শ্যামা আরজু, লেখক, বাংলাদেশ:

বিয়ের পর ভালোবাসার মানুষকে নগ্নরূপে স্বামীকে (প্রভু) হয়ে উঠতে দেখে আমি পুরোপুরি বিদ্ধস্ত হয়ে পড়ি। আমি বুঝতে বাধ্য হই যে, আমি আসলে ওর কাছে বৈধ একটা দাসী মাত্র। কথায় কথায় মারধোর।গালাগালি। টু শব্দটি করলেই তালাক দিয়ে দেয়ার হুমকি। এর ভিতরে আছে নদীর প্রতি বাঁকে বাঁকে  অনেক গল্প  সেগুলো বললে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যাবে।। যদি সে মানুষটি হয় সংবেদনশীল। তাই সেই গল্পগুলো আজ না হয় নাই বললাম । কিন্তু যেটুকু না বললেই নয় সেটুকু হল, আমি আর সিক্ত হই না কিছুতেই। তার প্রয়োজনটা খুব  কমই। হতো  তবু যখন হতো তখন ঘুমন্ত আমাকে ঘুম থেকে টেনে-হিঁচড়ে উঠিয়ে নিয়ে যেত, যেমনটা পুরুষ করে ধর্ষণ করার জন্য। অবশ্য যদি তার মুখ বেঁধে না রাখে সে ক্ষেত্রে  সেই মেয়েটি চিৎকার  করতে পারে। কিন্তু আমি তো বৈধ, আমি তাই চিৎকারও করতে পারি নাই। তার উপরে আমার দুই শিশুর মাঝে আমি ঘুমাতাম। সে একা না ঘুমালে নাকি তার ঘুম হতো না।  তাই কোন শব্দ না করে  উঠে যেতাম।  তারপর সে রমণ করার জন্য  প্রাণপণে চেষ্টা করত। যদিও তার স্থায়িত্ব ছিল খুবই কম। মাঝে মাঝে বলতাম, এই টুকু কাজ না করলেই তো হয়! তখন একবার কার কাছ থেকে শুনে কি একটা স্প্রে কিনে নিয়ে এলো তার স্থায়িত্ব প্রমাণ করার জন্য। আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।  আমার নরম জায়গায় প্রচণ্ড চুলকানি হতো। চুলকানি থেকে ক্ষত হয়ে গেল। জ্বর চলে এলো। ডাক্তারের কাছে গেলাম একাই।

ঠিক এমন মানুষটাই কথায় কথায় আমাকে তালাক দেয়ার হুমকি দিতো। যদিও শেষ বেলায়  তাকে তালাক আমারই দিতে হলো। আমি মাঝে মাঝে ওকে বলতাম আপনি এমন ধমকাতে ধমকাতে শেষে দেখবেন আমিই দিয়ে  বসে আছি। আমার এই কথা যে সত্যি হয়ে যাবে  সেটা অবশ্য আমি কল্পনাও করতে পারিনি। 

যাই হোক সে তো চেষ্টা করত। চেষ্টা করত রমন করতে, আমিতো সিক্ত হই না তবু। আমি সিক্ত হইনা কেন এই অপরাধে সে আমাকে প্রচন্ড মারতো। তারপরও রেহাই দিতো না। তার গালের ভেতর থাকা একদলা থু দিয়ে সে আমাকে সিক্ত করার মাধ্যমে তার প্রয়োজন মেটাতো। তারপর অনেকটা সময় ধরে আমার শরীর ঘিনঘিন করতো খুব। আমার সিক্ত না হবার অপরাধ সে আমার ছোটভাইকে বলতো। এসব ভেবে আমি এখনো অসুস্থ হই। আমার সিভিয়ার ডিপ্রেশন হয়ে যায়। ষোলো বছর সংসার জীবন চালিয়ে নিয়েছি। সামাজিকতার কারণে, রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থার কারণে আমি ডিভোর্স দিতে অনেক দেরি করে ফেলেছি। যার কারণে বাকিটা জীবন আমাকে অবশ্যই এই ডিপ্রেশন বয়ে বেড়াতে হবে এবং হচ্ছেও।

আমি জীবন দিয়ে শিখেছি, ভালো মানুষ খারাপ হতে পারে কিন্তু খারাপ মানুষ কখনোই ভালো হয় না। যারা মনে করে ভালো হয়ে যাবে  তারা ভুল করে  অথবা যারা বলে  ভালো হয়ে গেছে  তারা সামাজিকতার কারণে নিজের স্ট্যাটাস তুলে ধরার জন্য মিথ্যা গল্প বলে। কত জনের এমন মিথ্যা আমি নিজ চোখে দেখেছি। ঘরের মধ্যে সারা জীবন ধরে গালাগালি আর মারামারি করে  অথচ শেষ বেলায় এসে  দুজনে "হ্যাপি কাপল" মার্কা ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্টায়।

থু দেয়ার রিয়্যাক্ট অপশসনটা নাই।

উহ!

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours