ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

বর্তমান  দুর্গাপুর  মহকুমার ' জঙ্গলমহল ' নামে  খ্যাত  কাঁকসা  ব্লকের  উত্তর  প্রান্তে  অজয় - কুনুর  অববাহিকায়  অবস্হিত  প্রাচীন  গ্রাম  অযোধ্যা-বলকাটি !তিনটি  গ্রাম  অযোধ্যা, শ্যামবাজার  ও বনকাটি  গ্রামের  সমষ্ঠি! আপাতদৃষ্টিতে  মনে  হয়  একটিই  গ্রাম!
           গোপরাজাদের  বীর যোদ্ধারা এখানে  বসবাস  করতেন ! তাই অজেয় -যোদ্ধা  থেকে  সম্ভবতঃ গ্রামের  নামকরন  হয় ' অ-যোদ্ধা ' থেকে  অপভ্রংশ  হয়ে  'অযোধ্যা '! এই  গ্রামের  সাথেই  আর  একটি  গ্রাম ' শ্যামবাজার ' গ্রাম্যদেবতা  শ্যমসুন্দরের  নামে  গ্রামের  নামকরন  হয়েছে! গ্রামের  পশ্চিম  প্রান্তে অজয় নদের দক্ষিনতীরে  বনকাটি  গ্রাম! বনভূমি  কেটে  এক সময়  জনবসতি  গড়ে ওঠায়  গ্রামটির  নাম  হয় 'বনকাটি '! একত্রে  তিনটি  গ্রাম  অযোধ্য - বনকাটি  নামে  পরিচিত!
             গ্রামগুলি  ব্রাক্ষ্মন প্রধান  হলেও  হিন্দু সম্প্রদায়ের  প্রায়  সব জাতির  বাস  ছাড়াও  প্রায়  চল্লিশটি  মুসলিম পরিবার  এখানে  বাস  করে!
             গ্রামে  শক্তিপুজার  আধিক্য থাকলেও গ্রামগুলিতে বেশ  কিছু  প্রাচীন  শিব মন্দির  ও  হরিমন্দির  আছে!শ্যামবাজারে  গ্রাম্যদেবতা  শ্যমসুন্দরের  অধিষ্ঠান! অযোধ্যা  গ্রামে  পাঁচটি  পারিবারিক  দুর্গাপুজা  হয়! গ্রামের  সবচেয়ে  প্রাচীন  দুর্গাপুজা  বাড়ুজ্জ্যে বাড়ীর  দেবী  এখানে  ঘটে - পটে  পূজিতা  হ'ন! কথিত  আছে এক সময়  বাড়ুজ্জ্যে  বাড়ীর পুজোয়  দুর্গা প্রতিমা  পুজো  হতো! পরে ছুতোর  মিস্ত্রি  প্রতিমা  গড়ার  পরই  অজ্ঞাত কারনে  মারা  যান! এরপর  অন্য  আর  একজন  ছুতোর  মিস্ত্রি  প্রতিমা  নির্মান  করতে  গিয়ে  মারা  গেলে  আর প্রতিমা  নির্মান  করা  যায়নি  ! তাই  পটেই  পুজো  হয়! এই  দেবী মা  গ্রামে ' বড়  মা ' নামে  পরিচিতা!অযোধ্যা  গ্রামের  আর  পারিবারিক  দুর্গাপুজোগুলি  হ'ল ' ঘটক বাড়ীর  পাষান  দুর্গা ( কিংবদন্তী  পরের  পর্ব  দ্রষ্টব্য), চাটুজ্জ্যে মুখুজ্জ্যে, চক্রবর্তী ও তাঁতি বাড়ীর  পুজো! বনকাটি  গ্রামে  রায়,মুখার্জী, চ্যাটার্জী  এবং  স্বর্নকার, কর্মকার  ও সদগোপদের দুর্গাপুজো  ছাড়াও  বেশকিছু  ঘটপুজো হয়! প্রতিটি বাড়ীতেই  থাকে  পংতি ভোজের  ব্যাবস্হা শ্যামবাজারে অগ্রাহায়ন মাসে  অন্নপুর্না পুজোকে  কেন্দ্র  করে  গ্রামের  আনন্দ-উৎসবের লহর  বয়ে  যায়! গ্রামে  মোচ্ছব  হয়  এবং  প্রায়
  দশ  পনেরো  হাজার  মানুষের  পংতিভোজের  ব্যবস্হা  হয়! (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: