সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

প্রকৃতি তার স্থানগুলি পুনরায় দাবি করে এই ধারণা টা বাস্তবায়িত হতো না যদি না আমরা প্রকৃতির নতুন রূপ কে স্বরূপ না করি।
করোনা ভাইরাসের ফলে মানব জাতি কি তার রিসেট বাটনটা টিপে দিলো?  না এটাই প্রকৃতি যে নিজেই নিজের পরিধিকে পুনঃউদ্ধার করার জন্য বোধ হয় তার ফর্ম গুলোকে পরিবর্তন করতে পারে।
মানব জাতি কত বোকা সে ভেবেছিল প্রকৃতির উর্দ্ধে যেন সব পারে সব ঠিক করতে পারে। কি অদ্ভুত যেখানে সারা বিশ্ব নিজেকেই বহির্বিশ্ব থেকে সরিয়ে নিয়ে লুকাতে হচ্ছে মারণ থাবা থেকে, রাস্তা ঘাট শুনশান জন ব্যাস্ততার লেশ মাত্র নেই করোনা ভাইরাসের প্রকোপে। যানবাহন, বিমান সমুদ্রের জাহাজ সব যেন থমকে। একদিকে এই কয়েকদিনে পৃথিবীর দুষণ কমেছে। আবার জীর্ণ মলিন নোংরা মানব সৃষ্ট সম্পদ কেও যেন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার মধ্য দিয়ে যেন প্রাকৃতিক ভারসাম্যর আপ্রাণ চেষ্টা।
কিন্তু প্রকৃতির বাকি সদস্যদের যেন কোন ভয় নেই! প্রকৃতি তাদের জন্য ফ্রী স্পেস তৈরী করে দিয়েছে। যেন প্রকৃত নিজেই নিজের জন্য রিওয়াইন্ড বাটন টা কার্যকর করে নিয়েছে জীবনের জন্য।
সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ জনশূন্য মাঠ ঘাট শূন্য, টুরিস্ট শূন্য পর্যটনকেন্দ্র, রাস্তায় যানবাহন নেই, জনবহুল স্থান ফাঁকা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কেননা সবাই এখনও নিজের পরিবারের সাথে নিরাপদে ঘরের ভিতরেই অবস্থান করছে করোনো আতঙ্কের বিভীষিকায়। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে অন্য প্রাণী ও জীব জগতে এর যেন প্রভাবই নেই।
প্রকৃতি নিজের  পশ্চাদপসরণ করে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, সেই ইতালি যেখানে করোনার জন্য গৃহে বন্দী, জাহাজ নেই সমুদ্র বন্দরে  সেখানে অনায়াসে ফিরে আসে ডলফিন নিজের খাওয়ালে আনন্দেই জীবন যাপন করছে, ইতালির ক্যানেলে সারি সারি রাজ হংসের দল সারাদিন বিচরণ করছে এমন যেন কিছুই হয়নি। কোন মারণ ভয় থেকে তাদের আড়াল করে রেখেছে। অথচ এই ক্যানেলের ধরেই জনবসতি শূন্য।
সিঙ্গাপুরে জনবহুল ওয়াটার রিসোর্স দেখার জন্য মানুষ নেই বন্য জীব তাদের অনায়াস বিচরণ সিঙ্গাপুর এর পার্কে। এক গুচ্ছ ইজিপশিয়ান হাঁসের দল ইজরায়েলি তেহেলেবিম বিমান বন্দরে নিশ্চিত পাদচারণা করছে না আছে আতঙ্ক না আছে ভয়। শিকাগোর একটি জনশূন্য একুরিয়াম মিউজিয়ামে দেখাগেলো  এডোয়ার্ড ও এনি  নামে পেঙ্গুইনদ্বয়ের প্রণয় বিচরণ, যেন মনের আনন্দেই জীবনের পথ এগোচ্ছে।
প্রকৃতির অপর দিকে নিশ্চিন্তে তার জীবন কে সচল রেখেছে, দূষণের জন্য, জঙ্গল বিনাশের জন্য, জলের অপব্যবহার মানুষ তার জীবনকে বার বার সংকটে ফেলছে, পরিত্রান পেতে চাইছে আর নিজেকে লুকিয়ে ফেলছে একে অপরের থেকে.... অন্য দিকে বন্য জীবন স্বভাবিক ভাবেই তাদের কমিউনিটি নিয়ে আছে, মানুষ ততই কমিউনিটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতির এই দ্বৈত রূপ কি মানুষের কাছে কিছু বার্তা বহন করছে? নতুন করে কি আমরা ভাববো?
কেন আমরাই মানে মনুষ্যজাতি আক্রমণের লক্ষ্য? আসুন ভাবি, সকলকে ভাবাই পৃথিবী যেন সকলেরই বাসযোগ্য করে তুলতে পারি ভবিষ্যতের নতুন প্রজন্মকে এই উপহার দিতে সাহায্য করি।
কবি মেঘদূতের কথায় শেষ করি....
বন্ধু একটু দাড়া
এলোমেলো বাতাসের পাবি সাড়া
প্রেমিক হবে স্বচ্ছ আকাশ
প্রেমিক কৃষ্ণচূড়া।
বন্ধু একটু দাড়া!
হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি এসে
তোকেই শুধু ভালোবেসে
ভেজাবে তোর পাড়া!
বন্ধু একটু দাড়া!
এই শহরে বুনে দে আজ
সবুজ গাছের চাড়া।
ফুলে ফুলে ভরিয়ে দিতে
ভালোবাসার শপথ নিতে
সম্মুখে হাত বাড়া!
বাতাসটা খুব মিষ্টি হবে
সকাল বিকাল বৃষ্টি হবে
প্রেমিক হবে পাখির কুজন
প্রেমিক সন্ধ্যা তাঁরা।
বন্ধু একটু দাড়া!
এই শহরে বুনে দে আজ
সবুজ গাছের চাড়া।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours