অপর্ণা ভট্টাচার্য, লেখিকা ও সমাজকর্মী, আসানসোল:

অত্যন্ত সাধারণ মেয়ে আমি, আমার মত এমন আছে... রবিকবির ভাষাতেও প্রাধান্য পেয়েছে সেই নারী। আসলে নারী শব্দটাই জীবন ধারাবাহিকতার অন্ধের যষ্ঠি।
কি রহস্যময় একটি শব্দ। পরতে পরতে জড়িয়ে আছে রহস্য যা বুঝতে বুঝতে অতিবাহিত হতে পারে গোটা কতক জন্ম। এই কয়টি কথা বিভিন্ন বিন্যাসে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জনের মুখে শুনেছি। আপনার ও কি তাই মনে হয়?  আচ্ছা কজনা নারী শব্দটিকে যথাযথ মূল্যায়ন করেছেন আথবা বোঝার চেষ্টা করেছেন ?
ঠিক ই তো  ,এত বোঝাবুঝির কি আছে, তুমি পয়দা হয়েছ মুখ বুজে ঘাড়ে জোয়াল নিয়ে পরিবারের সকলের মুখে হাসি ফোটাতে। ওটাই তোমাকে মানায় বেশী ট্যাঁ ফু করেছ কি ইয়ে করিয়ে দেব অথবা ইয়ে ঢেলে দেব।
 নারীর মুখে বারবার একটি আক্ষেপ শুনি, ঈশ্বর তো জন্মের সময়েই আমাদের মেরে দিয়েছেন কম শক্তি দিয়ে। আসলে ঈশ্বর তো প্রকৃতি আর পুরুষ সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি তো পুরুষতান্ত্রিকতার সৃষ্টি করেননি। ওটার জন্য কিয়দংশে নারীও দায়ী। ভয় পেতে পেতে আর কোনঠাসা হতে হতে, নারীর মনে হয়েছে এটাই ভবিতব্য।
আমার মতে প্রতিটি দিবস ই নারী দিবস। কুর্নিশ জানাই সেই মেয়েকে যে রাত থাকতে উঠে স্বামী, বৃদ্ধ শাশুড়ী, চার সন্তানের জন্য রান্না করে ছুটতে ছুটতে লোকাল ট্রেন অথবা বাস ধরে শহরে এসে পাঁচ বাড়ি কাজ করে। যদি কখনও খুব দরকারে আ্যডভান্স টাকা চায় মুখ ঝামটা জোটে তার মালকিনের কাছে। সেও কিন্তু নারী। মালকিনদের পারস্পরিক ফোনালাপ, একদম আস্কারা দেবে না, মাথায় চড়ে যায়। যাকে মাথায় চড়াচ্ছে সে তখন ছুটছে ঘর পানে, ঘরে যে পরে আছে তার অর্ধভুক্ত পরিবার।
কুর্ণিশ জানাই সেই মেয়েটিকে যে পরিবারের খিদে মেটাবার জন্য বাধ্য হয় শরীর বেচতে। আসুন আজ জয়গান গাই সেই মেয়েটির যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নিজেকে নিজেই নিয়ে চলেছে সাফল্যের দিকে।
চলুন আজ একটি শপথ নিই, আর নয় ভয়ে ভয়ে বাঁচা। আর আমার পাশের বাড়ির মেয়েটি যদি হয় বিপদগ্রস্ত বাড়িয়ে দাও হাত। দোষারোপ নয় চল সচেষ্ট হই।
তাই মননে বারবার উচ্চারিত হয়, নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার হে বিধাতা?

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours