সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

হঠাৎ খবরের শিরোনামে উঠে আসা একটা অদ্ভুতুড়ে গ্রামের কথা আজ বলবো। যে গ্রামে বসবাসকারী সকল গ্রামবাসী ও তাদের গৃহপালিত পশু সকলেই অন্ধ।
বিচিত্র এই গ্রামটি মধ্য আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে ''টিলটেপিক'' নামে পরিচিত। গ্রামটির চার পাশ ঘন অরণ্যে ঘেরা।
এই প্রকৃতিক অন্ধত্বের বিষয় মেক্সিকোর একটি সাংবাদ মাধ্যমে আসতেই শোরগোল পরে যায়। নড়েচড়ে বসে মেক্সিকো প্রসাশন।
এই গ্রামের মানুষ ও পশু সকলেই অন্ধ, এখানে তিন শতাধিক *জাপোটেক* নামের জাতির মানুষের বসবাস তারা ও তাদের গৃহপালিত পশু দৃষ্টিশক্তিহীন। তাবলে এরা কেউই জন্মগত অন্ধ নয়, নবজাতকেরা প্রত্যেকেই আর পাঁচটা সুস্থ্য ও স্বাভাবিক ভাবেই দৃষ্টিশক্তি নিয়েই জন্ম গ্রহণ করে, কিন্তু জন্মের প্রায় একসপ্তাহের মধ্যেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে হতে অন্ধত্ব নেমে আসে অভিশাপ হয়ে।
          সাংবাদ মাধ্যমে এই খবর আসতেই মেক্সিকো প্রসাশন ও বিজ্ঞানীরা ভাবতে শুরু করেছেন। এর কারন অনুসন্ধানে নেমেছেন তারা।
টিলটেপিক গ্রামবাসীদের দাবী *লাবজুয়েলা* নামের  একটি গাছই তাদের অন্ধত্বের জন্য দায়ী। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস এই গাছের জন্যই তাদের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার অভিশাপ, কেড়ে নিচ্ছে তাদের দৃষ্টিশক্তি।
বিজ্ঞানীদের একটি দল ঐ গাছটি কে নিয়ে গবেষনা করছেন, কিন্ত ঐ গাছের সাথে অন্ধত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, যেহেতু গ্রামটি ঘন অরণ্যে ঘেরা আর সেখানেই রয়েছে *ব্ল্যাক ফ্লাই* নামের এক বিষাক্ত মাছি। আর এই গ্রামে তার অবাধ বিচরণ, ফলে তার কামড়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত অন্ধত্ব বহনকারী জীবাণু আর সেই কারনেই নেমে আসছে অন্ধত্ব। আর এই গবেষণায় প্রসাশন উদ্বিগ্ন। বসবাসের অযোগ্য গ্রামটিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাবার পদক্ষেপ নিলেও রাজি নয় গ্রামবাসীরা।
তারা বিশ্বাস করতে নারাজ ওই মাছির কামড়ে তাদের এমন অবস্থার কথা। তবুও মেক্সিকো প্রসাশন ক্রমাগত তাদের সরিয়ে নিয়ে যাবার কাজে তৎপর রয়েছে।
আমাদেরও স্থির বিশ্বাস যেনো তাদের এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে প্রসাশন সক্ষম হবে। অন্ধত্বের হাত থেকে বেঁচে যাবে আগমী প্রজন্ম।
আসুন সকলেই তাদের আগমী সুস্থ্য সবল জীবনের জন্য প্রার্থনা করি। পৃথিবী সুন্দর রঙিন আর জাপোটেক জাতির মানুষ দুচোখ দিয়ে উপভোগ করুক এই রঙিন সুন্দরতা।
সবার মাঝে
থাকুক চোখের দৃষ্টি,
আঁধার নয়
ফিরে দেখুক এই সৃষ্টি।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: