দীপ্তেন্দু চক্রবর্তী, প্রবাসী লেখক, টরোন্টো, কানাডা:

আমেরিকা কানাডাতে এখন কাজের জন্য খুব সমস্যা। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। আবার বহু মানুষ কাজ নিচ্ছেন না কারণ বেকার ভাতা কাজের মাইনের থেকেও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বহু মানুষ টরোন্টোর রাস্তায় পার্কে শুয়ে থাকে প্লাস্টিকের তাবু খাটিয়ে। এরা ঘরে যাবে না। কানাডাতে প্রতিটি মানুষ মাসে ভাতা পায়; থাকা খাওয়ার জন্য। চাকরি করুন বা নাই করুন। এইসব রাস্তায় থাকা লোকেরা হাতে টাকা পেয়েই মাসের প্রথম সপ্তাহে ড্রিংক করে শেষ করে দেয়। ঘর ভাড়া না দিলে আপনাকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।ভাড়াটে কোথায় যাবে তা জানার সমস্যা বাড়িওয়ালার না। বিনা ভাড়ায় থাকবো সে বদমাইশি দেশের মতো এখানে হয় না। কিউবাতে যখন ব্যাতিস্তাকে তাড়িয়ে ফিদেল ক্ষমতা দখল করে তখন এক আশ্চার্য্য ব্যাপার ফিদেল করেছিল। এতদিন কিউবা ছিল আমেরিকার বন্ধু; বিশাল বাড়ি, ব্যবসা, গাড়ি সব আমেরিকানদের।ফিদেল এসে সব বাড়ি দখল করে নিলো। একটা প্রাসাদে মনে করুন পাঁচতলায় মিলে দশটা ঘর, ফিদেল সব রাস্তায় থাকা গরিবদের ঢুকিয়ে দিলো। সবাই ভাগ করে থাকো। দেখা গেলো বাড়ির বড়লোক মালিক তার বাড়ি শেয়ার করে আছেন অন্যদের সাথে। দেখেছি কিউবার শোচনীয় অবস্থা। হাড় জির জিরে মানুষ রাস্তায় কিছু বিক্রি করার চেষ্টা করছে। ব্যবসা করতে পারবেন না কারণ আপনি তাহলে ক্যাপিটালিস্ট হয়ে যাবেন। 
এখন কিউবানরা বাড়ি কিনতে পারছে। যাইহোক, করোনার জন্য এখন মানুষদের ফ্লাট দেওয়া হচ্ছে আর রাস্তার মানুষেরা প্রাণের ভয়ে ঘরে ঢুকছে।এইসব গরিব মানুষদের খুব সমস্যা। মনে করুন মাসে আপনি বারোশো ডলার ভাতা পান আর সবার মতো। বাড়ি ভাড়া করে টরোন্টো শহরে থাকা অসম্ভব। সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবেই।আবার সব ফ্ল্যাটের ফ্রিজ, লাইট, ওভেন সব থাকতে বাধ্য। এইসব গরিব মানুষেরা ফুড ব্যাংকে যান। নানা ধরনের খাবার নিয়ে আসেন, বা রান্না খাবার আনেন। আমরা ভারতীয়রা খুব ভালো আছি।আমাদের পেনশন ৬৫টির পর থেকে। পনেরোশো ডলার মতো এক একজনের। প্লাস কোম্পানির পেনশন তো আছেই। তাছাড়া আমাদের সবারই নিজেদের বাড়ি আছে যারা তিরিশ বছর আগে এসেছেন তাদের কোনো চিন্তা নেই। সেই বাড়ির দাম এখন এক মিলিয়ন ডলার। তবে ডালের তো বাড়ির ভিতে? ক্যাশ কোথায়? তবে লাইন অফ ক্রেডিট পাওয়া যায়। কম সুদে। পঞ্চাশ লাখ নিয়ে ঘুরে বেড়ান সারা বিশ্ব। আমি খেয়ে আর বেড়িয়ে সব শেষ করে দিয়েছি প্রায়। ছেলেরা এক নয়া দেবে না। থাকতেও দেবে না বাড়িতে। এদেশে এটাই নিয়ম। একজন ফোন করেছিলেন যে এখানে উনি আসতে চান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে আর পরে সেটাকে পার্মানেন্ট ভিসা করে নেবেন। এইসব মূর্খদের বহুবার বলেছি যে টুরিস্ট ভিসাতে কোনো কাজ পাওয়া যায় না এবং দেশ থেকে পুলিশ দিয়ে তাড়িয়ে দেবে ভিসা শেষ হলে। কত মানুষ আসে এইভাবে।তারপর বহু কষ্টে পরে দেশে ফিরে যায়। ভালো থাকবেন। (ক্রমশঃ)

(ছবি সৌজন্যেঃ প্রতিবেদক। ছবিতে প্রতিবেদক বসে রয়েছেন সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে।)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours