শেখ ফরিদ, প্রগতিশীল লেখক, বাংলাদেশ:
যখন স্কুলে প্রথম ইতিহাসের বই হাতে পাই। তখন একটি বাক্য শুনেছিলাম। '"আওরঙ্গ কহিল মুরাদ তুই সোজা হয়ে দাঁড়া!" এভাবে শাহজাহানের চার পুত্রদের নাম মনে রাখতাম। দারাশিকো "সম্রাট " শাহজাহানের প্রথম পুত্র।
দারার জন্ম হয় ২০ মার্চ ১৬১৫ খৃষ্টাব্দে আজমেরে। ১৬৫৯ এ মৃত্যু। দেহ সমাধী করা হয় দিল্লীতে আর খন্ডিত মস্তক সমাধী করা হয়,আগ্রায়। দারাশিকো'র নাম ছিলো, "পাদশাজাদা ই বুজুর্গ মারতাবা, জালাল উল কবির, সুলতান মুহাম্মদ দারা শিকোহ্, শাহ ই বুলন্দ ইকবাল।"
দারাশিকো সাধারণত দরবারেই বেশি সময় কাটাতেন। তিনি কবি, দার্শনিক ও ধর্মবেত্তাদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একদিকে শাহজাহানের বড় পুত্র সেই সাথে দানবীর এবং জনপ্রিয় ছিলেন। এই জনপ্রিয়তা এক সময় তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। দারাশিকো যখন কলম চালাচ্ছিলেন, তখন তার ভাই আওরঙ্গজেব তরবারি চালনায় নিজেকে সুদক্ষ করে তুলেছিলেন। যুদ্ধবিদ্যায় দারাশিকো খুব কাঁচা ছিলেন আওরঙ্গজেব তুলনায়। যদিও দারাশিকো বছরের পর বছর সুবেদার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
১৬৫৭ সাল, শাহজহান খুব অসুস্থ ছিলেন। যখন দারাশিকোরকে মসনদের দায়িত্ব তুলে দেবেন। তার আগেই দারার সাথে আরঙ্গজেবের যুদ্ধ শুরু হয়। আওরঙ্গ তার পিতা শাহজাহানকে গৃহবন্দী করেন। এবং বড় বোন ; বড় ভাই দারার পক্ষাবলম্বন করায় তাকেও পিতার সাথে নজরবন্দী করে ফেলেন। দারাশিকো আওরঙ্গজেবের সাথে যুদ্ধে হেরে পালিয়ে যান। কারো কাছে অর্থ ও সৈন্য সাহায্য পেয়ে যুদ্ধে জেতার জন্য দু একবার বৃথা চেষ্টা করেন। আবার হেরে বিভিন্ন জায়গায় ফেরারির মত ঘুরে বেড়াতে থাকেন। কিন্তু আশ্রয়দাতা মালিক জিওয়ান, আওরঙ্গজেবের সেনাদের হাতে দারাশিকোকে তুলে দেয় দারার এক পু্ত্র সহ।
তারপর প্রহসনের বিচার করে দারাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। প্রথমে মাথা আলাদা করে ফেলা হয়। মস্তক ব্যাতিত দেহ হুমায়ুনের কবরের পাশে সমাধিস্থ করা হয় দিল্লীতে। আবার সেই মস্তক সম্রাট শাহাজহানের নিকট প্রেরণ করা হয়। খাবার টেবিলে একটি পত্র ও উপহারের বাক্স দেখে বন্দী সম্রাট শাহজাহান খুশি হন। পুত্র আওরঙ্গজেবের জন্য দোয়া করেন। কিন্তু বাক্স খুলে বড় পুত্র দারার খন্ডিত মস্তক দেখে চমকে উঠেন৷ এখানেই শেষ নয়৷ দারার মস্তকের সমাধি দেয়া হয় তাজমহলের সামনে। যাতে তার বাবা শাহজাহান তাজমহলের দিকে তাকালেই বড় পু্ত্রের কথা মনে করেন! কি ভয়াবহ নির্মম ইতিহাস যে, সম্রাট স্ত্রীর স্মৃতির জন্য তাজমহল বানালেন৷ সেই স্মৃতি চিহ্নের সামনে বড় পুত্রের মস্তকের সমাধি! তাও আবার খুনিটা তার আরেক পুত্র। আর পুত্রদের মা, মমতাজ।
দারাশিকোকে মৃত্যু দন্ড দেয়ার আগে, দিল্লীর পথে পথে একটি ছোট মাদী হাতীতে চড়িয়ে ঘুরানো হয়েছে৷ হাতিতে হাওদা ছিলো না। এবং দারার হাত খোলা থাকলেও, পা বাধা ছিলো। এবং আরেকটি হাতীতে দারার পুত্রকেও বন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছিলো। দিল্লীতে দারার অনেক জনপ্রিয়তা ছিলো। তাই তার ভক্তদের সামনে এভাবেই অপদস্ত করা হয়েছিলো দারাকে। আর পিতার সামনে দারার মস্তক উপহার দেয়ার কারন ছিলো, পিতা,শাহজাহানকে বুঝানো হয়েছিলো। আওরঙ্গজেব তার বিরোধীদের ভয়ানক সাজা দেয়। আওরঙ্গজেব তার আরো দুই সহদোর ভাই সুজা ও মুরাদকেও হত্যা করে৷
আমরা ছোটবলায় কবিতা পড়তাম "বাদশা আলমগীর।" সেই কবিতায় মহানায়কের চরিত্র ছিলো এই আওরঙ্গজেব নামের বাদশা আলমগীর! এমনকি এক শ্রেনীর মানুষ তাকে " জিন্দাপীর" বলে থাকেন! কিন্তু ইতিহাস বলে, মসনদ দখলের জন্য তিনি, এই " জিন্দাপীর ও কবিতার মহা নায়ক " তিন ভাইকে হত্যা করেছিলেন। বাবাকে করেছিলেন বন্দী। এবং বোনকে পিতার সাথে বন্দী জীবন যাপনে বাধ্য করেছে।
যখন স্কুলে প্রথম ইতিহাসের বই হাতে পাই। তখন একটি বাক্য শুনেছিলাম। '"আওরঙ্গ কহিল মুরাদ তুই সোজা হয়ে দাঁড়া!" এভাবে শাহজাহানের চার পুত্রদের নাম মনে রাখতাম। দারাশিকো "সম্রাট " শাহজাহানের প্রথম পুত্র।
দারার জন্ম হয় ২০ মার্চ ১৬১৫ খৃষ্টাব্দে আজমেরে। ১৬৫৯ এ মৃত্যু। দেহ সমাধী করা হয় দিল্লীতে আর খন্ডিত মস্তক সমাধী করা হয়,আগ্রায়। দারাশিকো'র নাম ছিলো, "পাদশাজাদা ই বুজুর্গ মারতাবা, জালাল উল কবির, সুলতান মুহাম্মদ দারা শিকোহ্, শাহ ই বুলন্দ ইকবাল।"
দারাশিকো সাধারণত দরবারেই বেশি সময় কাটাতেন। তিনি কবি, দার্শনিক ও ধর্মবেত্তাদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একদিকে শাহজাহানের বড় পুত্র সেই সাথে দানবীর এবং জনপ্রিয় ছিলেন। এই জনপ্রিয়তা এক সময় তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। দারাশিকো যখন কলম চালাচ্ছিলেন, তখন তার ভাই আওরঙ্গজেব তরবারি চালনায় নিজেকে সুদক্ষ করে তুলেছিলেন। যুদ্ধবিদ্যায় দারাশিকো খুব কাঁচা ছিলেন আওরঙ্গজেব তুলনায়। যদিও দারাশিকো বছরের পর বছর সুবেদার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
১৬৫৭ সাল, শাহজহান খুব অসুস্থ ছিলেন। যখন দারাশিকোরকে মসনদের দায়িত্ব তুলে দেবেন। তার আগেই দারার সাথে আরঙ্গজেবের যুদ্ধ শুরু হয়। আওরঙ্গ তার পিতা শাহজাহানকে গৃহবন্দী করেন। এবং বড় বোন ; বড় ভাই দারার পক্ষাবলম্বন করায় তাকেও পিতার সাথে নজরবন্দী করে ফেলেন। দারাশিকো আওরঙ্গজেবের সাথে যুদ্ধে হেরে পালিয়ে যান। কারো কাছে অর্থ ও সৈন্য সাহায্য পেয়ে যুদ্ধে জেতার জন্য দু একবার বৃথা চেষ্টা করেন। আবার হেরে বিভিন্ন জায়গায় ফেরারির মত ঘুরে বেড়াতে থাকেন। কিন্তু আশ্রয়দাতা মালিক জিওয়ান, আওরঙ্গজেবের সেনাদের হাতে দারাশিকোকে তুলে দেয় দারার এক পু্ত্র সহ।
তারপর প্রহসনের বিচার করে দারাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। প্রথমে মাথা আলাদা করে ফেলা হয়। মস্তক ব্যাতিত দেহ হুমায়ুনের কবরের পাশে সমাধিস্থ করা হয় দিল্লীতে। আবার সেই মস্তক সম্রাট শাহাজহানের নিকট প্রেরণ করা হয়। খাবার টেবিলে একটি পত্র ও উপহারের বাক্স দেখে বন্দী সম্রাট শাহজাহান খুশি হন। পুত্র আওরঙ্গজেবের জন্য দোয়া করেন। কিন্তু বাক্স খুলে বড় পুত্র দারার খন্ডিত মস্তক দেখে চমকে উঠেন৷ এখানেই শেষ নয়৷ দারার মস্তকের সমাধি দেয়া হয় তাজমহলের সামনে। যাতে তার বাবা শাহজাহান তাজমহলের দিকে তাকালেই বড় পু্ত্রের কথা মনে করেন! কি ভয়াবহ নির্মম ইতিহাস যে, সম্রাট স্ত্রীর স্মৃতির জন্য তাজমহল বানালেন৷ সেই স্মৃতি চিহ্নের সামনে বড় পুত্রের মস্তকের সমাধি! তাও আবার খুনিটা তার আরেক পুত্র। আর পুত্রদের মা, মমতাজ।
দারাশিকোকে মৃত্যু দন্ড দেয়ার আগে, দিল্লীর পথে পথে একটি ছোট মাদী হাতীতে চড়িয়ে ঘুরানো হয়েছে৷ হাতিতে হাওদা ছিলো না। এবং দারার হাত খোলা থাকলেও, পা বাধা ছিলো। এবং আরেকটি হাতীতে দারার পুত্রকেও বন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছিলো। দিল্লীতে দারার অনেক জনপ্রিয়তা ছিলো। তাই তার ভক্তদের সামনে এভাবেই অপদস্ত করা হয়েছিলো দারাকে। আর পিতার সামনে দারার মস্তক উপহার দেয়ার কারন ছিলো, পিতা,শাহজাহানকে বুঝানো হয়েছিলো। আওরঙ্গজেব তার বিরোধীদের ভয়ানক সাজা দেয়। আওরঙ্গজেব তার আরো দুই সহদোর ভাই সুজা ও মুরাদকেও হত্যা করে৷
আমরা ছোটবলায় কবিতা পড়তাম "বাদশা আলমগীর।" সেই কবিতায় মহানায়কের চরিত্র ছিলো এই আওরঙ্গজেব নামের বাদশা আলমগীর! এমনকি এক শ্রেনীর মানুষ তাকে " জিন্দাপীর" বলে থাকেন! কিন্তু ইতিহাস বলে, মসনদ দখলের জন্য তিনি, এই " জিন্দাপীর ও কবিতার মহা নায়ক " তিন ভাইকে হত্যা করেছিলেন। বাবাকে করেছিলেন বন্দী। এবং বোনকে পিতার সাথে বন্দী জীবন যাপনে বাধ্য করেছে।
Post A Comment: