ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
সাধক কবি নীলকণ্ঠ মুখোপাধ্যায় বা৺কুড়া পুরুলিয়া বা মানভূমে যাত্রা করতে গেলে গঙ্গাজলঘা৺টি এসে মহেশবাবুর সাথে দেখা করে যেতেন তাঁর পরামর্শ নিতেন। নীলকন্ঠের সুদর্শন চেহারা, বাচনভঙ্গি ও সুমধুর কন্ঠ মহেষবাবুকে মুগ্ধ করেছিল।মহেষবাবুকে নীলকন্ঠ দাদা বলে সম্বোধন করতেন। অন্তরঙ্গতা বাড়ার পর তিনি জানতে পারেন, মহেশবাবু শুধু একজন বড় মাপের মানুষ বা বিখ্যাত উকিল নন। তাঁর নিজের একটা যাত্রার দল ছিল এবং তিনি একজন বিখ্যাত কবিয়াল। তাই নীলকন্ঠ মশাই বারবার ছুটে যেতেন মহেশবাবুর কাছে। কৃষ্ণযাত্রাকে আর ও কিভাবে সমৃদ্ধ করা যায় সে বিষয়ে ঘন্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করতেন পরামর্শ নিতেন।
কাশীপুর রাজবাড়িতে এক বিবাহ উপলক্ষে আয়োজিত কবিগানের আসর বসে। হুগলী ও বীরভূমের দুটি নামী কবিগানের দল অংশ নিতে কাশীপুর এর রাজবাড়িতে আসে। বীরভূমের দলটি গঙ্গাজলঘা৺টি এসে মহেশবাবুর শরণাপন্ন হয় কারণ সেই সময় হুগলির কবিগানের দলের খুব সুনাম ছিলো।সেই সময় কাশীপুর মহারাজের একটি বড় মামলা চলছিল। মহেশবাবু মহারাজের বিরুদ্ধ পক্ষের উকিল ছিলেন, মহারাজ কোলকাতা থেকে বড় ব্যারিস্টার আনেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি মহারাজ মামলায় পরাজিত হ'ন। সেই রাতেই কাশীপুর রাজবাড়িতে হুগলী দলের কাছে বীরভুম কবিগানের দলের পরাজয় হয়। কবিগানের দ্বিতীয় দিন মহেশবাবু গোপনে কাশীপুর রাজবাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়ে বীরভূমের দলকে নেপথ্যে পরিচলনা করেন। হুগলির দল পরাজিত হয়।
সেই কবিগানের আসরে মহারাজের পাশে ছিলেন সাধক কবি নীলকণ্ঠ। মহারাজ বীরভূমের দলের ভূয়সী প্রসংসা করে পুরস্কৃত করলেন। পরে জানলেন গতকাল যে মামলায় তিনি হেরেছেন। তার উকিল মহেশবাবু তাঁর বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে বীরভূমের দল পরিচালনা করেছেন। মহারাজ গুনীর কদর করতে জানতেন। তিনি নীলকন্ঠ কে সাথে নিয়ে মাঝ পথ থেকে মহেশবাবু কে রাজবাড়িতে এনে খাতির যত্ন করে তাঁর। হাতে বা ৺কুড়া জেলার জমিদারীর দ্বায়িত্ব অর্পন করেন। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours