ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
চিন্তামনি বিস্মিত! তার প্রেমে বিভোর যে বিষধর সাপকে দড়ি মনে করে সেটা ধরেই তার বাড়িতে ঢুকেছে। অবশ্য বিস্ময়ের আরো কিছু বাকী ছিল। অজয়ের তীরে গিয়ে দেখে গাছের গুড়ি ভেবে যেটা আঁকড়ে নদ পেরিয়েছে, সেটা একটা পচাগলা মৃতদেহ।
হতবাক চিন্তামনি বিল্বমঙ্গলকে বলে, " তুমি আমাকে খুব ভালোবাসো? "
ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানান বিল্বমঙ্গল। এরপর তীব্র ভাষায় বিল্বমঙ্গলকে অপমান করে চিন্তামনি, " তোমার লজ্জা করে না? আমার মতো স্বামী পরিত্যক্তা, সমাজে অছু্ৎ নগন্য নারীর প্রতি তোমার এতো ভালবাসা?
সারাদিন পিতৃশ্রাদ্ধ করে দুর্যোগ উপেক্ষা করে, পচাগলা মৃতদেহ আঁকড়ে উত্তাল অজয় পেরিয়ে বিষধর সাপকে দড়ি মনে করে সেটা ধরে বাড়ীতে এসেছো আমার সাথে দেখা করতে? ধিক তোমাকে। এর সামান্য ভালবাসা ভগবানকে দিতে তাহলে তাঁর কৃপায় ধন্য হতে। "চিন্তামনির কথায় সম্বিত ফিরল বিল্বমঙ্গলের। এরপর বিল্বমঙ্গলের জীবনে এলো বিরাট পরিবর্তন। আমূল বদলে গেল তাঁর জীবন। কৃষ্ণ প্রেমে পাগল হয়ে গেলেন।তাঁর কৃষ্ণ প্রেম বৈষ্ণব ধর্মে নতুন মাত্রা যোগ করল। তিনি গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের ভক্তিরসে সিঞ্চিত করে ভক্ত আর ভগবানের ভাবরূপকে মিলিয়েছন তিনি। এর পরে বিল্বমঙ্গললের জীবনে অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটে। কিন্তু বিল্বমঙ্গল কখনও কৃষ্ণ ভক্ত হতে পারতো না যদি তাঁর জীবনে চিন্তামনি না আসতো আর সে যদি অনুপ্রাণিত না করতো। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours