কাশের বনে হাওয়ার দোলা আর শরতের মেঘের ভেলা আনন্দময়ী মায়ের আগমন বার্তা বয়ে আনছে। আজ সেই ক্ষণ , মহালয়া। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অমাবস্যায় পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সুচনা লগ্নই মহালয়া। এই পুণ্য তিথিটি পিতৃপূজা ও মাতৃপূজার সন্ধিক্ষণ। রামায়ন অনুসারে শ্রী রামচন্দ্র এই তিথিতে তাঁর প্রয়াত পিতৃপুরুষদের তর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে লঙ্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে দেবী মহামায়ার অকাল বোধনে রত হন। তাই এই মহালয়ার সময়ে দেবী আদ্যাশক্তির মর্ত্যে পদচিহ্ন পড়ে বলে ধারনা। আবার মহাভারত থেকে জানা যায় কর্ণ কে মৃত্যুর পর পুনরায় একপক্ষকাল যাবৎ পৃথিবীতে থাকতে হয় তর্পণের জন্য। সেই সময়কেই পিতৃপক্ষ বলে। তর্পণের অর্থ খুশি করা। প্রয়াত উর্ধ্বতন তিন পুরুষের উদ্দেশ্যে এই দিনে তর্পণ করলে তাঁরা পিতৃলোক থেকে দেব লোকে অর্থাৎ মহা আলয়ে যাত্রা করেন। তাদের মুক্তি ঘটে তাই এই দিনটি মহালয়া নামে পরিচিত। এটি বড় পুণ্য দিন। শোকের দিন মোটেও নয়। এই দিনে পিতৃপুরুষের আত্মা যেমন তৃপ্ত হন তেমনি দেবী আদ্যাশক্তির আগমন ঘটে। তাই মহালয়া শুভ। সবসময়ই শুভ।তাই শোক ভুলে এই অতিমারীর সময়ে আমরা মহালয়ার এই দিনে পৃথিবীর শান্তি, সুখ ও শ্রীর জন্য বরং প্রার্থনা করি। মায়ের আগমনে সব অশুভ, অসুখ দুর হোক।চলুন না যে যার সামর্থ্য মতো নতুন কিছু কিনি। আমাদের সামান্য প্রয়াসে যদি হাসি ফোটে দোকানীর শুকনো মুখে, খেতে পায় তাদের পরিবার তবেই না আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে।
নাইবা হোল এবছর মন্ডপে মন্ডপে ঘোরা তাতে আনন্দ থেমে থাকবে না। আনন্দময়ীর আগমনে মন ভরে উঠুক সকলের। বিষাদ মুছে জেগে উঠুক জীবনের আত্মা। ভালো থাকুন সকলে মিলে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours