সেই এপ্রিল থেকে ঘরবন্দী। তার আগে মুক্ত বিহঙ্গের মত স্বাধীন দিনযাপনের কথা এই মুহূর্তে ভারতবাসীর কাছে সোনার পাথরবাটির মতই অলীক বোধ হয়। মুখোশের আড়ালে নিজের অস্তিত্বের সঙ্কট টের পাচ্ছেন সবাই। ক্রমাগত করোনা আতঙ্কে ভুগতে ভুগতে মানসিক বোধগুলি তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। তার ওপরে চারিদিকে নানা রকমের গুজব এই রোগটিকে ঘিরে। কেউ বলছেন গরম খান তো কেউ বলছেন ভিটামিন খান। মিডিয়ায় নিত্য নতুন উপদেশ আর আক্রান্তের পরিসংখ্যান দেখে শুনে আম জনতা বিভ্রান্ত। আতঙ্কিত মানুষ সঠিকভাবে না বুঝেই যথেচ্ছ পরিমাণে বিজ্ঞাপিত ভিটামিন, ওষুধ ইত্যাদি নিজেদের ওপর প্রয়োগ করে চলেছেন সাইড এফেক্ট কি হবে তা না ভেবেই। এসব আচরণ থেকে সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে না পেরে মানুষ কতটা অবসাদগ্ৰস্ত, আতঙ্কিত। আসলে স্বাধীনতা হীনতায় বাঁচা খুব কষ্টকর। এই করোনা ভাইরাস মানুষের জীবনযাপনের স্বাধীনতাটাই কেড়ে নিয়েছে।
বর্তমানের এই পরাধীন অবস্থার মধ্যেই আগস্ট মাসের পনেরো তারিখ নিঃশব্দে এসে গেল। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার দিবস এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী শ্রী অরবিন্দ ঘোষের জন্মদিন এই পনেরোই আগস্ট। যদিও সাল আলাদা। গত বছর পর্যন্ত স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের তোড়জোড় শুরু হোত কত আগে থেকে। এবছর সব কেমন নীরব নিশ্চুপ। আসলে এই ভয়ঙ্কর সময়ে রুজি রোজগারে টান পড়েছে সকলেরই। তাই উৎসব বা আনন্দ কোনকিছুর ইচ্ছেই সেভাবে পূর্ণ হওয়া সম্ভব নয়। তবুও আপামর ভারতবাসী আজকের দিনটি শ্রদ্ধার সাথেই পালন করবে তাঁদের হৃদয়ে। প্রণাম জানাবে সেই সব প্রণম্য স্বাধীনতা সংগ্ৰামীদের। সেই সঙ্গে প্রণাম জানাতে হবে ডাক্তার, নার্স, সহ সমস্ত জরুরী পরিষেবার কর্মীদের যারা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে আমাদের রোগের শৃঙ্খল থেকে স্বাধীন করার জন্য। আজ স্বাধীনতা দিবসের এইপুণ্য লগ্নে আপামর ভারতবাসীর সমস্ত অশুভ পরাধীনতার অবসান ঘটুক এই আশা করি। জয় হিন্দ। বন্দেমাতরম।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours