ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

দুর্গাপর  মহকুমার  দুর্গাপর -ফরিদপুর  ব্লকের  একটি  গ্রাম  ধবনী।  অতি সাধারণ  একটি  গ্রাম।গ্রাম বাংলার   অনান্য  গ্রামের থেকে  আলাদা  কোন  বৈশিষ্ট্য  নেই।     সম্ভবতঃ অতীতে বর্ষায় বনের  জল গ্রামের  মধ্য দিয়ে বয়ে  গিয়ে  গ্রামটি  ধোয়া  যেত  বা জঙ্গল অধ্যুষিত  এই জনপদে  ' ধবল' বা সাদা  বৃক্ষের  আধিক্য  থাকায়  গ্রামের নাম করন হয় ' ধোয়াবনী' অপভ্রংশ হয়ে 'ধবনী ' বা  ' ধবলী ' থেকে  ধবনী ।     কিন্তু  আজকের  প্রজন্মের কাছে  অজানা  , এই  গ্রামেই ১২৪৮ বঙ্গাব্দে ৬ ই মাঘ  জন্মে ছিলেন  এক  ক্ষনজন্মা  পুরুষ ' সাধক  কবি  নীলকণ্ঠ '।বাবা  বামাচরন মুখোপাধ্যায়  ছিলেন  কালী  সাধক। সংসারের প্রতি  কোন  আকর্ষন  ছিলনা। দিনের  বেশীর ভাগ সময়। শ্মশানে  বা  বাড়ীর  কালী  মন্দিরে  কাটাতেন। 
            নীলকণ্ঠ  জন্ম  থেকেই  প্রতিবন্ধী। একটি  পা  তুলনায়  ছোট  ছিল। তাই খুঁড়িয়ে  হাঁটতেন। কিন্তু কন্ঠ  ছিল  সুমধুর, সুরের  যাদু যাদু  ছিল। 
               পিতা  বামাচরন মুখোপাধ্যায়  সংসারের  প্রতি  উদাসীন  থাকায়  লেখাপড়ার  সুযোগ  নীলকন্ঠের  জীবনে  আসেনি। তাই তিনি  নিরক্ষর। সম্ভবতঃ  তিনিই  সারা  বিশ্বের  একমাত্র  নিরক্ষর পদাবলী' রচনাকারী। 
              নীলকন্ঠ  সুকন্ঠের  অধিকারী  হওয়ায় মাঠে  গরু  চরাতে গিয়ে  গাছের  ছায়ায় বসে  গান  করতেন। একদিন  এই  পথ  যাচ্ছিলেন  তৎকালীন  বাংলাদেশের  ( অবিভক্ত  বাংলা)  সবচেয়ে  নামী ' কৃষ্ণযাত্রা' দলের  অধিকরী গোবিন্দ  দাস  অধিকারী। তিনি  নীলকন্ঠের  গান  শুনে  মুগ্ধ।তাঁর বাবার  কাছে  অনুমতি  আদায় করে  সাথে  নিয়ে যান। তখন  কিশোর  নীলকন্ঠের  বয়স  মাত্র  তের  বছর। 
                   নীলকন্ঠ  কৃষ্ণ  যাত্রায়  বিন্দেদূতীর  চরিত্রে  অভিনয়  করতেন।তাঁর সুরেলা  কন্ঠে  গান  শুনে  দর্শক  শ্রোতারা  মোহিত  হয়ে  যেত।  একটা  সময়  নীলকন্ঠের  জন্যই  গোবিন্দ  অধিকারীর দলের  খ্যাতি  বাড়তে  থাকে। (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours