাবে সারা রাজ্যের পুলিশের কাজ কর্মের হদিশ রাখবে। নাগরিকদের হেনস্থা করলে, তাদের রক্ষা না করলে কমিশনের পুলিশ এদের গ্রেপ্তার করে স্পেশাল আদালতে তুলবে। নতুন করে পুলিশের শিক্ষা দিতে হবে যেখানে শেখানো হবে কি করে ভয় না পেয়ে মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে পারে যদি সে আইন ভঙ্গ করে। তারজন্য চাই বিধান রায়ের মতো রাজধর্ম পালন করা মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশের নানা অভিযোগ হতাশা আছে।  বহুক্ষণ কাজ, বাড়ি থেকে অনেক দূরে পরে থাকে মাসের পর মাস। কোনো ওভার টাইম নেই, কোনো সন্মান পান না। কেউ এদের জন্য ভাবে না গালি দেওয়া ছাড়া। আরো বহু কাজ করতে হবে এই পুলিশ রিফর্ম নিয়ে। (ক্রমশঃ)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours