দীপ্তি জামান, লেখিকা, বাংলাদেশ:

অর্ধ-আধুনিক বাঙালি মুসলিম সমাজে চলছে নানামুখী অবক্ষয়। অবক্ষয়ের মধ্যেও কিছু তরুণ-তরুণী, তাদের তারুণ্যের এবং যৌবনের দীপ্তি ছড়িয়ে দিতে নিবেদিত প্রাণ৷ তারা আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে শিল্পের বিভিন্ন শাখায়। সাহিত্য অঙ্গনেও রেখে চলেছে গঠনমূলক ভূমিকা৷ তারুণ্যের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি যেন এই চর্চা অব্যাহত থাকে, তার জন্য দরকার তারুণ্যের প্রতি অগ্রজদের পৃষ্ঠপোষকতা৷ যাতে করে সৃজনশীলতার মাধ্যমে ছড়িয়ে না পরে ধর্মান্ধত।

কারণ, বাঙালি মুসলিম সভ্যতা গড়ে উঠেছে প্রাচ্য সভ্যতার আদল- অনুভূতিতে৷ বাঙালি সভ্যতা যতটা না ছিল রাজনীতিমুখর তার চেয়ে বেশি ছিল অন্ধ চেতনায় ধর্মমুখাপেক্ষী৷ যে চেতনা অলৌকিক ঘোড়ার সাওয়ারি হয়ে উদ্দেশ্যহীন অচেনা পথে হাঁটে৷ আর অলৌকিক ঘোড়াটিই নির্ধারণ করে আসছে বাঙালির আর্থ- সামাজিক অবস্থান৷ স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই রাষ্ট্র এবং রাজনীতি থেকে অলৌকিক ঘোড়াটিকে বিচ্ছিন্ন করে, ব্যক্তিগত পর্যায় সীমিত করে রাখাই ছিল বুদ্ধিমত্তার কাজ৷ কিন্তু হয়েছে ঠিক তার বিপরীত৷ 

প্রতিপর্বের রাষ্ট্র নায়কেরা জাতির ধর্মান্ধ অনুভূতিকে জড়িয়ে রেখেই রাজনীতির বিস্তার ঘটিয়েছেন। জাতিকে অন্ধকারে রেখে সস্তা মূল্যের ধর্মানুভূতির আনুগত্য করেছেন। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে সহজ-সরল জাতির সস্তা মূল্যের সমার্থন তাদের পক্ষে রাখার চেষ্টা করেছেন৷ স্বাধীনতার মূল নীতি অস্বীকার করে শাসকবর্গ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করেছেন এবং সে চেষ্টায় চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেছেন৷ কিন্তু বাঙালি অর্থে জাতি হিসেবে আসলে বাঙালি কি পেল? অলৌকিক ঘোড়ার ছত্রছায়ায় বাঙালি হারিয়েছে তাদের পরিচয়। বাঙালি অভ্যস্ত হয়েছে প্রগতিহীন সবরকমের বদাভ্যাসে৷ বিশ্বের দরবারে পেয়ে আসছে তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদা৷ যে দেশটিতে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও গড়ে ওঠেনি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক কাঠামো৷ প্রতিষ্ঠা পাইনি গণতন্ত্রের হাত ধরে সমাজতন্ত্র৷ মননে প্রবেশ পথ পাইনি চিন্তার স্বাধীনতা৷ তাই ভাবি, মুক্তমনা সুনিপুণ ভাবনার পাশে দাঁড়াব৷ মুক্তমনা সুনিপুণ ভাবনায় আলোর প্রদীপ জ্বেলে দেব৷



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

1 comments so far,Add yours