সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:
'এমন দেশটি থুড়ি গ্রামটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সেজে আত্মপ্রত্যয়ী নারীর বাসভূমি।'
কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কথা গুলো এভাবে বললাম কেন ভাবছেন?
হ্যাঁ এমনই এক বিচিত্র গ্রাম আছে যেখানে কেবল মহিলারাই থাকেন, কোন পুরুষ নেই সেখানে আর প্রবেশের অধিকারও নেই। ভাবছেন ধুর এ আবার হয় নাকি? ঠিকই শুনছেন, কেনিয়ার এমনই একটি গ্রাম যেখানে কেবল মেয়েরাই থাকেন।
এবার উৎসাহ বাড়ছে কেন এই গ্রামে কেবল মহিলারা থাকেন? কি ভাবে তৈরী হলো এই গ্রাম? আসল তথ্যটা কি? একটু ধৈর্য্য নিয়ে পড়ুন কেবল।
কেনিয়ার সুন্দর সরল এক গ্রাম উমোজা। আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী যে রূপ দেখা যায়, ঠিক তেমন রঙিন বৈচিত্র্যে ভরপুর। কারণ পুরুষসমাজ সেখানে নিষিদ্ধ। নারীদের গ্রাম হিসেবেই উমোজা পরিচিত বিশ্বব্যাপী। সোয়াহিলি ভাষায় ‘উমোজা’ মানে ঐক্য। নাইরোবি থেকে ৬ ঘণ্টার দূরত্বের এই গ্রামটির নাম কেনিয়া ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে সবার মুখে মুখে। নর্থ-সেন্ট্রাল কেনিয়ার নারী-সর্বস্ব এই গ্রামের কথা জানে না এমন মানুষ কেনিয়াতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। অবশ্য ঠিক নাম মনে থাকার মতো দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন উমোজা’র নারী গোষ্ঠী। ১৯৯০সালে রেবেকা লোলোসলি নামের এক নারী ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন ও বিভিন্নভাবে অবহেলিত ও নির্যাতিত ১৫ নারী নিয়ে একজোট হয়ে গড়ে তোলেন উমোজা। সামাজিক ভাবে লাঞ্ছিত, নিপীড়িত ও ধর্ষিত ঐ ১৫জন মহিলারা পুরুষ জাতির প্রতি তীব্র ঘৃণা ও তাদের বর্জন করে নিজেরা নিজেদের মত আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে সিদ্ধান্ত নিলেন একটি গ্রাম গড়বেন। আর সেই মত গ্রাম গড়ে উঠলো যার নাম 'উমোজা'।
প্রথম দিকে সামাজিক ভাবে প্রায় বিচ্ছিন্ন মহিলারা তাদের জীবন ধরনের জন্য অসম্ভব কষ্ট করেছেন, কিন্তু হার মানেননি, বরং নিজেদের আত্মপ্রত্যয়ী ভাবে গড়ে তুলেছেন তাদের পরিশ্রমে ও উদ্ভাবনীশক্তি দিয়ে। আত্মনির্ভরশীল এই মহিলারা সকলেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাথে যুক্ত। তাঁদের তৈরী গহনা আজ বিশ্ব খ্যাত। চাহিদাও বাড়ছে। এটাই মূলতঃ রুজিরোজগারের প্রধান উৎস। আজ আধুনিক ব্যবস্থার মুখাপেক্ষি না হয়েই তাঁরা নিজেদের বেঁচে থাকার রসদ আর উন্নয়নের নজির গড়ছেন যা কেনিয়ার অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। ২০১৫ সালে এই গ্রামের বসবাসকারী মহিলার সংখ্যা ৪৭জন।
এই আত্মপ্রত্যয়ী নারীদের জীবন মান ও তাঁদের আত্মনির্ভর মানসিকতার সাক্ষী থাকতে দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক ও সমাজবিজ্ঞানীরা ভীড় করেন ওই গ্রামে। তা বলে এমনি দর্শন পাবেন না তার জন্য নির্ধরিত অর্থমূল্য দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেই যেতে হবে। আর সেই অর্থ তাঁদের গ্রামের উন্নয়নকল্পে খরচ করেন।
প্রতি দুবছর এর জন্য দুজন মহিলা উন্নয়ন ও গ্রাম পরিচালন করার দায়িত্ব পান। আর সকলেই সেই কাজে একযোগে সাহায্য করেন। এভাবেই হয়ত আরো সামাজিক বঞ্চিত, অবহেলিত মহিলারা যুক্ত হবেন আর এই ধরনের মহিলারা আগমী দিনে জীবনে বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পাবেন।
পরিশেষে এই কথা বলি আমরা চাইলে অসম্ভবকে সম্ভবত করতে পারি। আসুন সকলেই সম্ভাবনাময় উত্তরণের পথে উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে এগিয়ে আসি।
আশাকরি এই পর্বে উদ্বুদ্ধকরণ হেতু এই লেখা পাঠক হৃদয়ে কিছুটা স্পর্শ করতে পরলাম, যদি পারি এটাই হবে ঐ মহিয়সী নারীদের জন্য শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন।
'এমন দেশটি থুড়ি গ্রামটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সেজে আত্মপ্রত্যয়ী নারীর বাসভূমি।'
কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কথা গুলো এভাবে বললাম কেন ভাবছেন?
হ্যাঁ এমনই এক বিচিত্র গ্রাম আছে যেখানে কেবল মহিলারাই থাকেন, কোন পুরুষ নেই সেখানে আর প্রবেশের অধিকারও নেই। ভাবছেন ধুর এ আবার হয় নাকি? ঠিকই শুনছেন, কেনিয়ার এমনই একটি গ্রাম যেখানে কেবল মেয়েরাই থাকেন।
এবার উৎসাহ বাড়ছে কেন এই গ্রামে কেবল মহিলারা থাকেন? কি ভাবে তৈরী হলো এই গ্রাম? আসল তথ্যটা কি? একটু ধৈর্য্য নিয়ে পড়ুন কেবল।
কেনিয়ার সুন্দর সরল এক গ্রাম উমোজা। আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী যে রূপ দেখা যায়, ঠিক তেমন রঙিন বৈচিত্র্যে ভরপুর। কারণ পুরুষসমাজ সেখানে নিষিদ্ধ। নারীদের গ্রাম হিসেবেই উমোজা পরিচিত বিশ্বব্যাপী। সোয়াহিলি ভাষায় ‘উমোজা’ মানে ঐক্য। নাইরোবি থেকে ৬ ঘণ্টার দূরত্বের এই গ্রামটির নাম কেনিয়া ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে সবার মুখে মুখে। নর্থ-সেন্ট্রাল কেনিয়ার নারী-সর্বস্ব এই গ্রামের কথা জানে না এমন মানুষ কেনিয়াতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। অবশ্য ঠিক নাম মনে থাকার মতো দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন উমোজা’র নারী গোষ্ঠী। ১৯৯০সালে রেবেকা লোলোসলি নামের এক নারী ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন ও বিভিন্নভাবে অবহেলিত ও নির্যাতিত ১৫ নারী নিয়ে একজোট হয়ে গড়ে তোলেন উমোজা। সামাজিক ভাবে লাঞ্ছিত, নিপীড়িত ও ধর্ষিত ঐ ১৫জন মহিলারা পুরুষ জাতির প্রতি তীব্র ঘৃণা ও তাদের বর্জন করে নিজেরা নিজেদের মত আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে সিদ্ধান্ত নিলেন একটি গ্রাম গড়বেন। আর সেই মত গ্রাম গড়ে উঠলো যার নাম 'উমোজা'।
প্রথম দিকে সামাজিক ভাবে প্রায় বিচ্ছিন্ন মহিলারা তাদের জীবন ধরনের জন্য অসম্ভব কষ্ট করেছেন, কিন্তু হার মানেননি, বরং নিজেদের আত্মপ্রত্যয়ী ভাবে গড়ে তুলেছেন তাদের পরিশ্রমে ও উদ্ভাবনীশক্তি দিয়ে। আত্মনির্ভরশীল এই মহিলারা সকলেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাথে যুক্ত। তাঁদের তৈরী গহনা আজ বিশ্ব খ্যাত। চাহিদাও বাড়ছে। এটাই মূলতঃ রুজিরোজগারের প্রধান উৎস। আজ আধুনিক ব্যবস্থার মুখাপেক্ষি না হয়েই তাঁরা নিজেদের বেঁচে থাকার রসদ আর উন্নয়নের নজির গড়ছেন যা কেনিয়ার অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। ২০১৫ সালে এই গ্রামের বসবাসকারী মহিলার সংখ্যা ৪৭জন।
এই আত্মপ্রত্যয়ী নারীদের জীবন মান ও তাঁদের আত্মনির্ভর মানসিকতার সাক্ষী থাকতে দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক ও সমাজবিজ্ঞানীরা ভীড় করেন ওই গ্রামে। তা বলে এমনি দর্শন পাবেন না তার জন্য নির্ধরিত অর্থমূল্য দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেই যেতে হবে। আর সেই অর্থ তাঁদের গ্রামের উন্নয়নকল্পে খরচ করেন।
প্রতি দুবছর এর জন্য দুজন মহিলা উন্নয়ন ও গ্রাম পরিচালন করার দায়িত্ব পান। আর সকলেই সেই কাজে একযোগে সাহায্য করেন। এভাবেই হয়ত আরো সামাজিক বঞ্চিত, অবহেলিত মহিলারা যুক্ত হবেন আর এই ধরনের মহিলারা আগমী দিনে জীবনে বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পাবেন।
পরিশেষে এই কথা বলি আমরা চাইলে অসম্ভবকে সম্ভবত করতে পারি। আসুন সকলেই সম্ভাবনাময় উত্তরণের পথে উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে এগিয়ে আসি।
আশাকরি এই পর্বে উদ্বুদ্ধকরণ হেতু এই লেখা পাঠক হৃদয়ে কিছুটা স্পর্শ করতে পরলাম, যদি পারি এটাই হবে ঐ মহিয়সী নারীদের জন্য শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours