ফারজানা কবীর, লেখিকা, বাংলাদেশ:
ঈদ কথাটির অর্থ উৎসব। মুসলমানদের জীবনে সবচেয়ে বড় উৎসব হলো দুটি ঈদ।
ঈদুল ফিতর এর মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা বা রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের প্রথম চাঁদ দেখার পর ঈদুল ফিতর পালন করে গোটা মুসলিম জাতি।ঈদুল ফিতর একটি সার্বজনীন উৎসব। তাই এই দিনে সামর্থবানদের ওপর ফেতরা দান করা ওয়াজিব। যাতে করে গরীব ও নিম্ন আয়ের লোকজন ঈদটি আনন্দের সংগে পালন করতে পারে। রোজার পর এই দিনটি পালিত হয় বলে একে রোজার ঈদও বলা হয়।ত্রিশ দিন রোজার রেখে যে সংযমের পরিচয় দেয়া হয় তার পুরস্কার স্বরূপ ঈদুল ফিতর আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত এক মহা আনন্দের দিন। এদিনটিতে বিশেষ নামাজ আদায় করা হয়। ধনী -গরীব নির্বিশেষে সবাই জামাতে এই নামাজ আদায় করে। নতুন কাপড় পরিধান করে ও সুগন্ধী মেখে দলে দলে লোকজন মসজিদে যায়। নামাজের শেষে সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। বাড়ীতে বাড়ীতে মুখরোচক খাবার তৈরী ও পরিবেশনের ধুম পড়ে যায়।মাংস- পোলাও, বিরিয়ানির সংগে থাকে নানা ধরনের মিষ্টান্ন।এই দিনে উপহার আদান প্রদান করা হয়। আত্মীয় বন্ধুদের সংগে মোলাকাতের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে মানুষ। ছোটরা বড়দের নিকট হতে সালামী বা ঈদি পায় যা তাদের মনে আনন্দের উদ্রেক ঘটায়। সবার সংগে আনন্দ ভাগ করে নেয়াই ঈদুল ফিতরের মূল
তাৎপর্য।ঈদ মানুষের মাঝে প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করার জন্য পরম মিলনের বানী নিয়ে আসে। তাই তো কবি লিখেছেন,
"ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে,
এল খুশীর ঈদ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে,
শোন আসমানী তাগিদ।।"
ত্যাগ, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার মহান আদর্শ অনুধাবনের মাধ্যমেই ঈদ পালনের স্বার্থকতা প্রমানিত হয়। আর এর প্রমান দিতে এ বছরের ঈদ একটি বিশেষ ভুমিকা রেখেছে। মহামারী করোনার প্রকোপে বিশ্বব্যাপী চলছে লকডাউন। এতে খেটে খাওয়া দিন আনি দিন খাই মানুষের জীবনে চরম অভাব দেখা দিয়েছে। সংগে আরেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘুর্নিঝড় আমপানে যেন অথৈ সাগরে পড়েছে অসহায় মানুষজন। অসহায় এবং অবহেলিত মানুষের জন্য আমাদের ঈদের খুশীর অনেকটা খরচ ব্যয় করা হোক এবারের ঈদের মূলমন্ত্র।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours