তানজিন তিপিয়া, লেখক ও রন্ধন বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ:

সাহিত্য জীবন করে সুন্দর। আসলেই কি তাই? “বাস্তবে, কোন দিনও নয়”। জীবন তো শৃঙ্খলার নির্দিষ্ট রেখায় কাঁটা তারের উপর চোখ খুলে পথ চলার নাম। সহজ,  সরল, সমৃদ্ধ করতে একাই লড়ে যাওয়া। তবে সাহিত্যে আনন্দ বিনোদনের একটি স্তর রয়েছে যা কিছু সময়ের জন্য মন বুলিয়ে দিতে পারে কিন্তু সমস্যা তখনি হয় যখন আপনি সেই মুখ্য চরিত্রে নিজেকে খোঁজার চেষ্টা করবেন বা নিজেই সেই চরিত্রকে ধারণ করবেন।

স্রষ্টা পৃথিবীতে আমাদের বিশেষ বৈশিষ্ট প্রদান করেই প্রেরণ করেছেন। তাই “কাউকে অনুকরণ নয়, নিজেকে অনুধাবন করা বড় জরুরী”।  

এক সময় আমিও সহমত হতাম এই প্রসঙ্গে। শিক্ষক এবং অধ্যাপকদের কাছে শুনে। দ্বিমত থাকার পরও ভাবতাম উনাদের কথা মতো না বললে তো, মানুষ উল্টো আমার উপরি হাসা আরম্ভ করবে। একদিন ভাবলাম, উনাদের মতোই আমারও মস্তিস্ক রয়েছে। কেন না একটু ব্যবহার করি? শুরু করলাম গুরুত্বের সাথে সাহিত্য পড়া। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা অবিস্কার করলো উপরের “তৃতীয়” লাইনটির। ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে ঐ একই বিদেশী বিকৃত, অদ্ভুদ সংস্কৃতি, অবৈধকে বৈধকরণ, কিছু ইতিহাস, কাহিনি, জীবনী যেগুলো না জানলে আপনার কিছুই আসে যায় না, বরঞ্চ না জানাই শ্রেয়। এমনটি মোটেও নয় যে সাহিত্যে ভালো শব্দটি একদম নেই কিন্তু হয় কি ভালো জিনিসগুলো হাজার কোটি খারাপের নিচে চাপা পরে যায়। কারণ মানুষ বাস্তবতাকে খুব ভয় করেন। কঠোর সত্যগুলো উৎঘাটন করতে আমরা আগ্রহী নই। সারাক্ষণ মেকি সুখে বিভর হতেই মন ব্যস্ত।

তবে সত্য পরীক্ষার দু’এক রাত আগে , আমরা খুব পরিশ্রমী হয়ে উঠি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে উত্তর বানাই, রাত জেগে পড়াশোনা করি, পরিক্ষায় ফলাফলও ভালোই আসে। কিন্তু  একটি কথা বলতেই হয়, যে স্বাদ, রমণ, সুখ, শান্তি, রত্ন, সাচ্ছন্দ্য, সার্থকতা পৃথিবীর ধর্ম গ্রন্থগুলোর, শব্দমালায় লুকিয়ে আছে, তা সাহিত্যের লক্ষ লক্ষ বইয়ের কোটি কোটি লাইন একত্র হয়েও একটি শব্দের সমান হতে পারবে না। হ্যাঁ আপনার, আমার আস্থার বিশ্বাস হতে পারবে না। সাহিত্য ঐ পর্যায়ে পৌছতে পৌঁছতে এই পৃথিবীটাই না শেষ হয়ে যায়।   

-আমি তোমাদের পৃথিবীতে ঠাই করে দিয়েছি এবং তোমাদের জীবিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। তোমরা অল্পতেই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো- কুরআন। 

-যেমনটা একটি মোমবাতি আগুন ছাড়া জ্বলতে পারে না, ঠিক সেইরকমই একটা মানুষ আধ্যাত্মিক জীবন ছাড়া বাঁচতে পারে না- গৌতম বুদ্ধা। 

-যে অপরের খাবার কেড়ে খায় তার কোন দিন পেট ভরে না। যে পাঁচজনকে দিয়ে খায় সে কোনদিন অভুক্ত থাকে না- শ্রী কৃষ্ণ।

অথচ  আমরা করি সবসময় উল্টোটা যা আছে তাতে ভালো নেই, যা নেই তা নিয়ে মাতামাতি।  

বিগত বছরেগুলোতে এমন কিছু মানুষের সাথে পরিচিত হলাম যারা সাহিত্যের সান্নিধ্যে এতোটাই সুখি যে সব কিছু কেরে নিলেও তাদের হাসি থাকবে অমলিন। আমি এদের চেহেরার দিকে চেয়ে ভাবি, যদি এরা নিজ ধর্ম গ্রন্থগুলো খুলে একবার দেখত যদি তারা তাদের বিধাতার সন্ধান খুঁজে পেতো। তাদের এই সুখের মাত্রাটুকু কোন পর্যায়ের হতো?। বড় জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে হয়, তারা আসলেই কি সুখী বিধাতার বিধান ছাড়া? এটি আমার মতো অনেকের-ই আত্মার বক্তব্যের মন্তব্য, সাহিত্যমনারা আমাদের অনভিজ্ঞ ভেবে করুণার দৃষ্টিতে চেয়ে এড়িয়ে যেতেই তো পারেন।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours