ইরানী বিশ্বাস, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও পরিচালক, বাংলাদেশ:

দৈনন্দিন জীবনে বিনোদনের একটি বড় মাধ্যম নাটক। অতীতের কথা থেকে জানা যায় সমাজের প্রগতিশীল মানুষ সাহিত্য ও নাট্যচর্চা করতো। জানা যায়, গুপ্ত সাম্রাজ্য বঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হলে উত্তরভারতীয় আর্য সংস্কৃতি প্রাচীন বাংলা সংস্কৃতির সাথে মিশে যায়। সেসময় গ্রামীন সংস্কৃতির আদলে সংস্কৃত নাটকের চর্চা শুরু হয়। পাল শাসনামলে বিক্রমপুর বিহার নাট্যচর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। সেন শাসনামলে এ ধারা অব্যাহত থাকলেও মুসলমান শাসনামলে তা স্তিমিত হয়ে পড়ে। 
খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতাব্দীতে সংস্কৃত নাটক থেকে বাংলাদেশী মঞ্চনাটক উৎপত্তি লাভ করে। গুপ্ত বংশ কর্তৃক বঙ্গ বিজয়ের মধ্য দিয়ে প্রাচীন বাংলা সংস্কৃতিতে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটে এবং নাট্যচর্চার প্রসার ঘটে। পরবর্তীতে আদি বাংলা পল্লী সংস্কৃতির সাথে মিশে গিয়ে বাংলা মঞ্চনাটকে নিজস্ব ধারা সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশে মঞ্চনাটক সত্যিকার অর্থে বিকাশ লাভ করে স্বাধীনতাত্তোর সময়ে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন নতুন মঞ্চনাটক আন্দোলনের জন্ম দেয়। ‘এম এল সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম মঞ্চস্থ নাটক। এটি একটি প্রতীকধর্মী নাটক যার রচয়িতা ছিলেন শহীদুল আমীন। এটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল ১৯৭২ খ্রিস্টব্দের ১০ই সেপ্টেম্বর ঢাকা শহরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে। নাটকটি প্রযোজনা করেছিলেন মুহাম্মদ নুরুল কাদির এবং পরিচালক ছিলেন আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। নাটকের পাত্র-পাত্রীরা ছিলেন, খলিল, বুলবুল আহমেদ, মেহফুজ, ফিরোজ ইফতেখার, কৃষ্ণা কাবেরী, জাফর আহমদ, জিয়াউল হুদা উজ্জ্বল, হাবিবুর বাসার, আবুল হুসেন প্রমুখ। এছাড়া উল্লেখযোগ্য মঞ্চ নাটকের মধ্যে রয়েছে  পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় (১৯৭৬)  যুদ্ধ  এবং যুদ্ধ (১৯৮৬) - সৈয়দ শামসুল হক , একাত্তরের পালা (১৯৯৩) Ñ নাসির উদ্দিন ইউসুফ , বিবিসাব (১৯৯৪) - আব্দুল্লাহ আল মামুন, জয়জয়ন্তী (১৯৯৫) - মামুনুর রশীদ, বদল - মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।
বর্তমান সময়ে মঞ্চে তেমন উল্লেখ করার মতো মুক্তিযুদ্ধের নাটক চোখে পড়ে না। তবে নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল প্রযোজিত, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচিত এবং মঞ্চ সারথী আতাউর রহমান নির্দেশিত ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মঞ্চ নাটক খুব সাড়া ফেলেছিল। মান্নান হীরা রচিত, সুদীপ চক্রবর্তী নির্দেশিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একক নাটক ‘লাল জমিন’ দর্শক মনে ভিষন আলোড়ন ফেলতে সক্ষম হয়েছে। 
সময়ের বিবর্তনে মঞ্চ বিনোদন, যান্ত্রিক বিনোদনে পরিণত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান আমলে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের উদ্যোগে পাকিস্তানে টেলিভিশন আনা হয়। তিনি ২৬ নভেম্বর ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানের লাহোরে প্রথম টেলিভিশন সেন্টারের উদ্ধোধন করেন। দ্বিতীয় টেলিভিশন সেন্টারটি করা হয় বাংলাদেশে(তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ঢাকায় ডি.আই.টি (বর্তমান রাজউক) ভবনে। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশনের ঢাকা কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত অনুষ্ঠানে প্রথম গান গেয়েছিলেন ফেরদৌসী রহমান, প্রথম প্রযোজক ছিলেন মুস্তফা মনোয়ার, জামান আলী খান ও মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান বিভাগের প্রথম ব্যবস্থাপক ছিলেন কলিম শরাফী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম নাটক ছিল ‘একতলা দোতলা’ এটি ১৯৬৫ সালের ফেব্রæয়ারীতে প্রচারিত হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে টেলিভিশনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং এর রাষ্ট্রায়ত্তকরণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে ডিআইটি ভবন ছেড়ে রামপুরায় টেলিভিশনের নিজস্ব ভবন তৈরি করা হয়। এখন সেটি রামপুরা টেলিভিশন সেন্টার নামে পরিচিত। 
এম এল সোনার বাংলা নাটকটি ২৮ মার্চ তারিখে টেলিভিশনে প্রচারে জন্য লেখা হয়েছিল। তখনো বাংলাদেশ স্বাধীণ হয়নি। সময়টি ছিল বিক্ষোভে উত্তাল। ১৯৭১ সালে ১৬ মার্চ নাটকটি রচান করেছিলেন আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। ২৫ মার্চ বিকালে নাটকটির চুড়ান্ত মহড়া ডিআইটি ভবনের নীচ তলায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরদিন নাটকটির রেকর্ডিং হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। মহড়া শেষে সকলকে ২৬ মার্চ সকাল ১০ টায় টেলিভিশন স্টুডিওতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী গণহত্যা শুরু করে। নাটকটির রচয়িতা ও প্রযোজক আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম তাঁর নিকট রক্ষিত নাটকের পান্ডুলিপি ২৭ মার্চ ডিআইটি টেলিভিশন ভবনের নথি-পত্রের স্তুপের মধ্যে লুকিয়ে রেখে এসেছিলেন, পরে আর সেটি কখনোই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে টেলিভিশন ও মঞ্চ অভিনেতা সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ রসুলের নিকট এক কপি পান্ডুলিপি ছিল যা তিনি নষ্ট না করে সযতনে সংরক্ষন রেছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ স্বাধীণ হওয়ার পর এই পান্ডুলিপির ভিত্তিতেই নাটকটি মঞ্চস্থ করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।
১৯৭১ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস ‘সংশপ্তক’ থেকে ধারাবাহিক নাটক সংশপ্তক নির্মান শুরু হয়েছিল। কিন্তু চার পর্ব প্রচারের পর সেই বছর মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় এর নির্মাণ ও প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৮৮ সালে আবার এর নির্মান কাজ শুরু হয়। কিন্তু একই বছর ভয়াবহ বন্যা হওয়ার কারনে আবার বন্ধ হয়ে যায়। বন্যা শেষে আবার নাটকের নির্মান কাজ শুরু হয়। উপন্যাস থেকে নাট্যরূপ দেন কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। প্রথম কয়েক পর্বের পরিচালক ছিলেন যৌথভাবে আবদুল্লাহ আল মামুন এবং আল মনসুর। শেষের দিকের পর্বগুলো নির্মান করেন মোহাম্মদ আবু তাহের। আবহ সংগীত পরিচালনা করেন আনিসুর রহমান তনু। 
বিষয়ভিত্তিক নাটকের প্রচলন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে অন্য সব বিষয়ের চেয়ে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে এ দেশের স্বাধীনতা বা বিজয় অর্জন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৯ মাসের এই যুদ্ধকে তাই বিভিন্ন গল্পের ভেতর দিয়ে উপস্থাপন করাটা নৈতিক দায়িত্ব। আর সেই দায়বোধ থেকেই টেলিভিশনেও উপস্থাপিত হয়ে আসছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। বরাবরই আমাদের টিভি নাটকে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কাহিনী উঠে এসেছে আবেগঘনভাবে। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘বাংলা আমার বাংলা’। নাটকটি লিখেছিলেন ড, ইনামুল হক, প্রযোজনা করেছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। 
মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘বাংলা আমার বাংলা’ নাটকটি লেখা ও নির্মান প্রসঙ্গে ড. ইনামুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলে বিটিভির প্রযোজক আবদুল্লাহ আল মামুন একদিন আমাকে বলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাটক লিখতে। পরর্তীতে ১০ জানুয়ারী নাটকটি লাইভ প্রচারিত হবে। সে অনুযায়ী শিল্পী-কলাকুশলী মহড়া শেষ করে প্রস্তুত। তবে দিনটা ছিল ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারী। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশপ্রত্যাবর্তনের সময় মাঝে মাঝে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিউজ প্রচারিত হচ্ছে। তখন নাটকটি লাইভ থেকে বিরতি নেয়া হয়। আবার নিউজ শেষে নাটক শুরু হয়। সময়টা সত্যি ঐতিহাসিক ছিল। এই নাটকটি পরবর্তীতে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়, এবং বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হয়। শুধু তা-ই নয়। এই নাটকটিসহ পরবর্তীতে আমার আরো ৪টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক নিয়ে একটা বই প্রকাশিত হয়েছিল। 
এক সময়ে মুক্তিযুদ্ধ সমৃদ্ধ মঞ্চনাটক আধিক্য হলেও বর্তমানে সেখানে ভাটা পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। এ বিষয়ে নাট্যজন ড. ইনামুল হক বলেন, বিষয়টি সত্যি গুরুত্বপূর্ন। হয়তো ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অপপ্রচার করেছে। হয়তো পরবর্তী প্রজন্ম এ জন্যই ধীরে ধীরে মুক্তিযুদ্ধে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। আজ অনেক নাটক দল সৃষ্টি হয়েছে বা সমৃদ্ধশালী অনেক দলও নতুন কোন মুক্তিযুদ্ধের নাটক মঞ্চে আসেনি। এটা সত্যি খুব পীড়াদায়ক। ২০০৫ সালের পর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল ক্ষমতায় আসার পর টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক, প্রগ্রাম তৈরিতে উৎসাহিত হয়েছে। সাধারণ মানুষ এখন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে। আর হয়তো নতুন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আগ্রহ বাড়ছে। 
১৯৭২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে আমজাদ হোসেনের রচনা ও মুস্তাফিজুর রহমানের প্রযোজনায় প্রচারিত হয় আলোচিত মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘জনতার কাছে আমি’। মোর্শেদ চৌধুরির রচনা ও মোহাম্মদ বরকতউল্লাহর প্রযোজিত ‘এরা ছিল এধারে’ এ সময়ে উল্লেখিত আরো একটি নাটক। ১৯৭৩ সালে জেসমিন চৌধুরীর লেখা ‘প্রতিদ্ব›দ্বী’ নাটকটি প্রযোজনা করেন আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। শুধু তা-ই নয়, ১৯৭২ থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে টিভি নাটকে মুক্তিযুদ্ধ এসেছে বহুবার। একটা সময়ে এসে দেশের এবমাত্র টেলিভিশন বিটিভিতে মুক্তিযুদ্ধের নাটক স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে নির্মিত হতে শুরু করে। আশির দশকের কাছাকাছি সময়ে এসে আরো কিছু চেতনাসমৃদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের নাটক বিটিভিতে প্রচার হয়। এর মধ্যে জিয়া আনসারীর ‘কোনো এক কুলসুম’, আকিকুল হক চৌধুরীর ‘কম্পাস’ রাবেয়া খাতুনের ‘বাগানের নাম মালানীছড়া’ জোবেদ খানের ‘একটি ফুলের স্বপ্ন’ এবং রাজিয়া মজিদের ‘জ্যোৎ¯œার শূন্য মাঠ’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া হাবিবুল হাসানের রচনায় ও আবদুল্লাহ আল মামুনের প্রযোজনায় ‘আমার দ্যাশের লাগি’ নাটকটি সে সময়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। এ ছাড়া মমতাজউদ্দীন আহমেদের লেখা মোস্তফা কামাল সৈয়দের প্রযোজনায় ‘এই সেই কন্ঠস্বর’ নাটকটি দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে। আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’ ও ‘একটি যুদ্ধ অন্যটি মেয়ে’ আসাদুজ্জামান নূরের ‘ এ মোর অহংকার’ রাহাত খানের ‘সংঘর্ষ’ আল মনসুরের ‘শেকল বাঁধা নাও’ এবং ‘নয়ন সমুখে তুমি নাই’ আতিকুল হক চৌধুরীর ‘যদিও দুরের পথ’ এবং ‘স্বর্ণতোড়ন’ মামুনুর রশীদের ‘খোলা দুয়ার, রাবেয়া খাতুনের উপন্যাস অবলম্বনে রফিকুল হক রচিত ‘ফেরারী সূর্য’ উল্লেখযোগ্য।
২০০১ সালে বিটিভিতে প্রচারিত তারিক আনাম খানের ‘জরা’ নাটকটিও ভাল নাটক হিসাবে স্বীকৃতি পায়। সে সময়ে আবুল হায়াতের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টেলিফিল্ম ‘পিতা’ দর্শকের কাছে প্রশংসিত হয়। এটিএন বাংলায় সাইদুর রহমান জুয়েলের পরিচালনায় ‘কোন সীমানায় মুক্তি’ নামের একটি মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিক নাটক প্রচার করে। 
২০০৮ সালে আলোচিত হয় ফেরদৌস হাসানের নাটক ‘দাগ’।  ২০১০ সালে তাহের শিপনের ‘কক্ষপথের যুদ্ধ’ নাটকটি বেশ প্রশংসিত হয়। ২০১৪ সালে প্রচারিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নাটকগুলোর মধ্যে ‘গুডবাই কমান্ডার’, পেজ সিক্সটিন. ডায়রী-৭১ বিশেষভাবে সমাদৃত হয়। ২০১৫ ও ’১৬ সালে ‘সেলিব্রেটি ৭১’ ‘বীরমাতা’ ‘অবশিষ্ট বুলেট’ ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। 
বিগত বছরগুলোর মতো ২০১৭ সালেও নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টিভি নাটক। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে অনেক চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে অনেক নাটক। তার মধ্যে বিটিভিতে প্রচারিত রেজাউর রহমান ইজাজ রচিত এবং মাহফুজা আক্তার প্রযোজিত ‘জননী’ এবং চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ইরানী বিশ্বাসের রচনা ও পরিচালনায় ‘লাল শার্ট’ বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। ফরিদুর রেজা সাগরের গল্পে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘স্মৃতির বাড়ি’। এর নাট্যরূপ ও পরিচালনা করেছেন অরুন চৌধুরী।
পরিশেষে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধেও চেতনাকে ধারন ও লালন করতে টিভি নাটক ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাই টিভি নাটকে বেশি করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মেও কাছে মুক্তিযুদ্ধেও চেতনাকেও ফুটিয়ে তুলতে হবে। শুধু স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসকে ঘিরে মুক্তিযুদ্ধের নাটক নির্মিত না করে সারা বছরই নির্মিত হতে পারে। তাতে বর্তমান প্রজন্মের অন্তরে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours