ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
রাঢ় বঙ্গে ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব ঘটেছিল কি না সে বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও এই এলাকায় একটা সময় বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটেছিল এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। পানাগড় বাজার থেকে সাত কিঃমিঃ দক্ষিণে ডরতপুরে বৌদ্ধস্তূপ ও বৌদ্ধ মূর্তি আবিস্কৃত হওয়ার পর যুক্তি আরো জোরালো হয়।
বর্তমান দুর্গাপর জনপদের সি, এম, ই, আর, আই -এর পাশে বহু দিন আগে একটা ভাঙ্গা দেউলের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। সেটির গঠনশৈলী অনুধাবন করে বিশেষজ্ঞে নিশ্চিত হ'ন। এটি একটি বৌদ্ধ বিহার এর ধ্বংসস্তুপ ।ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি শিলালিপি পাওয়া যায়। সে লিপিতে পালী ভাষায় লেখা ছিল " বুদ্ধি শরণ গচ্ছামি, ধর্মং গচ্ছামি "।
বর্তমান প্রজন্মের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঐতিহাসিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে বলা যায় শুধু ভগবান বৌদ্ধ, মহাবীর জৈন এই লাল মাটির দেশে এসে ছিলেন। হিন্দু ধর্ম যখন জাত পাতের সংকীর্ণ ব্রাক্ষন্যবাদের বেড়াজালে বন্দী। সেই সময় আবির্ভূত হলেন বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য দেব।
বর্তমান দু নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে। খা৺টপুকুর গ্রামের পশ্চিমে মুচিপাড়া। এখান থেকে উত্তর দিক বরাবর রাস্তা চলে গেছে দুর্গপুর স্টেশন, বা৺কুড়া পুরুলিয়া ও মেদিনীপুর এর দিকে।
এই মুচিপাড়াতেই মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য দেব এসেছিলেন তাঁর মহান শিষ্য শ্রী চাঁদ রুইদাসের কাছে।
কথিত আছে, শ্রী চৈতন্য দেব গয়া যাওয়ার পথে হুগলির ফুলিয়া গ্রামে সপ্তাহ খানেক অবস্থান করে বর্ধমান হয়ে কাঁকসার আমলাজোড়া গ্রামে গৌড়ীয় মঠে কয়েক দিন বিশ্রাম নিয়ে আবার রওনা মুচিপাড়ায় তাঁর পরম ভক্ত শ্রীচাঁদ রুইদাসকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে বলেন "চন্ডালোহপি শ্রেষ্ঠ হরিভক্তি পরায়ণ শ্রী চাঁদ রুইদাস এই মুচিপাড়ায় মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য দেবের পা ধুইয়ে দিয়েছিলেন।
বর্তমানে মুচিপাড়ার নামকরন করা হয়েছে কুসুমতলা। কিন্তু অনেকের অজানা এই মুঢিপাড়ার সাথে মিশে আছে চৈতন্য মহাপ্রভু ও তাঁর প্রিয় শিষ্য শ্রী চাঁদ রুইদাসের স্মৃতি। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours