প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান:

অভিমানের বিস্ময় শৈথিল্য নেই, থাকতে নেই আছে শুধু নিজেকে দেবার। কুন্তী বলেছিলেন পাণ্ডুর তো সময় হয়নি নিজেকে দেবার, দায়িত্ব তাই একার কুন্তীর নয়। অপ্রাপ্তিজনিত বেদনায় অভিমানের অভাব নেই ; তাই বার বার মুক্তি চেয়েছেন কুন্তী। কিন্তু পাণ্ডু বিরূপ হয়ে বলেছিলেন, কুন্তী তাঁর জীবনের ভালোবাসার ফুল। অক্ষয় অব্যয় তিনি;

সৌরভ শেষে,  পুতুল ছাড়া আর কি আশা করা যায়!  মানুষের সম্মান গেলে মর্যাদা গেলে,  জলভরা কষ্ট বড়োই অপ্রস্তুতবোধ। কিন্তু পাণ্ডু তো তাঁর অনিশ্চিত আশ্রয়৷ এবার দোষারোপের আদলে পিতৃব্য আমন্ত্রণ। কুন্তী আর আত্মগ্লানিতে ক্ষয়ে যেতে চান না ; দূর্বলতার রন্ধ্রপথে শনির প্রবেশ রেখেই মর্যাদা হানির প্রতীকী পাণ্ডু। ব্যক্তিত্বের জোর  থাকলে যে আত্মসম্মান আদায় করে নেওয়ার, তারই নাম মনুষ্যত্ব। আত্মসম্মানেই তো মানুষের মুক্তি৷
কুন্তীর জীবন নদীর মতো এক খাদ থেকে আরো এক খাদে বয়ে গেছে অনন্ত উৎসবে৷ বারে বারে ইতিহাসের খতে নিজেকেই এঁকেছেন তিনি৷ পুরুষ তো নিজের উদ্যোগেই কাজ করে, কিন্তু নারী সাহায্যের হাত বাড়ায়৷ স্বার্থের তাপে অন্তর শুকিয়ে যেতে দেখেছেন কুন্তী।

বোধের অন্তরে নিজেকে খুঁজতে গিয়ে অনেক সময়েই  হাঁপিয়ে উঠেছেন কুন্তী৷ নিদারুণ কলহে তাঁর তীব্র মনোকষ্ট পায়৷ তৃপ্তিরাও নিষ্প্রভ হয়ে ওঠে৷ শুধুই কি বটগাছের কাছে প্রত্যাশার ঝুলি!  নাকি প্রতি কর্তব্যও কিছু আছে ; সুতরাং বিকৃত করে কেউ যদি ব্যক্তিগত জীবনের আস্বাদ নষ্ট করে তবে তার সর্বনাশ হয়।

বিদুরের অকৃপণ ভালোবাসার কাছে পাণ্ডুর দুনয়নে কেবল বিব্রতের আশঙ্কা। অপদার্থের পরিণতি ছুঁয়েই কি নির্বাসনের দন্দ্ব৷ অন্তঃপুরের চৌহাদ্দী পেরিয়ে এবার অদ্ভুত আন্দার্থ ; অভিমানের চাপা সুর এসে বলে, নিঃসম্বল, অসহায় মানুষের বন্ধু কিই বা হতে চায়! নিরাপত্তারা  সুরক্ষার বীজ বুনতে একেশ্বরী কল্পনা করে৷ একেশ্বরী কথাটা বললেই সত্যবতী মনে পড়ে যায়। তবে তিনি মুক্ত নন।  আসলে যে পিতৃব্য সত্যবতীর দক্ষিণহস্ত তিনি তো কুন্তীকে বোঝেন নি৷ তাই জীবনটাও অন্যরকম হয়ে যায়৷ (ক্রমশঃ)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours