দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

শ্রীনিকেতনের পল্লী সংগঠন বিভাগের কাজ চলছে  বিশ্বভারতী বন্ধ থাকলেও, শ্রীনিকেতনের পল্লী সংগঠনের কাজ পুরোপুরি থেমে নেই। 

গ্রামের সমিতিগুলোকে নিয়ে একটা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। তার মাধ্যমে সরকারি তথ্য আদান প্রদান হচ্ছে।  কোন গ্রাম ভালো উদ্যোগ নিলে ঐ গ্রুপে আমাদের জানাচ্ছেন। সমিতির  সমস্ত সম্পাদকদের কাছে আবেদন করা হয়েছে, গ্রামের উপর নজর রাখতে। করোনা সচেতনতা প্রচার চালাতে। বাইরের মানুষ গ্রামে ঢুকলে প্রশাসনকে জানানো হয়। স্যানিটাইজার পাওয়া না গেলে ক্ষার যুক্ত সাবান, মাস্ক ইত্যাদি যেন গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয়। তারজন্য যা খরচপাতি হবে, তা  বিভাগীয় দপ্তর বহন করবে, বলে সূত্রের খবর।

জানা গেছে,  দশটা গ্রাম নিয়ে একটা ক্লাস্টার আছে। সেই ক্লাস্টারের প্রধানকে বলা হয় কনভেনার বা আহ্বায়ক।  ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গ্রামের পরিস্থিতি জানা হচ্ছে। পল্লী সংগঠনের অধীন কোন গ্রাম থেকে কোন রকম অসুস্থতার কথা শোনা যায় নি। আমরা সরকারের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ চালানো হচ্ছে। বোলপুর – শ্রীনিকেতন পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মিহির রায় এই  সচেতনতা উদ্যোগের পাশে আছেন।  আপদকালীন অবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের গ্রাম মুখ থুবড়ে যাতে না পড়ে, সেব্যাপারে তিনিও নজর রাখছেন, একজন জন প্রতিনিধি হিসেবে।  সমিতির সম্পাদকরা, পল্লী সংগঠনের প্রধান আধিকারিক, আহ্বায়কের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকেও তথ্য সরবরাহ করছেন।   দুঃস্থ ভিক্ষুকদের খাদ্য সরবরাহ থেকে বাঁচার তাগিদে সুরক্ষা প্রচারে গ্রাম সমিতির সম্পাদকরা কাজ করে যাচ্ছেন। এই মুহুর্তে কাজের জন্য অর্থ নিয়ে তাঁদের উদ্বিগ্নতা দূর করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে।  এই মুহূর্তে ৫৪ টি গ্রামের মধ্যে ৫৪ টি সমিতি আছে। ১০৬টি  গ্রাম চিহ্নিত হলেও এখনও সব সমিতির সাথে মউ চুক্তি স্বাক্ষর হয় নি। সবটায় পদ্ধতির মধ্যে আছে।  বেশিরভাগ গ্রামে একটা সমিতি আছে। যেমন পারুল ডাঙা, লালদহতে একটা সমিতি। কিন্তু বোলপুরের কাছে সুপুর, রায়পুরের মত গ্রামে একটি আদি ক্লাবকে নিয়ে সমিতি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গেছে, আগে বন্যা হলে বিশ্বভারতী তার ঐতিহ্য মোতাবেক কাজ করে গেছে। ১৯৭৮ সালে বন্যার সময় কোপাই নদীর ধারের গ্রামগুলির প্রায় হাজার খানেক মানুষকে নাট্যঘরে রাখা হয়েছিল। সেখানে খিচুড়ি, তরকারি এই সব খাওয়ানো হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা সেই খাবার সরবরাহ করেছেন। 

উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়ে তিনটি গ্রামের দায়িত্ব নেওয়া হয়। শ্রীনিকেতনে পল্লী সংগঠনের ডিরেক্টরের পদ ২০১৮ সাল থেকে ফাঁকা আছে। পল্লী সংগঠন বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন, বিশ্বভারতী বন্ধ আছে। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। গ্রামগুলিতে সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে। বর্তমানে ৫৪ টি গ্রাম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আসার সময় মোট ১০৬টি গ্রামকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সাধারণতঃ পল্লী সংগঠনের উদ্যোগে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে গ্রামবাসীদের মাছের ও ফলের চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে করোনা মহামারী উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের পল্লী সংগঠনে বিভাগের গৃহিত গ্রামগুলিতে আপদকালীন মানবিক সহায়তার কাজ থেমে নেই।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: