জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা, দুর্গাপুর:

বন্ধু সুকুমার রায়ের একটা পোষ্ট নজরে আসায়, আমার টাইম লাইনে পোস্ট করে দিলাম।রাসিয়ার প্রেসিডেন্টের এক মিনিটের একটা টিভি ভাষন। বলা হয়েছে, আগামি পনেরো দিন রাসিয়ার মানুষ ঘড়ে বিশ্রাম নেবেন। যাদের অসুবিধা হবে, তাদের জন্য জেলে ছ' বছরের জন্য ভালো ব্যবস্থা থাকবে। ভাষন শেষ।
---- অনেক বার লিখেছি,সময় কালে কথা যত বেশী, জল ঢালার ব্যাবস্থা তত বেশী। সেই সুত্রেই উল্লেখ করেছিলাম,  আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয় মহাবিপ্লবে্র শুরুটাও হয়েছিলও, আধ মিনিটের ভাষনে। সেন্ট পিটার্সবার্গ, পরবর্তীকালের লেনিনগার্ড রাজপ্রাসাদের অনতি দূরে, 'স্মলনীতে' সকাল থেকেই শ্রমিক, সৈন্যবাহিনী, বিপ্লবী  কৃষকরা একত্রিত হচ্ছিলেন।নতুন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ৭ই নভেম্বর। বিকেলের দিকে যখন লেনিন ঢুকলেন, স্মলনী টইটুম্বুর।
------ অভিবাদনের পর দাড়ালেন, তারপর চার শব্দের একটি ভাষন।
-----  "তবে বিপ্লবটা শুরু হোক" । সাথে সাথে প্রাসাদের বাইরে বিরাজমান রনপোত থেকে  কামানের গোলা পরতে শুরু হোল।
এতো ভুমিকার কারন একটাই,আধুনিক বিশ্বের বর্তমান কালে, জাতীয়তা যদি ঋজু
হয়ে দাড় করাতে হয়, সাম্যবাদী আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং প্রত্যয় অতি গুরুত্বপূর্ন।
আমি নিশ্চিত হয়েছি, এইগুনগুলী যেহেতু পুরানো সমাজের মধ্যেই  সংহত করার মধ্যেই 'সাম্যের' আবির্ভাব ঘটে, সেজন্যেই সেই সর্বোচ্চ ঋজুতা পেয়ে সাম্য জাতীয়তার সর্বোচ্চ স্তরে আরোহনে সক্ষম ।
এই সুত্রেই স্মরন রাখতে হবে, স্তালীন যদি দ্বিতীয় যুদ্ধে সৈ্ন্যাধক্ষ মনোনীত হয়ে থাকেন, সেই মনোনয়ন এসেছিলো, যুদ্ধে সেনানায়কদের প্রস্থাব অনুযায়ী।আরো স্মরনে রাখতে হবে, প্রেসিডেন্ট পুতিন যদি, 'এক মিনিটেই' আসল কথাটা বলে দিতে  পেরে থাকেন,
------- তিনি সোভিয়েত কালের আত্মপ্রত্যয় এবং সেই ধারনাঃ
যে  অতি সংকটকালে  অতি অল্প সময়ে নি্দৃষ্ট ঘোষনাটা যখন গোলার মতো নিক্ষেপ করা হয়, তখন তা একেবারে হৃদপিন্ডে ধাক্কা মারতে সক্ষম হয়।

নড়বঢ়ে জাতীয়তা বিপদকালে ঋজু হয়ে দাড়াতে পারে না।কারনঃ ভাষনের গনতন্ত্র সাধারনভাবে তৃনমুল স্তঢ়ে যেতে পারে না। সংসদীয় গনতন্ত্র যখন ধর্মান্ধ এবং নর্তকীদের হাতে চলে যায়
----- তৃ্নমুলে পৌছুনোর যোগ্যতা আরো হারিয়ে ফেলে। তখন এসব রাস্তা......।।

  সিদ্ভাধান    নেই যে  মানুষকে নিদৃষ্ট বিন্দুতে পৌছে দিতে পারতো বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের  যেগুনগুলি জ  এগিয়ে দিয়েছে।
ভারতে দেখুন
---- যখন চিন মহাবিপদগ্রস্ত, একের পর এক শহর লক করা হচ্ছে, এ কথা বোঝা সত্বেও ভারতীয় ব্যবস্থা, বিশেষ করে দিল্লীর সরকার, আনন্দেই মসগুল যে চিন বিপদে পরেছে।যে বিশ্বচুড়ামনি,  এই রোগকে 'চাইনিজ ভাইরাস' আখ্যা দিয়ে, সম্ভাবিত চিন-আমেরিকান যুদ্ধে ফয়দা লুটছিলো, তাদের পেছনে পেছনে চলতে গিয়ে, ভুলেই গিয়েছিলো যে
---- রোগটার ভাইরাস শুধু সংক্রামক নয়, অতিদ্রুত গতি সম্পন্ন। খুব মজা করে, সেই অবোধে গোবধে আনন্দের  মতোই, চোরাই করে পাঠানো মৃতদেহের স্তুপের ছবি মিডিয়াগুলিকে দিয়ে ছাপাচ্ছিলো। এই কাল পর্য্যন্ত এ বি পি আনন্দ, এই রোগকে যে নামে ডেকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিশ্বনিন্দিত হয়েছেন, সেই শব্দ বন্ধনীতেই রোগকে সম্বোধন।
-----   সেই একবারে আলগা জাতীয়তা।  নিজের কাপড় খুলে যাচ্ছে, সে ভ্রুক্ষেপ নেই, অন্যের কাপড় ধরে টানাটানি, যার কাছ থেকে, আগামীকাল সাহায্য নিতে হবে। এখানে নড়বড়ে  জাতীয়তার প্রশ্নে আরো একটি বিষয় স্মরন রাখতে হবে।  জাতীয়তার এই অবস্থায়, সাধারনভাবে বৌদ্ধিক অভিমুখ দুর্বল থাকায় চিন্তা সীমা ছাড়িয়ে এগুতে পারে না । তা না হলে, যখন এই মারন রোগের গতিপ্রকৃ্তির দিকে নজর রাখার কথা তখন , 'চাইনিজ ভাইরাস' ওয়ালা রাষ্ট্রপতিকে দিল্লীতে  ডেকে আনছি।
----- আজ বোঝা যাচ্ছে,  স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্বুদ্ধিতা ছিল সীমাহীন। কি হচ্ছে পাশের দেশে, ইতিমধ্যে রোগ ছড়াচ্ছে ইরানে এমন কি ইউরোপ এবং আমেরিকাকে ধাক্কা দিচ্ছে। অথচ সতর্ক করছি না, প্রস্তুত হচ্ছি না ।তখনো যদি সিনেমা হাউস, রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হোত লোকের সাধারন বোধ শক্তি সতর্ক হয়ে যেতো। এই বোধ থাকলে লেখক নিজে সপরিবারে বোম্বে যেতেন না। ছেলে তো মোটর বাইকে মুম্বাই থেকে গুজরাট ঘুড়ে এলো। তখন মহারাষ্ট্রে  বেশ কিছু ধরা পরেছে।
---- আর বোঝা যাবেই কি কঢ়ে? তখনো একদিকে সরকারী দল এবং  রাষ্ট্রীয় মদতে 'দিল্লীতে দাংগা লাগিয়ে, দেশের নজর ঘুড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হোল। একই পরিবেশে সরকারী দলের প্ররোচনায় 'গো' মুত্র খাইয়ে রোগ সারাচ্ছেন।
জাতীয়তা যখন  খুব দুর্বল হয়, তখনই এসব দুর্মতি দেখা দেয়। গতকাল এক পোস্টিং উল্লেখ  করেছিলাম,
----জাতীয়তার চরিত্র  যেখানে গনতন্ত্রকে তৃনমুল স্তরে প্রাতিষ্ঠানিক করতে দেওয়া হয় নাই, সেখানে স্বাভাবিকভাবে সংকটকালে জনগন নিজে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলি নেওয়ার সামাজিক-প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে তখন দেব-দেবী নির্ভরতা বাড়বেই। ভারতের সংক্রমনের হার যেখানে এখন ইরান থেকে বেশী সেখানে, এমন হতে পারে... এখন আর বট তলায় নয়, রাস্তার  মোড়ে মোড়ে 'শনি দেবতা জেগে উঠবেন, আর 'গো মুত্র নয়', করোনা আক্রান্তের 'মুত্র সেবন' করিয়ে 'শনিচারীরা' রোগ সারাই এর ব্যবস্থা করবেন।
 তা না হলে,
দেশের প্রধান মন্ত্রী সংখ্য, কাসর ঘন্টা বাজিয়ে, জনচেতনার নামে জাতীয়তাতেই আঘাত হেনে বসেন। উনার বোধেই নেই এসব বাদ্যই একটি বিশেষ ধর্মিয় বোধের  সাথে যুক্ত।
---- রাষ্ট্র প্রধানকে মাত্র কয়েক ঘন্টা লক ডাউনের জন্য টিভি তে ভাষনে যেতে হয়। এদিকে বাংলায় তো মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে দশ মিনিট বাদ বাদ টিভিতে আসার ব্যবস্থা করেছেন।
জাতীয়তার আভ্যন্তরীন শক্তির পরিমাপের বিচারে
প্রশ্নটা রাখতেই হয়-----
পরিস্থিতির ভয়ংকরতার বিচারে প্রধান মন্ত্রী কেন (ক) রুশ প্রেসিডেন্টের মতো ছোট কথায় বলতে পারলেন না - হয় দু' হপ্তার জন্য 'ঘড়ে বসে থাকুন; নয় তো 'জেল খানায় ব্যবস্থা  করা হচ্ছে'।প্রয়োজনে না হয়, একটা অর্ডিনেন্স জারী করাই যেতো। (খ) কেন চিনের মতো  চিকিৎসাকে তৃ্নমূল স্তঢ়ে বিস্তৃত করার  সাথে সাথে 'চার সপ্তাহের লক ডাউন ঘোষনা করে, বলে দিতে  পারলেন না, "যেঁ  যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন, উড়ো জাহাজ ট্রেন বন্ধ।"

আসলে ব্যক্তিগত বানিজ্যিক স্বার্থ সংরক্ষনের পিছুটানের সাথে সাথে ধর্মান্ধতায় ভোতা বুদ্ধির পাশে, তৃনমুল স্তরে গনতন্ত্র বিস্তৃত না থাকার শৃংখল পাহাড়প্রমান
পিছুটান বিসৃংখলার কারন হয়েছে।(চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours