অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়, লেখিকা, দুর্গাপুর:

সাধারণ মানুষ রামায়ন নিয়ে কোন দিনই অশান্তির আঁচ পায়নি বরং রামায়ন যেন রমনীয় শান্তির কথা বলেছে, রামায়ন মানেই সবুজ বন, রামায়ন মানেই স্বর্ণ তৃষ্ণাকে কটাক্ষ করে, অহঙ্কারকে পরাজিত করে এক চিরন্তন, প্রজাতান্ত্রিক রমনীয় রাজত্ব প্রতিষ্ঠার মহাকাব্য, যেখানে ঐশ্বর্যের চেয়েও মূল্যবোধ অনেক মূল্যবান, যেখানে ক্ষমতার চেয়েও মমতার গুরুত্ব বেশি। তাহলে রামকে নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে অমর্ত্য সেন বা বাম রাজনীতির প্রতি অকারণে অশ্লীল বিদ্রুপ কেন?যখন যুক্তি, বোধ পরাজিত, তখনই ব্যবহৃত হয় ব্যক্তিগত আক্রমণ, অযৌক্তিক অভিযোগ। রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যকে যদি সঙ্ঘবাদীদের মত প্রচারের কাজে কেউ ব্যবহার করে তবে তা অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

রবীন্দ্রনাথ চিরকাল হিন্দু ও মুসলিমকে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন, তিনি বিশ্ব মানবতার পূজারী ছিলেন, তিনি রামায়ণের রামকে দেখেছিলেন এক মানবিক চরিত্র হিসেবে কিন্তু বর্তমানে রামকে নিয়ে যারা বিভেদের রাজনীতি করতে চাইছেন তারা যদি রবীন্দ্রনাথকে সত্যিই উপলব্ধি করতেন তবে তারা রবীন্দ্রনাথের মহৎ চিন্তাকে অন্তত সংকীর্ণ বিদ্বেষ রাজনীতির  স্বপক্ষে দাঁড় করাতেন না। রামায়ণ মহাভারত ছিল  সম্প্রদায় নির্বিশেষে আপামর ভারতবাসীর। যেটা আমরা ছোটবেলায় এস ওয়াজেদ আলির লেখা 'ভারতবর্ষ', যেটা  আমাদের পাঠ্যপুস্তক পাঠ সংকলনের অন্তর্ভুক্ত ছিল, সেখানেও পড়েছি, 'সেই ট্রাডিশন সমান চলেছে'।

সেই চিরন্তন শান্তিকে যারা ঘৃণার বিষে বিষময় করে তুলতে চাইছে, সেই আগুনে ঘি না ঢালাই দেশ ও জাতির পক্ষে মঙ্গল।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours