আসাদ মল্লিক, ফিচার রাইটার, চুঁচুড়া, হুগলি:

মিল্ক অ্যান্ড হানি

দ্য জার্মান সোসাইটি ফর নেচার ফটোগ্রাফি (জিডিটি)-এর আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার কথা এখন বিশ্বের প্রায় সকল প্রকৃতিপ্রেমীরই জানা। লকডাউনের মাঝে ঘর আঁকড়ে বসে থাকা মানুষকে প্রকৃতির একঝলক দেখার সুযোগ দিয়েছে ৭টি বিভাগে জমা পড়া প্রায় ৫০০০ ছবি। তার মধ্যে থেকে সেরার সেরা নির্বাচিত হয় পিটার লিন্ডেলের আলোকচিত্র 'এ হেয়ার'স ড্রিম'। বিশেষ বিভাগ(ওয়াটার)-এ দ্বিতীয় স্থানাধিকারী হয়েছে সান্দ্রা বারতোচার 'মিল্ক অ্যান্ড হানি' আলোকচিত্রটি।

আলোকচিত্রটি ইংল্যান্ডের কেন্ট নামক স্থানের 'চক কোস্ট'-গৃহীত। চক কোস্টের বিশালকায় চক পাহাড়ের জলে ফুটে ওঠা প্রতিবিম্ব এবং অস্তগামী সূর্য কিরণের মেলবন্ধনে এমন অতি সুন্দর দৃশ্য তৈরি হয়েছে। সমুদ্রের জল গোধূলির সোনালী রঙে মিশে তৈরি করেছে এমন এক রঙ, যা এই আলোকচিত্রের 'মিল্ক অ্যান্ড হানি' - নামক সার্থক করেছে।
সান্দ্রা বারতোচার চমকপ্রদ কারিগরি দক্ষতা এবং লেন্সের অ্যাঙ্গেলের কারণে ছবিতে এত সুন্দরভাবে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর শোভা প্রস্ফুটিত হয়েছে। ছবিতে হলদে সোনালী জলের মধ্যে নীল রঙ দেখা যাওয়াতে বোঝা যায় যে, এটি সমুদ্রের জল। না হলে একঝলক ছবিটি দেখে মধুমিশ্রিত দুগ্ধ বলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

ছবিটিকে অন্যান্য সমুদ্রের ছবির থেকে আরও আলাদা করে ঢেউয়ের উপস্থিতি। এমনতর সোনালী রঙ ও গড়ে ওঠা ঢেউয়ের মেলবন্ধনে ছবিটি সমুদ্রপ্রেমীদের কাছে আকর্ষক হয়ে উঠেছে! যদিও খাদ্যরসিকদের এই ছবি বাটিভরা পাস্তার রূপ মনে করিয়ে দিয়েছে। অনেকে আবার সোনালী ঢেউকে রূপকথার রাপুঞ্জেলের চুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। নেটিজেনদের কাছে এই ছবি অবাস্তব ও ভিনগ্রহের মনে হয়েছে, অনেকেই বলেছেন এত সুন্দর ছবি তোলা অসম্ভব, এটি নিশ্চয়ই অঙ্কিত!

আলোকচিত্রের সোনালী ঢেউ দেখে ফিলিপ পুলম্যানের বইয়ের 'ডাস্ট' বা 'রুসাকভ পার্টিকল'-কে মনে করিয়ে দেয়। রহস্য জড়িয়ে থাকে 'মিল্ক অ্যান্ড হানি' ছবিটি জুড়ে। ছবির প্রত্যেক ঢেউয়ে রঙের প্রাচুর্যে ছবিটি এক অন্য মাত্রা পায়। ফলত দর্শকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে ওঠে ছবিটি, এক নিমেষে মানবমনকে সমুদ্রের তীরে নিয়ে যেতে সক্ষম হয় সান্দ্রা বারতোচার 'মিল্ক অ্যান্ড হানি' আলোকচিত্রটি। (ক্রমশঃ) 

(ছবি সৌজন্যেঃ ইন্টারনেট) 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours