সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন অন্য দেশে যান, তখন প্রথমেই তাঁদের সুরক্ষার বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই যে কোনও বিমানে বিদেশ সফরে যেতে পারেন না। তাঁদের জন্য প্রস্তুত রাখতে হয় বিশেষ ধরনের বিমান। আর তার সুরক্ষা ব্যবস্থাও আর দশটা সাধারণ বিমান এর থেকে আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক।
সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এয়ারফোর্স ওয়ান-এ ভারত সফরে এসেছিলেন। তাঁর সেই বিমানের সুরক্ষা ব্যবস্থা যে কোনো সৈন্য ঘাঁটির মতো সুরক্ষিত। কোনও দুর্গের থেকে কম নয়।
তেমন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য রয়েছে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা।
এখনও পর্যন্ত বোয়িং ৭৪৭ বিমানে বিদেশ সফরে যান  ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানরা। এই বিমানে ভারতের প্রথম তিন রাষ্ট্র নায়ক তালিকায় ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী।
প্রসংগত এই তিন জনই বিদেশ সফরে যাওয়ার জন্য এই উন্নত প্রযুক্তির বিমান বোয়িং ৭৪৭ ব্যবহার করতেন।
এবার সেই জয়গায় খুব শীঘ্র বোয়িং ৭৪৭-এর জায়গা নিতে আসছে বোয়িং ৭৭৭।
মহামারীর প্রকোপে কোনো সমস্যা না হলে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার এই বিমান আগামী জুলাই মাসেই ফ্লোরিডার হেডকোয়ার্টার থেকে ভারতের মাটি স্পর্শ করবে।
ইতিমধ্যেই জানা গেছে একটি নয় দু-দুটো বোয়িং ৭৭৭ বিমান কিনছে ভারত। যার জন্য খরচ হচ্ছে ৮ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। এই মহার্ঘ্য বিমানে কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে  একটু জেনে নিই!
এই এয়ারক্র্যাফ্ট-এ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম রয়েছে। যার ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমানের মতোই সুরক্ষিত থাকবে এই বিমান।
এবার প্রথম কোনও ভারতীয় বিমানে সেল্ফ প্রোটেকশন স্যুট থাকছে। এর কাজ শত্রুপক্ষের যে কোনো র‍্যাডারকে অনায়াসে জ্যাম করে দেবে এবং টার্গেট করা হিট সিকিং মিসাইলকে দূরে সরিয়ে রাখবে।
বিমানের লার্জ এয়ারক্র্যাফ্ট ইনফ্রারেড কাউন্টারমেজার সিস্টেম (LAICS) রয়েছে।
বড় বড় এয়ারক্র্যাফ্টগুলোকে মিসাইল থেকে রক্ষা করে এই বিশেষ প্রযুক্তি।
এই বিমান সাধারণত কোনো বিশেষজ্ঞ পাইলট চালাবেন না,  চালানোর জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগে যে বিমান ব্যবহার করতেন ভারতীয় রাষ্ট্রপ্রধানরা তার জন্য বায়ুসেনার পাইলট থাকতেন না।
সাধারণত ক্যারিয়ার বিমানের থেকে আকারে এই বিমান তুলনামূলক চওড়া হবে। সুরক্ষিত ও আধুনিক সেল্ফ ডিফেন্স সিস্টেম ছাড়াও এতে রয়েছে একটি কনফারেন্স রুম। আপত্কালীন পরিস্থিতির জন্য রয়েছে অসুস্থ্য পেসেন্ট ট্রান্সপোর্ট ইউনিট। এ ছাড়া রয়েছে অন বোর্ড ওয়াইফাই সিস্টেম। আধুনিক মানের ইণ্টিরিযার ডেকোরেশন, বিনোদন ও আধুনিক শয়নকক্ষ। এগুলো ছাড়াও দু’হাজারেরও বেশি জনের জন্য খাবার সংগ্রহ করে রাখতে সক্ষম এই বিমান।
বোয়িং ৭৭৭ এর ইঞ্জিন দুটি পৃথিবীর সমস্ত বিমানের ইঞ্জিনের চেয়ে বড়। এর প্রত্যেক ল্যান্ডিং গিয়ারে ছয়টি করে চাকা, গোলাকৃতি ফিউসেলাজ এবং কোনাকৃতির পেছনের লেজ রয়েছে। এই বিমানটির নকশা করার সময় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ আটটি বিমান পরিচালনা সংস্থার সাথে আলোচনা করা হয়েছিল।
অবশেষে ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য এই বিমান কতটা নিরাপদ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আজ হয়তো সময়ের সাথে এগিয়ে যাবার পথে অগ্রসর হচ্ছি। সাথে সময়ের দাবী ভারত নিজেকেও নিজের টেকনোলজি নিজেদের প্রযূক্তিকে আগমী দিনে উন্নতি করতে হবে যাতে নতুন ইনভেনশন সারা পৃথিবীর কাছে নজির গড়বে। তবেই সার্থক হবে ''ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে''।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours