ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
মা শ্যামরূপার মন্দিরের সন্নিকটে গড়কেল্লা মৌজায় রয়েছে প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। একটি অশ্বত্থ গাছের নীচে মন্দিরে বর্তমানে শ্বেত পাথরের অষ্টভূজা দেবী চন্ডীর বিগ্রহ আছে।
এই স্হানে একটি আশ্রম, কয়েকটি দেব দেবীর মূর্তি ও মন্দির একটি অতিথিশালা নির্মিত হয়েছে। ব্রম্ক্ষানন্দ গিরি নামে একজন নাঙ্গা সন্ন্যাসী এই আশ্রম পরিচালনা করেন।
তিনি দাবী করেন, ভগবত পুরানে উল্লেখ আছে এই পবিত্র স্থানে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য মা মহামায়ার কাহিনী শ্রবণ করে বাসন্তী পুজার প্রচলন করেন। এই দাবীর সপক্ষে যুক্তি দেন, ভগবত পুরানে উল্লেখ করা হয়েছে, ' সুরথ রাজার রাজধানী সুপুর থেকে ছয় ক্রোশ অর্থাৎ আঠারো মাইল
দক্ষিণে শালবৃক্ষের মাঝে নদী তীরে মহর্ষি মেধামুণির আশ্রম । রাজ্য হারা সুরথ ও স্ত্রী সন্তান দ্বারা প্রতারিত। সমাধি বৈশ্য দিশাহীনভাবে ঘুরতে ঘুরতে মেধামুণির নিকট উপস্থিত হন।
কিন্তু মার্কন্ডেয় পুরানে এই দাবীর সপক্ষে কোন যুক্তি ব্যখ্যা নেই। সেখানে বলা হয়েছে সুরথ কাশ্মীরের রাজা ছিলেন। আবার কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে তিনি ছিলেন সসাগরা পৃথিবীর অধীশ্বর। তবে ব্রহ্মানন্দ গিরি ওরফে যোগীবাবার দাবী স্হানেই ছিল মহর্ষি মেধামুণির আশ্রম এবং এখানেই রাজা সুরথ বঙ্গে প্রথম দুর্গা পূজার প্রচলন করেন। তিনি নিজের সপক্ষে যুক্তি দেন, এই স্হানটি শাল বৃক্ষের বনভুমি, পাশেই বয়ে চলেছে অজয় ( অতীতে যার নাম ছিল কৃষ্ণা)।এখান থেকে সুপরের দুরত্ব ছয় ক্রোশ। স্হানীয় কুলচী গ্রন্হ প্রনেতা, কিংবদন্তী ও মঙ্গলকাব্য থেকে জানা যায় ।রাজা সুরথ রাজধানীতে ফিরে ধুম ধাম করে মা দুর্গার পুজা করেন এবং এক লক্ষ পশু বলি দেন। তাই সুপুরের নিকটস্হ জনপদের নাম হয় বোলপুর।
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours