শ্বেতা ঘোষ, ফিচার রাইটার, নৈহাটি, উ: ২৪ পরগনা:

শ্বেতা ঘোষ: স্রেফ গুজব। আর তাতেই হুলুস্থুলু পড়ে গেল অভিভাবকবৃন্দ সমুহের। মারো গোলি লকডাউন। ভিড়ে ভিড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ। কোনও মতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার এই ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের একটি স্কুলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে হঠাৎ করেই দুর্গাপুরের গুরু তেগ বাহাদুর পাবলিক স্কুলের সামনে একাংশ অভিভাবকদের জটলা শুর হয়। ক্ষাণিক সময় গড়াতেই জটলা ক্রমেই বিশাল জমায়েতের রূপ নেয়। জনা কয়েক অভিভাবকের বক্তব্য, তাঁরা জানতে পেরেছেন যে এদিন পড়ুয়াদের জন্য প্রয়োজনীয় বই স্কুল থেকে বিলি করা হবে। তাই তাঁরা এখানে এসেছেন।
কিন্ত কিভাবে এই বই বিলি বন্টনের কথা জানতে পারেন তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে তাঁরা কিছু জানাতে পারেননি। শুধু তাঁরা বলেন, এ ওর মুখ থেকে তাঁরা শুনেছেন যে স্কুলের তরফে নাকি এসএমএস করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে অভিভাবকদের ভিড়ের ঠেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি ঢিলেঢালা হয়ে যায়।
পরিস্থিতি যে ক্রমশই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এই খবর পেয়ে স্কুলের প্রিন্সিপাল বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশও লকডাউনের মূহুর্তে এহেন অপ্রত্যাশিত ঘটনার কথা জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। স্কুল চত্বরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অভিভাবকদের পুলিশ অনুরোধ করেন আপনারা যে যাঁর বাড়ি ফিরে যান। আগামী দিনে বই সংগ্রহ করার বিষয়ে কি আশু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নির্দিষ্ট ভাবে তাঁদের তা জানানো হবে। পুলিশের এই আশ্বস্তের কথা শুনে অভিভাবকেরাও ফিরে যান।
এদিকে অভিভাবকদের মধ্যে বই বিলি সংক্রান্ত খবর কিভাবে রটালো তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রিন্সিপাল সুতপা আচার্য বলেন, 'আমরা এরকম কোনও বিজ্ঞপ্তি বা এসএমএস কোথাও প্রচার করিনি স্কুলের তরফে। এটা স্রেফ গুজব। কে রটিয়েছেন তাও জানি না।' তবে পড়ুয়াদের বই যাতে স্কুল থেকে নির্দিষ্ট দিনে বিলি করা যায় লকডাউনের নিয়ম মেনে এই মর্মে ওই স্কুলের তরফে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন সাফ জানিয়ে দেয়, স্কুল থেকে বই সংগ্রহের অনুমতি কাউকেই আপাতত দেওয়া হবে না। বরং স্কুল চাইলে ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে বই দিয়ে আসতে পারে। এদিকে স্কুলের প্রিন্সিপাল জানান, তাঁদের ৩৩০০পড়ুয়া। এদের মধ্যে অনেকেই দুর্গাপুর ও আসানসোল মহকুমার প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। কেউ তো পার্শ্ববর্তী বাঁকুড়া জেলা থেকে যাতায়াত করে। কার্যত অসম্ভব সবার বাড়িতে বই পৌঁছানোর বিষয়টি বাস্তবায়িত করা। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কি করা যায় তা ভাবনা চিন্তার স্তরে রয়েছে।
স্কুলের বই বিলি নিয়ে যখন কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এযাবৎ নেওয়া হয়নি ও এই সংক্রান্ত কোনও বিজ্ঞপ্তি দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন লকডাউন চলাকালীন এইরকম গুজব কে বা কারা প্রচার করলো তা ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশ ও স্কুলের প্রিন্সিপালকে। স্থানীয় পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, রটনার বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours