ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
দুর্গাপর থেকে উৎপন্ন দামোদরের শাখানদীগুলির সিঙ্গারন জামুরিয়া থানার ইকরা জংশন স্টেশনের প্রায় ৩ কিঃ মিঃ উত্তরে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণ পূর্ব অভিমুখে প্রবাহিত হয়েছে। ৩৫ কিঃমিঃ দীর্ঘ নদীটি তপসী, অন্ডাল, দীঘনালার মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয়ে ওয়ারিয়া স্টেশনের কাছে দামোদরে মিশেছে।
উখরা স্টেশনের দক্ষিণে ছোড়া গ্রামে তামলা নদীর উৎসস্হল।,নদীর দৈর্ঘ্য ২০ কিঃমিঃ। সিঙ্গারন নদীর সমান্তরাল ভাবে প্রবাহিত হয়ে দুর্গাপর ইস্পাত কারখানার মেইন গেটের কাছে ২ নং জাতীয় সড়ক অতিক্রম করে মিশ্র ইস্পাত কারখানার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বীরভানপুরের পশ্চিম। দিকে দামোদরে মিশেছে।
দামোদরের আর একটি শাখা নদী কুকুয়া । মনসামঙ্গল কাব্যে। চাঁদ সওদাগরের বাড়ী চম্পাই নগরী বর্তমানে কসবা নামে পরিচিত। কাঁকসা ব্লকের সিলামপুর গ্রামের একটি ধানের মাঠ কুকুয়া নদীর উৎস। নদীর দৈর্ঘ্য ২০ কিঃমিঃ। মুরারীপুর, টিকরী, কে৺দুয়া,নারায়নপুর অতিক্রম করে নবখন্ড গ্রামের কাছে দামোদরে মিশেছে।
কুনুর অজয়ের উপনদী। অজয়ের শাখানদী টুমুনী জামুরিয়া থানার হরিপুর কেন্দার নিকটে চিচুরিয়া গ্রামে উৎপন্ন নদীটি উৎসস্হলে একটি সরু নালার আকৃত্তির। টুমুনীর দৈর্ঘ্য ২১কিঃমিঃ। গ্রীষ্মকালে নদীটি শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় দুকূল ছাপিয়ে যায়। নদীটি ক্ষুদ্র হলেও তার একটি শাখা নদী আছে। সেটি ইটখোলার নালা নামে পরিচিত। টুমুনি ডিহিবেতা, নবগ্রাম পার হয়ে বিষ্ণুপুর ও শ্যামরূপা গড়ের কাছে অজয়ে মিশেছে। ময়ূর ভট্টের ধর্মমঙ্গল কাব্যে টুমুনীর উল্লেখ আছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র নদীর নাম 'রক্তনালা '।দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ কিঃমিঃ। এটিকে নদী না বলে নালা বলা সঙ্গত। এই নদীটি শ্যমরূপা গড় থেকে ২ কিঃমিঃ পুর্বে গৌরাঙ্গপুরে উৎপন্ন হয়ে সাতকাহনিয়া গ্রামের কাছে অজয় নদের সাথে মিলেছে ।
গড় জঙ্গলের কাঁকর ও ল্যটেরাইট মাটির উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বর্ষায় নালার জলের রং রক্তবর্ন হওয়ায় সম্ভবতঃ নালার নাম রক্তনালা। তবে একটি কিংবদন্তী আছে। ধর্মমঙ্গল কাব্যের বীর দুই নায়ক ইছাই ঘোষ ও লাউসেনের যুদ্ধ হয়েছিল এই নদীর তীরে। যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের রক্ত এই নালা বেয়ে গড়িয়ে অজয়ে পড়ে তাই নদীর নাম ' রক্ত নালা '। (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours