সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

তাহলে মহাশূন্যে ব্যবসা করা যায়, বেসরকারি হাতেও এবার ব্যবসায়িক ভাবনায়  এগিয়ে এসে পারি দিলো মহাকাশে স্পেসএক্স। তাহলে পর্যটক হিসাবে আপনারও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে স্পেস ষ্টেশনে। মহাশূন্যের বিষ্ময়কর অলৌকিক দৃশ্য হয়তো আপনার মোবাইল বা ক্যমেরা বন্দী হবে। আর এই বাণিজ্যিক ভাবনা নিয়ে এই প্রথম বেসরকারি রকেটে মহাকাশে গেলেন নাসার দুই বিজ্ঞানী। দুই নভোচারী ডগ হার্লি আর বব বেনকেন শুধু নতুন একটি ক্যাপসুল ব্যবস্থাই পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছেন না বরং তারা নাসার জন্য নতুন একটি ব্যবসায়িক মডেলের সূচনা করতে যাচ্ছেন। কি সেই মডেল? মনে করা হচ্ছে যে, স্পেসএক্স কোম্পানিটি বাজার প্রসারিত করবে। ইতিমধ্যে এরোস্পেস জায়ান্ট বোয়িং এ কাজটির জন্য নাসার সাথে চুক্তি করেছে এলন মাস্কের মালিকানাধীন বেসরকারি রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স। 
স্পেসএক্সের সফলতা  আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কর্মী পরিবহনে রাশিয়ার রকেট এবং ক্যাপসুলের উপর নাসার নির্ভরতা কমাবে। 
৩০শে মে, ২০২০ ছিল স্পেসএক্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। আমেরিকান বিমানবাহিনীর রহস্যময় রকেট মিশন। 
মহাকাশ স্টেশনে রাত কাটাতে পর্যটক পাঠাবে নাসা। ফলে ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হবে। আর নাসা বিশ্বাস করে যে এলন মাস্কের সাথে তাদের এই সম্পর্ক হাজার হাজার কোটি ডলার সঞ্চয় করবে যা আরো জটিল কর্মকাণ্ড যেমন চাঁদ ও মঙ্গল অভিযাত্রায় ব্যয় করা সম্ভব হবে। কোম্পানিটির সাথে নাসার ২.৬ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি রয়েছে।
মি. মাস্ক আবেগাপ্লুত যে, তাঁর যন্ত্র নভোচারীদেরকে কক্ষপথে নিয়ে যাচ্ছে। 
তার মতে ''এটা এমন একটা কাজ যা মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে, বিশেষ করে তাদের যাদের অনুসন্ধানী আত্মা রয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে এমন অনুসন্ধানী আত্মাদের সূতিকাগার।"
এই বিষয়টিতে উৎসাহিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি উৎক্ষেপণ দেখতে ফ্লোরিডায় গিয়েছিলেন।আমেরিকান নভোচারীদের আমেরিকার রকেটে করে পাঠানোর বিষয় চাক্ষুস করলেন। 
হার্লি এবং বেনকেন যে যানটিতে করে মহাকাশে গেলেন সেই ড্রাগনকে নিয়ে ঠিক স্থানীয় সময় ১২ টার দিকে সময়েই ভূ-পৃষ্ঠ ত্যাগ করে ফ্যালকন-৯ রকেট।
মহাকাশ স্টেশনের বিখ্যাত ৩৯-এ প্যাড থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে আটলান্টিকের দিকে উড়ে গেলো। আড়াই মিনিট পর মহাকাশ যানটির নিচের অংশ আলাদা হয়ে সাগরে থাকা একটি ড্রোন জাহাজে অবতরণ করে। আর এর মাত্র ছয় মিনিট পর আরোহীরা নিরাপদে কক্ষপথে প্রবেশ করে। এর মাঝে তারা ক্যাপসুলে থাকা কিছু যন্ত্রপাতি এবং প্রক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখবেন। যার মধ্যে কিছু ফ্লাইং ম্যানুয়ালও রয়েছে।
 যদিও ড্রাগন ক্যাপসুলটি পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় এবং এটি নিজে নিজেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাতে পথ খুঁজতে সক্ষম। 
বিশেষ ধরণের উরনের  নির্দেশনা একটি টাচস্ক্রিন প্যানেলের মাধ্যমে দিতে হবে।

কক্ষপথে তাদের প্রথম কাজটি হবে তাদের মহাকাশযানটির একটি নাম দেয়া- মঙ্গল যাত্রা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের অতীতের মহাকাশচারীদের ঐতিহ্য অনুযায়ী এই রীতি চলে আসছে। পৃথিবীতে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে এর নাম 'এনডেভার' বলে ঘোষণা করা হবে।

ডগ হার্লি বলেন, বেশ কিছু কারণেই তারা এনডেভার নামটি বাছাই করেছেন। প্রথমত ২০১১ সালের পর শাটল কর্মসূচী বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তারা দুজনেই তাদের প্রথম ফ্লাইটটি শাটল এনডেভারে করেছিলেন।
আঠারোশ শতকের শেষের দিকে ব্রিটিশ পরিব্রাজক জেমস কুক অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে তার যাত্রাটি এনডেভার নামে একটি জাহাজেই করেছিলেন।

যদিও তারা দুজনেই হার্লি এবং বেনকেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কতদিন থাকবেন সেটি এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে এক থেকে চার মাসের মতো তারা সেখানে থাকবেন। আশা করা হচ্ছে যে আটলান্টিকে তাদের ফিরে আসাটাও উড্ডয়নের মতোই ঝামেলাহীন হবে এবং সেটি নিশ্চিত করতে নাসা ও স্পেসএক্স একযোগে কাজ করবে।
এই নতুন বাণিজ্যিক ও অভিনব প্রয়াস দেখতে কেনেডি স্পেশ স্টেশনের আশেপাশে ভিড় করে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেই শনিবার উড়ে যায় স্পেসএক্স। কমপ্লেক্সের বাইরে মানুষদের জড়ো না হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সাথে উপস্থিত অতিথিদের সংখ্যাও ছিলো কম। আর ফ্লাইটের আগে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন নভোচারীরা। এছাড়াও তাদের কাছে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিল নাসা। সাথে যাদের সাথে তাদের সাক্ষাতের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল তাদেরকেও মাস্ক পরার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
এই বিশেষ ভাবনার মধ্যে মহাকাশ ভ্রমণের ভাবনাটা ভ্রমণ পিপাষুদের সকলের মনে যে আনন্দ সঞ্চারিত করছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যাক শুধু পরবর্তী লেখনীর জন্য অপেক্ষায় থাকুন নতুন কি খবর থাকবে? 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours