প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান:
 
জীবন কাননে শ্রেষ্ঠ যে ফুল, তাই প্রেম...।  আর এই প্রেম যে ব্যক্তিবিশেষ হতে হবে, তার তো নয়। জীবনের আধারে প্রাথমিকে ধরেই ভিত্তি।  আর ভিত্তি ছুঁয়েই ভূমি। তাই আলোচনার প্রকোষ্ঠ সাজিয়ে দিলাম, বিষয়ে " স্কুলবেলা"।

আমাকে একটা মুক্তাঙ্গন স্কুল বেলা দাও - যৌনতা নয়, শিশুশ্রমিক নয় - আমি লিখতে চাই সেই প্রকৃতির বুকে খোলা, ভয়হীন, আর্তিহীন "স্কুলবেলা"। 

৫ "বছর থেকেই শুরু করি জীবনের কথা। না পাওয়া জীবনের দেওয়া নেওয়া" কথাটা ছিলো না সেদিন। কারণ মনের ঘরে ছিল সাদা পাতায় অভিজ্ঞতার ভাঁজ। স্কুল ব্যাগ, বইয়ের সাড়ি নিয়ে পিঠ ভরে শুধু মনে করা যে, এই বুঝি আমার নতুন বইয়ের পাতা ভর্তি গন্ধ কেউ চুরি করল, এ আমার সংশয়ের স্কুল বেলা। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন মনের কলমে যেন টিফিন আর পাশের খাতায় দেবাঞ্জন, অজন্তা, ডোনার ভালোবাসা। ম্যাডামের মুখে একবার তাকিয়ে প্রশ্ন করা "May I know ur name please, Madam!" এই নামের উৎসুকে সুধা মিসের লম্বা বেণির ফাঁকে ফুল গোঁজা। আবার, দুঃখ পেলে মন খুলে মায়ের কথা মনে পড়া।
হাক্সলে বলেছিলেন, মনের চেতনা নাকি তৃতীয় পর্যায়। কিন্তু আমি বলব এই স্কুল বেলা হলো চৈতন্যের বাইরে চেতনার, অনুভূতির স্তর। স্কুল বেলা মানে উন্মুক্ত বিহঙ্গের মতো আনন্দের মুহুর্তে এক গাল হেসে বলা "এই কাল তুই আসবি তো!",  এই প্রেম, ভালোবাসা অবুঝ মনের গুপ্ত কথা আর মননের উৎফুল্ল সুখী আলাপ।

আজ স্কুল বেলা বলতে বলেছে বলে আমি আরো এক শ্রেণির এই স্কুল বেলা চাই। চাই বাসন মাজা ছেড়ে উঠে আসুক বই। দুবেলা খেতে পাক মিড ডে মিলের খাবার। আমি চাই  ঐ দুচোখ গুলো যেন এমন করেই লিখতে পারে তাদের স্কুল বেলা। কেউ যেন মিষ্টির দোকানে মিষ্টির প্লেট না ধুয়ে মরে, কেউ যেন মাথার ইঁট নিয়ে দুদিন না খেয়ে মাথা ঘুরে পড়ে, একটা স্কুল বেলা দাও হে আমার সমাজ। শিশুগুলি যেন নরপিশাচের হাতে যৌন হেনস্থায় না মরে।  একটা পূর্ণ আলোকময় সমাজ দাও যেখানে সোশাল মিডিয়া লিখতে  পারে হ্যাঁ, এটাই আসল "স্কুলবেলা"। 

কলম প্রতিবাদী হয়, আশা নিরাশায় মুক্ত অঙ্গন জুড়েই গড়ে উঠুক স্কুলবেলা। বিষয়ের সাথে আধার জুড়েই স্বপ্ন বাস্তবতা পাক, আকাঙ্ক্ষায়।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours