ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
হটী দ্বিধাগ্রস্হ কি করবে সে! রূপমতীর মতো, সত্যবতীর মা, দিদি, বৌদির ,মতো বর্গীর হামলায় বিধ্বস্হ আরো হাজার হাজার সতী লক্ষ্মীর মতো ধর্ম রক্ষায় সেও কি আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে? নাকি সত্যবতীর মতো প্রতিশোধ নিয়ে শহীদ হবে! যাতে লম্পট পুরন্দরের কামের লালসার আগুনে আর কোন কুমারী বা গৃহবধূকে পুড়তে না হয়!
এমন সময় তার মনে পড়ল পিতার মুখে বহুবার শোনা বুদ্ধের সেই অমৃতবানী " আত্মদীপ ভবো
আত্মশরনো ভব
অনন্য শরনো ভব!
যার অর্থ নিজের বিবেকের নির্দ্দেশে অন্তরাত্মার আলোয় নিজের পথ খুঁজে নাও! তুমিই তোমার গুরু,তুমিই নিজের পথপ্রদর্শক!
হটী স্হির সিদ্ধান্তে এলো! ভবিষ্যতে আর কোন নারী পুরন্দরের দ্বারা ধর্ষিতা না হয় সেজন্য নিজে স্বেচ্ছায় ধর্ষিতা হবে! সেই শারিরীক মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করবে পশুটাকে হত্যা করতে! সত্যবতীই তার আদর্শ !
মুক্তির আশা হটী ছেড়েই দিয়েছিল! হঠাৎ তার মনে পড়ল তার উদ্দেশ্যে বলা কাশীর সচল বিশ্বনাথ তৈলঙ্গস্বামীর দুটি বানী," জীবাত্মাকে মুক্তি দিতে হয়, পরমাত্মার দিকে জীবাত্মার অভিযান " আর " ঔরৎ হয়ে তুই শাঁখ বাজাতে ভুলে গেছিস?" হটী ভাবতে থাকে কী অর্থ এই তীর্যক ভর্ৎসনার?
পরদিন খুব ভোরে ঈশেন সর্দ্দারের দেওয়া উপহার পায়রাটিকে নিয়ে আশ্রম প্রাঙ্গনে এলো হটী!তাকে ভুট্টার দানা খেতে দিল! সে পালাতে পারবে না! হাঁটতে পারে না, উড়তেও পারে না! জোড়া পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে! হটী ভাবতে লাগল কেন পায়রাটি উড়তে পারে না ? আবার ভালো করে হাঁটতেও পারে না! পায়রাটাকে হাতে তুলে নিয়ে ভাল করে দেখলো পা দুটি আর ডানাদুটি সুক্ষ্ম মসলিন সুতোয় বাঁধা! তখন মনে পড়ল তৈলঙ্গস্বামীর নির্দ্দেশ " জীবাত্মাকে বন্দী রাখতে নেই! মুক্ত আকাশে, পরমাত্মার দিকে অভিযাত্রা...."
তখন মহাপুরুষের কথা বুঝতে পারে নি ! এখন পেরেছে ঈশেন কেন তাকে পায়রাটি উপহার দিয়েছিল? এই কবুতর তার মুক্তিদুত! ঈশেন হয়তো বলতে চেয়েছিল বিপদে পড়লে এই কবুতর- দূত মারফৎ সংবাদ পাঠাতে! কিন্তু ঈশেন তো নিরক্ষর চিঠি পড়বে কিভাবে? আবার হটী ভাবলো, কেউ একজন ঠিক পড়ে দেবে! ভাবা মাত্রই ভুর্জপত্রে তার বিপদের কথা ঈশেনকে লিখে রেশমী সুতোয় পায়রার পায়ে বেঁধে আকাশে উড়িয়ে দিল! কিন্তু পায়রা আকাশে পাক খাচ্ছে কিন্তু ঈশেনের ডেরা রামনগরের দিকে যাচ্ছে না! তখন হটীর মনে পড়ল সেদিনের ঈশেনের আচরন! মালিকের নির্দেশের অপেক্ষা করে কবুতরটি! হটী তার ডান হাতের তালু মুখের কাছে এনে বিচিত্রভাবে ডাক দিল " আ-আ- আ-" পায়রা পাক খেতে খেতে ফিরে এসে হটীর কাঁধে বসল! এবার সেই বৃহৎ শাঁখটি হাতে নিয়ে শঙ্খধ্বনী করলেন! আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হলো! পায়রাটি পাক খেতে খেতে সুদুর লীলাকাশে হারিয়ে গেল!
সেদিন সন্ধ্যাতেই সংবাদ সহ তবুতরটি প্রত্যাবর্তন করল!দ্রুত কবুতরটিকে বুকে তুলে নিয়ে আদর করতে লাগল হটী! তার পায়ে বাঁধা একটি পত্র " মাভৈঃ! চরানাশ্রিত বজ্রধর সিংহ "!
রামারঞ্জনের কাছে হটী জানতে পারল , বজ্রধর সিংহ কাশীধামে পরিচিত নাম! তিনি কাশীনরেশের জ্ঞাতিভাই, তাঁর সেনাপতিও ছিলেন! পুরন্দর শাসন ক্ষমতা দখল করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করলে তিনি বিহারের রোহিতাশ্ব দুর্গে আশ্রয় নিয়েছেন এবং সৈন্য সংগ্রহ করছেন বলে লোকমুখে জানা যায়!
ওদিকে বজ্রধর রোহিতাশ্ব দুর্গে বসে সৈন্য সংগ্রহের পাশাপাশি কাশীর সমস্ত সংবাদ রাখছিলেন! এমনকি হটীর উপর অত্যাচারের ঘটনাও তাঁর অজানা নয়! বজ্রধর বুঝেনিলেন এটাই সুবর্ন সুযোগ! সারা কাশীবাসী, সৈন্যরা এমন কি যে পন্ডিতরা পুরন্দরের কাছে হটীর বিরুদ্ধে নালিশ করেছিলেন, তাঁরাও অনুশোচনায় দগ্ধ! বজ্রধর সাথে পাচ্ছেন ঈশেন সর্দ্দারের সঙ্গ!
ঈশেনকে সাথে নিয়ে কাশীরাজ্য আক্রমন করল বজ্রধর! কাশীর সৈন্যবাহিনী কোন প্রতিরোধ না করে তাঁদের প্রাক্তন২ সেনাপতিকে স্বাগত জানাল!
বজ্রধর রাজমাতার চরনে কোষমুক্ত তরবারি রেখে আদেশ চাইলেন! তিনি শুধু বললেন , "তুমি স্বর্গত মহারাজের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছো! তাঁর বংশধরকে নিষ্কন্টক করতে ছুটে এসেছো ! আমি বাবা বিশ্বনাথের কাছে তোমার শতায়ু প্রার্থনা করি !"
কিন্তু পুরন্দরকে রাজ প্রাসাদে কোথাও পাওয়া গেল না! কিন্তু২ ঈশেন একটা সময় কাশীর সৈন্যদলে ছিলেন! তাই পুরন্দরের গতিবিধি জানে! সাত আটজন অশ্বারোহী বন্দুকধারী সৈন্যকে নিয়ে হাজির হলো পুরন্দরের বাগানবাড়ীতে!
দরজার সামনে এসে বজ্রগম্ভীর কন্ঠে হাঁক পাড়ে ঈশেন "কোই হ্যায়?"
পুরন্দরের দেহরক্ষী রামলগন বাইরে বেরিয়ে পাল্টা হাঁক দেয়," কৌন চিল্লাতা?"
ঈশেন গর্জন করে ওঠে " তেরী বাপ রামলগন!"
রামলগন যেন ভূত দেখে, " ওস্তাদ তুম?"
হ্যাঁ রামলগন, " বল কি করবি লড়বি না গুরুদক্ষিনা দিবি?" ঈশেনের কাছেই লাঠি আর তলোয়ার খেলা শিখেছিল রামলগন !
ইতিমধ্যে বন্দুকধারীরা রামলগনকে তাক করে দাঁড়িয়ে পড়েছে! ঈশেন আবার বলে " কি করবি? গুলি খেয়ে মরবি না ফটক খুলবি?"
ফটক খোলার জন্য রামনগল একটা আজব শর্ত আরোপ করল! পুরন্দরের ধড় থেকে মাথাটা আলাদা করার সুযোগটা তাকেই দিতে হবে!
বিনা রক্তপাতে ফটক খুলে গেল! প্রমোদগৃহে তখন বাঈজীর সুরেলা কন্ঠে গানে মেহফিল জমে উঠেছে! সুরায় নেশায় মদির পুরন্দর! রামলগন এক লহমায় রাজমুকুট সহ পুরন্দরের মাথাটা ধড় থেকে আলাদা করে দিল! খন্ডিত মুন্ড সহ অত্যাচারীর দেহ নিক্ষিপ্ত হলো গঙ্গা বক্ষে!
নববর্ষের পূন্যলগ্নে কাশীরজ্যের রাজসিংহাসন অভষেক হলো কাশীনরেশের নাবালক পুত্র কৃষ্নেন্দু নারায়ন সিংহের! আজ থেকে তিনিই কাশীর মহারাজা ! ডান দিকে অভিভাবক রাজকুলগুরু বামে নবনিযুক্ত সেনাপতি বজ্রধর সিংহ! সাড়ম্বরে অভিষেক হল সমগ্র কাশীবাসী পংতিভোজে অংশ নিলেন! পন্ডিতরা সন্মানিত হলেন! হটীকে একান্তে ডেকে রাজমাতা জিজ্ঞাসা করলেন সে কি বৈদ্যবিদায় নেবে?
হটী অবাক হয়ে বলে সে তো কারো চিকিৎসা করেনি! তাহলে বৈদ্যবিদায় কিসের?
রাজমাতা বললেন," না,মা করেছো, আমার পুত্রটির! সে দুরারোগ্য ' শকুনী বা কংস ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিল!
হটী বলল, " আমাকে যদি কিছু দেন তাহলে আমার বহুদিনের একটি ইচ্ছা পূরন করুন! কাশীধামে একটি মহিলা বিদ্যালয় স্হাপন করার ব্যবস্হা করুন!"
*** কাশীতে সেই সময় কোন মহিলা বিদ্যালয় স্হাপিত হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায় না **** (চলবে)
হটী দ্বিধাগ্রস্হ কি করবে সে! রূপমতীর মতো, সত্যবতীর মা, দিদি, বৌদির ,মতো বর্গীর হামলায় বিধ্বস্হ আরো হাজার হাজার সতী লক্ষ্মীর মতো ধর্ম রক্ষায় সেও কি আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে? নাকি সত্যবতীর মতো প্রতিশোধ নিয়ে শহীদ হবে! যাতে লম্পট পুরন্দরের কামের লালসার আগুনে আর কোন কুমারী বা গৃহবধূকে পুড়তে না হয়!
এমন সময় তার মনে পড়ল পিতার মুখে বহুবার শোনা বুদ্ধের সেই অমৃতবানী " আত্মদীপ ভবো
আত্মশরনো ভব
অনন্য শরনো ভব!
যার অর্থ নিজের বিবেকের নির্দ্দেশে অন্তরাত্মার আলোয় নিজের পথ খুঁজে নাও! তুমিই তোমার গুরু,তুমিই নিজের পথপ্রদর্শক!
হটী স্হির সিদ্ধান্তে এলো! ভবিষ্যতে আর কোন নারী পুরন্দরের দ্বারা ধর্ষিতা না হয় সেজন্য নিজে স্বেচ্ছায় ধর্ষিতা হবে! সেই শারিরীক মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করবে পশুটাকে হত্যা করতে! সত্যবতীই তার আদর্শ !
মুক্তির আশা হটী ছেড়েই দিয়েছিল! হঠাৎ তার মনে পড়ল তার উদ্দেশ্যে বলা কাশীর সচল বিশ্বনাথ তৈলঙ্গস্বামীর দুটি বানী," জীবাত্মাকে মুক্তি দিতে হয়, পরমাত্মার দিকে জীবাত্মার অভিযান " আর " ঔরৎ হয়ে তুই শাঁখ বাজাতে ভুলে গেছিস?" হটী ভাবতে থাকে কী অর্থ এই তীর্যক ভর্ৎসনার?
পরদিন খুব ভোরে ঈশেন সর্দ্দারের দেওয়া উপহার পায়রাটিকে নিয়ে আশ্রম প্রাঙ্গনে এলো হটী!তাকে ভুট্টার দানা খেতে দিল! সে পালাতে পারবে না! হাঁটতে পারে না, উড়তেও পারে না! জোড়া পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে! হটী ভাবতে লাগল কেন পায়রাটি উড়তে পারে না ? আবার ভালো করে হাঁটতেও পারে না! পায়রাটাকে হাতে তুলে নিয়ে ভাল করে দেখলো পা দুটি আর ডানাদুটি সুক্ষ্ম মসলিন সুতোয় বাঁধা! তখন মনে পড়ল তৈলঙ্গস্বামীর নির্দ্দেশ " জীবাত্মাকে বন্দী রাখতে নেই! মুক্ত আকাশে, পরমাত্মার দিকে অভিযাত্রা...."
তখন মহাপুরুষের কথা বুঝতে পারে নি ! এখন পেরেছে ঈশেন কেন তাকে পায়রাটি উপহার দিয়েছিল? এই কবুতর তার মুক্তিদুত! ঈশেন হয়তো বলতে চেয়েছিল বিপদে পড়লে এই কবুতর- দূত মারফৎ সংবাদ পাঠাতে! কিন্তু ঈশেন তো নিরক্ষর চিঠি পড়বে কিভাবে? আবার হটী ভাবলো, কেউ একজন ঠিক পড়ে দেবে! ভাবা মাত্রই ভুর্জপত্রে তার বিপদের কথা ঈশেনকে লিখে রেশমী সুতোয় পায়রার পায়ে বেঁধে আকাশে উড়িয়ে দিল! কিন্তু পায়রা আকাশে পাক খাচ্ছে কিন্তু ঈশেনের ডেরা রামনগরের দিকে যাচ্ছে না! তখন হটীর মনে পড়ল সেদিনের ঈশেনের আচরন! মালিকের নির্দেশের অপেক্ষা করে কবুতরটি! হটী তার ডান হাতের তালু মুখের কাছে এনে বিচিত্রভাবে ডাক দিল " আ-আ- আ-" পায়রা পাক খেতে খেতে ফিরে এসে হটীর কাঁধে বসল! এবার সেই বৃহৎ শাঁখটি হাতে নিয়ে শঙ্খধ্বনী করলেন! আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হলো! পায়রাটি পাক খেতে খেতে সুদুর লীলাকাশে হারিয়ে গেল!
সেদিন সন্ধ্যাতেই সংবাদ সহ তবুতরটি প্রত্যাবর্তন করল!দ্রুত কবুতরটিকে বুকে তুলে নিয়ে আদর করতে লাগল হটী! তার পায়ে বাঁধা একটি পত্র " মাভৈঃ! চরানাশ্রিত বজ্রধর সিংহ "!
রামারঞ্জনের কাছে হটী জানতে পারল , বজ্রধর সিংহ কাশীধামে পরিচিত নাম! তিনি কাশীনরেশের জ্ঞাতিভাই, তাঁর সেনাপতিও ছিলেন! পুরন্দর শাসন ক্ষমতা দখল করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করলে তিনি বিহারের রোহিতাশ্ব দুর্গে আশ্রয় নিয়েছেন এবং সৈন্য সংগ্রহ করছেন বলে লোকমুখে জানা যায়!
ওদিকে বজ্রধর রোহিতাশ্ব দুর্গে বসে সৈন্য সংগ্রহের পাশাপাশি কাশীর সমস্ত সংবাদ রাখছিলেন! এমনকি হটীর উপর অত্যাচারের ঘটনাও তাঁর অজানা নয়! বজ্রধর বুঝেনিলেন এটাই সুবর্ন সুযোগ! সারা কাশীবাসী, সৈন্যরা এমন কি যে পন্ডিতরা পুরন্দরের কাছে হটীর বিরুদ্ধে নালিশ করেছিলেন, তাঁরাও অনুশোচনায় দগ্ধ! বজ্রধর সাথে পাচ্ছেন ঈশেন সর্দ্দারের সঙ্গ!
ঈশেনকে সাথে নিয়ে কাশীরাজ্য আক্রমন করল বজ্রধর! কাশীর সৈন্যবাহিনী কোন প্রতিরোধ না করে তাঁদের প্রাক্তন২ সেনাপতিকে স্বাগত জানাল!
বজ্রধর রাজমাতার চরনে কোষমুক্ত তরবারি রেখে আদেশ চাইলেন! তিনি শুধু বললেন , "তুমি স্বর্গত মহারাজের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছো! তাঁর বংশধরকে নিষ্কন্টক করতে ছুটে এসেছো ! আমি বাবা বিশ্বনাথের কাছে তোমার শতায়ু প্রার্থনা করি !"
কিন্তু পুরন্দরকে রাজ প্রাসাদে কোথাও পাওয়া গেল না! কিন্তু২ ঈশেন একটা সময় কাশীর সৈন্যদলে ছিলেন! তাই পুরন্দরের গতিবিধি জানে! সাত আটজন অশ্বারোহী বন্দুকধারী সৈন্যকে নিয়ে হাজির হলো পুরন্দরের বাগানবাড়ীতে!
দরজার সামনে এসে বজ্রগম্ভীর কন্ঠে হাঁক পাড়ে ঈশেন "কোই হ্যায়?"
পুরন্দরের দেহরক্ষী রামলগন বাইরে বেরিয়ে পাল্টা হাঁক দেয়," কৌন চিল্লাতা?"
ঈশেন গর্জন করে ওঠে " তেরী বাপ রামলগন!"
রামলগন যেন ভূত দেখে, " ওস্তাদ তুম?"
হ্যাঁ রামলগন, " বল কি করবি লড়বি না গুরুদক্ষিনা দিবি?" ঈশেনের কাছেই লাঠি আর তলোয়ার খেলা শিখেছিল রামলগন !
ইতিমধ্যে বন্দুকধারীরা রামলগনকে তাক করে দাঁড়িয়ে পড়েছে! ঈশেন আবার বলে " কি করবি? গুলি খেয়ে মরবি না ফটক খুলবি?"
ফটক খোলার জন্য রামনগল একটা আজব শর্ত আরোপ করল! পুরন্দরের ধড় থেকে মাথাটা আলাদা করার সুযোগটা তাকেই দিতে হবে!
বিনা রক্তপাতে ফটক খুলে গেল! প্রমোদগৃহে তখন বাঈজীর সুরেলা কন্ঠে গানে মেহফিল জমে উঠেছে! সুরায় নেশায় মদির পুরন্দর! রামলগন এক লহমায় রাজমুকুট সহ পুরন্দরের মাথাটা ধড় থেকে আলাদা করে দিল! খন্ডিত মুন্ড সহ অত্যাচারীর দেহ নিক্ষিপ্ত হলো গঙ্গা বক্ষে!
নববর্ষের পূন্যলগ্নে কাশীরজ্যের রাজসিংহাসন অভষেক হলো কাশীনরেশের নাবালক পুত্র কৃষ্নেন্দু নারায়ন সিংহের! আজ থেকে তিনিই কাশীর মহারাজা ! ডান দিকে অভিভাবক রাজকুলগুরু বামে নবনিযুক্ত সেনাপতি বজ্রধর সিংহ! সাড়ম্বরে অভিষেক হল সমগ্র কাশীবাসী পংতিভোজে অংশ নিলেন! পন্ডিতরা সন্মানিত হলেন! হটীকে একান্তে ডেকে রাজমাতা জিজ্ঞাসা করলেন সে কি বৈদ্যবিদায় নেবে?
হটী অবাক হয়ে বলে সে তো কারো চিকিৎসা করেনি! তাহলে বৈদ্যবিদায় কিসের?
রাজমাতা বললেন," না,মা করেছো, আমার পুত্রটির! সে দুরারোগ্য ' শকুনী বা কংস ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিল!
হটী বলল, " আমাকে যদি কিছু দেন তাহলে আমার বহুদিনের একটি ইচ্ছা পূরন করুন! কাশীধামে একটি মহিলা বিদ্যালয় স্হাপন করার ব্যবস্হা করুন!"
*** কাশীতে সেই সময় কোন মহিলা বিদ্যালয় স্হাপিত হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায় না **** (চলবে)
Post A Comment: