আসাদ মল্লিক, ফিচার রাইটার, চুঁচুড়া, হুগলি:

এ হেয়ার'স ড্রিম

পিটার লিন্ডেলের আলোকচিত্র 'এ হেয়ার'স ড্রিম'(একটি খরগোশের স্বপ্ন) শুধুই যে স্তন্যপায়ী বিভাগে প্রথম স্থানাধিকারী, তা নয়। এই ছবি সমস্ত বিভাগ মিলিয়ে সেরার সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। ছবিটি যেভাবে একটি ইউরোপিয়ান খরগোশের স্বপ্নিল চোখের ভাষা ব্যক্ত করে, তা সত্যই প্রশংশনীয়।

লিন্ডেলের এই 'ক্যান্ডিড শট'-এ দেখা যায় ঘাসজমির মধ্যে দিয়ে উঁকি দিচ্ছে একটি খরগোশ। চোখে তার কৌতূহল। অচেনা মানুষের হাতে অচেনা যন্ত্র দেখে  যেন খরগোশটি জিজ্ঞাসা করছে, "এখানে কি দরকার?" সকালের সূর্যকিরণে ঘাসজমির হলুদ রঙ আর খরগোশের হলদে-বাদামি রঙ মিশে যেতে চাইলেও পিটারের কারিকুরিতে খরগোশটি প্রকৃতিকে ছাপিয়ে হয়ে উঠেছে জীবন্ত, প্রাণময়।

আলোকচিত্রের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে পিটার লিন্ডেনের গলায় ঝড়ে পড়েছে তাঁর আলোকচিত্রের প্রতি অগাধ প্রেম। দ্য জার্মান সোসাইটি ফর নেচার ফটোগ্রাফি (জিডিটি)-এর এক সংবাদ বিবৃতিতে পিটার জানান, "এই মহাদেশের একসময়ের অন্যতম সুলভ প্রাণী ছিল ইউরোপিয়ান খরগোশ। জার্মানীতেও বহুল সংখ্যায় দেখা যেত, কিন্তু এখন ওরা বিলুপ্তির পথে।"
খরগোশের ছবি তোলা যে কি দুঃসাধ্য তা বলতে গিয়ে স্মৃতিচারণ করেন পিটার লিন্ডেন। তিনি জানান, "উত্তর-ডর্টমুন্ডের দিকে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সময় প্রতি সকালে আমার সাথে ইউরোপিয়ান খরগোশদের দেখা হত। ১২ বছর আগে এদের সাথে দেখা হওয়ার পরই একরকম আমার ক্যামেরা ধরা। কিন্তু বর্তমানে এদের দেখা হওয়া দুষ্কর, আর এদের পছন্দসই ছবি তোলা তো একেবারেই দুঃসাধ্য।"

আলোকচিত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, পিটার লিন্ডেলের এই ছবি নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য। চিত্রের ঠিক মাঝখানে খরগোশটি থাকায় চিত্রের বিষয় কোনটি সেটা বুঝতে সমস্যা হয় না। চিত্রে রঙের কন্ট্রাস্ট ও বোকেহ-এর ব্যবহার ছবিটিকে অপূর্ব করে তুলেছে। একদিকে যেমন ছবির সৌন্দর্যে মোহিত হন পশুপ্রেমীরা, তেমনই লিন্ডেলের বক্তব্য ক্রমবর্ধমান দূষণের ফলে জীব বিলুপ্তির ঘটনার দিকে ইশারা করে। সঠিক পদক্ষেপ না নিলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপিয়ান খরগোশের এই ছবি সত্যিই স্বপ্নিল হয়ে মিলিয়ে যাবে।

(ছবি সৌজন্যে: ইন্টারনেট।)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours