সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

পৃথিবীর মধ্যে প্রতিনিয়ত যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে সেই সংক্রান্ত আমাদের জ্ঞানের গন্ডি কতদূর তা হয়তো আমরা জানিনা, তবে প্রতিদিনই নতুন করে জানছি আর শিখছি সমস্ত আশ্চর্যের ঘটনা। এমন প্রচুর ঘটনা আছে যা সকলের কাছেই অমীমাংসিত। পৃথিবীর ধর্মই হচ্ছে রহস্য সৃষ্টি করা। পৃথিবীর বুকে প্রতিনিয়ত যেসব অজানা ঘটনা ঘটে চলেছে তার হদিশ কখনো পায়, আবার কখনো না, কখনো তা সমাধান হয় কখনো থেকে যায় অসমাপ্ত। তবু সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার থেকে অনেক রহস্যময় বা অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হতে পারি। এরকম এক ঘটনা কথা তুলে ধরতে চলেছি আপনাদের সামনে।

একটু পিছনে ফিরে যাওয়া যাক। সালটা ২০০৯,  তখন একটি খবর প্রকাশ পায় যে একটি তেরো বছরের ছেলে এক সন্তানের বাবা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছিল ব্রিটেনের ইস্ট সাসেক্স শহরের একটি অঞ্চলে। ওখানে শহরবাসী ও যারা এই ঘটনাটি শুনেছিলেন সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। এই বয়সে ক্লাস এইট বা নাইনের ছাত্র, সদ্য বাল্য থেকে কিশোরে প্রবেশ করেছে, এই সময় খেলা পড়াশুনা বা টিভির পর্দায় কার্টুন দেখা কিংবা বাবা মায়ের সাথে চকলেট বা আইসক্রিম এর ঝোঁক ধরার বয়স। হয়তো নিদেনপক্ষে বড় জোড় বাই সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কথা অথবা নিজের মতো করে রঙ তুলির আঁচড়ে ছবি আঁকা। কিন্তু বাবা হওয়া সেটা যেন সত্যিই অবাক করার মতো। 

 ২০০৯ সালের পর প্রায় ১১ বছর কেটে গেছে। সম্প্রতি আবার এই পুরনো ঘটনাটি মিডিয়া পাড়ার চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অল্প বয়সী ছেলেটি কি করে বাবা হলো সেই গল্পই ঘুরে ফিরে আসছে।

রীতিমতো এক কন্যা সন্তানের বাবা এই ১৩ বছরের বাচ্চা ছেলেটি। এই ১৩ বছর বয়সের ছেলে তথা বাবার নাম এলফি। পাশ্চাত্য এক ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা প্রথম এই খবরটি প্রকাশ্যে আনেন। *Dad at 13* শিরোনামে এই খবরটি ছাপা হয়েছিল। আর বড় দিনের হট কেকের মতো মানুষের উৎসাহ ছিলো এই বিষয়ে।  অনেকের কাছে এটি অবিশ্বাস্য ঠেকলেও এটাই সত্য।

যে ছবিটি পুনরায় ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে সেখানে সে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে বসে রয়েছে। সূত্রে খবর এলফির বয়স যখন ১২ তখন সে ১৫ বছর বয়সী এক মেয়ের প্রেমে পড়ে। প্রেম পর্ব শুরুর এক বছর পরে এই কন্যা সন্তানের বাবা হয় তিনি। তখনো এবং এখনও এই ছবির জন্য তিনি সকলের চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছেন।

৪ফুট ৪ইঞ্চির স্কুলবয় তার পিতা বলে জানা গেছে তার ১৫ বছর বয়সী বান্ধবী চ্যান্টেল স্টেডম্যান মাইসির জন্ম দেওয়ার পরে।

সাথীরা তাকে পিঠে চড় মারছিল কিন্তু নেতিবাচক দিকটি ছিল আলফির মা নিকোলা যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে খারাপ অভিভাবক হিসাবে লম্পট হয়ে উঠল।

এখন, তিনি কীভাবে হঠাৎ করে তার পুত্রটি দেশের সংবাদপত্রগুলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা "মুখ" হয়ে উঠলেন সে সম্পর্কে সরাসরি রেকর্ড গড়তে চান।

ডিএনএ পরীক্ষার পরেও প্রমাণিত হয়েছিল যে অ্যালফি বাবা নন, পরিবারের পক্ষে সাধারণ জীবনের মতো কিছু ফিরে পেতে কিছুটা সময় নিয়েছিল। 

৪৫ বছরের নিকোলা তার বিখ্যাত ছেলের কথা বলেছিলেন, তিনি স্মরণ করেছিলেন “আমাদের জীবন উল্টে পাল্টে গিয়েছিল। বিশ্ব আশ্চর্য হয়েছিল যে কেন আমি জানতে পারি না যে আমার ছোট ছেলেটি যৌন মিলন করছিল এবং আরও খারাপ ছিল, সে কীভাবে একটি মেয়েকে গর্ভবতী করতে পারে?

আর ছেলে অ্যালফি বলেছেন: “এত অল্প বয়সে সেক্স করা আমার জীবনকে নষ্ট করে দেয়।'' 

"এটি আমার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভুল ছিল এবং এটি আমাকে সত্যিই প্রভাবিত করেছিল।

তখন যখন আমি ভেবেছিলাম বাচ্চাটি আমার, তখন আমার সেই সুখ ফিরে পেয়েছিলাম 

আমার বাচ্চা হওয়াতে  আমার জীবনে কী ঘটবে তা জানার সময় আমি যে ভয় পেয়েছিলাম।

“এই বাচ্চাগুলি বাচ্চা হওয়া নিয়ে উত্তেজিত হতে পারে তবে তারা কী বুঝতে পারে না

এটি আপনার জীবনকে পুরোপুরি পরিবর্তন করে দেয়। 

আলফি চ্যান্টেলের সাথে দেখা হয়েছিল ২০০৮ সালে প্রাচ্যের রাস্তায় খেলার সময়

লোয়ার ডিকারের ইস্ট সাসেক্স শহরাঞ্চল, যেখানে তারা দুজনেই থাকত।

তাঁর মা নিকোলা বলেছেন: “ওরা খুব কাছে ছিল। তবে আলফির মনে হয়নি

মেয়েদের প্রতি অনেক আগ্রহ তাই আমি তাদের একে অপরের বাড়িতে ঘুমোতে দিতে।

তবে যাই হোক আজ এটা ভাবতেই হবে, শরীরবৃত্তীয় রসায়ন আর প্রকৃতির দেওয়া অনুভূতির ফলে শৈশব বয়সের এই ভুল যে ভবিষ্যৎ জীবনে অনেক বড় ক্ষতি করে দেয় তা আমরা সর্বদা টের পাচ্ছি, তাই সাধু সাবধান, চোখে চোখে রাখুন, আর সতর্ক থাকুন যাতে সময়ের আগে শৈশব যেন যৌবনের পালতোলা নৌকা বাইতে না পারে। আসুন সুস্থ্য ও স্বাভাবিক সমাজ গঠনে একাত্ম হই।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours