শাম্মী তুলতুল, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও শিশুসাহিত্যিক, বাংলাদেশ:

সব পয়সায় দুটো পিঠ থাকে ঠিক তেমনি সব ঘটনার দুটি অধ্যায় থাকে। কিন্তু সব কিছুতে না না করার মধ্যে কিসের এমন রহস্যময় অধ্যায়?
“না” শব্দটি শুনতে নেতিবাচক হলেও শব্দটির আরো একটি অর্থ বহন করে তা হল ইতিবাচক না।
ওটা আবার কি করে? একটু ভাবলেই উপলব্ধি করা খুব একটা কষ্টের নয়। আমরা নারীরা এই এক বাক্যের ধবনিটি হরদম শুনতে খুব অভ্যস্ত তাই লুকিয়ে থাকা অর্থটি বার করার প্রয়াস মোটেও করি না।
নারীরা কিছু করতে গেলেই বাঁধা। না হবে না, এটি সম্ভব নয়। তোমার দ্বারা হবে না।  পরিবার যেন আমাদের বড্ড বড় শত্রু। সেই মুহূর্তে যেন তাই-ই বোধ হয়। এমন ভাবনা আসাটাও খুব স্বাভাবিক কারণ কেউ আদর করে তো বোঝায় না কর্কশ কণ্ঠেই ঝড় তোলে।  কিন্তু এমন তো নয় যে তাঁরা আমাদের ভালবাসেন না।আদর করেন না। প্রকৃত ভালোবাসেন বলেই  এতো ভয় আমাদের নিয়ে,  কারণ আমার মেয়ে,  আমার বোন,আমার স্ত্রী’র যেন কিছু না হয়।
কোন অঘটনের স্বীকার তাকে যেন না হতে হয়।
তাদের এই ভয় দুশ্চিন্তা একদম ওয়াজিব। নারী নিরাপত্তায় গোটা পৃথিবী আজো ব্যর্থ, সেই দেশ যতই উন্নত হোক না কেন।
আপনার এই অবস্থা দেখে আপনার পাশের জন আপনাকে ক্ষেপীয়ে বলতেও পারে “দেখেছো! তোমার পরিবার তোমায় বিশ্বাস করে না। এমন পরিবার থাকার চেয়ে না থাকাটাই শ্রেয়”।
এইজনটির কথার সাথে হ্যাঁ মিলিয়ে নিলে কিন্তু হোঁচট খেয়ে অবশ হবার সম্ভাবনা কিন্তু শতভাগ। আপনার দুঃসময়ে আপনাকে একা রেখে আলোর দ্রুতিতে প্রথমেই দৌড় দেবে এরাই। আপনার ভালো মন্দ সময়ে আপনার একমাত্র সঙ্গী পরিবারের সদস্যরাই আর কেউ নয়। তাই বাহিরের কেউ খুব ভালো বন্ধু বা বান্ধবীর কথার ছলের কবলে পরে হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়াটা খুব একটা বাহাদুরির কাজ মোটেও নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজের পায়ে নিজের কুড়াল মারার অবস্থা প্রমাণিত হয়।
পরিবারের এই ‘না” শব্দটি জয় করা যায় পরিবারকে নিয়েই। তাঁরা প্রথমে না বললে আপনি  তাঁদের বুঝিয়ে বলুন। প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ ঠিক তবে একবার দুবার তিনবারে দেখবেন মেনে নিবে।সহজ করার চেষ্টা করবে।
আমরা সমাজকে যতই অপছন্দ করি না কেন, থাকতে হবে সমাজেই।পরিবার সমাজেরই এক অভিন্ন অংশ আর আপনি পরিবারের অংশ বিশেষ।তবে যেসব পরিবার না বুঝে নারীদের ওপর সব সময় বাধা দেয় তারা একসময় নিজের ভুল বুঝতে পারেন। তাই জীবনে যাই করুন না কেন পরিবারকে সাথে নিয়েই  করুণ।  আপনার  সিদ্ধান্তে যখন মত না মিলে তাহলেও  সময় দিন, সময় নিন। দেখবেন সময় আপনার জন্য আপাতত পথ বন্ধ রাখলেও বড়দের প্রার্থনায় ঠিক সময়ে  এই সময় হাজারো পথ খুলে আপনারই অপেক্ষা থাকবে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours