আবীরা গঙ্গোপাধ্যায়, লেখিকা, কলকাতা:

মাঝেমাঝে এক একটা ঘটনা, স্থির জলের ডোবার মত নিস্তরঙ্গ আমাদের জীবন যাত্রায় ঢিল ফেলে। ছোটছোট ঢেউ ওঠে পরপর কিছুদিন। তারপর আবার সব চুপচাপ। জীবন চলতে থাকে তার নিজের গতানুগতিক পথে।
 
রবীন্দ্রভারতীর জঘন্য ভাবে বসন্ত উৎসব পালন  নিয়ে আমরা ছি ছি করছি বর্তমানে । ঘাবড়াবেন না  এরকম আরো করতে হবে। কারন আমরা মা বাবারই কি বাচ্চাগুলোকে ঠিক মত কিছু শেখাচ্ছি?!! আমার মেয়ে বই পড়ে, খুব বই পড়ে...শুনলেই অন্য মা বাবারা আফসোস  করে বলে ওঠে....আমার ছেলে বা মেয়ে পড়ার বাইরে কিচ্ছু পড়ে না। জানতে ইচ্ছে করে আপনারা নিজেরা কি পড়েন?! মেয়ে কিংবা ছেলে কি কোনোদিন আপনাকে দেখেছে একটা ভালো বই পড়তে? তাহলে ওরা শিখবে কোথা থেকে বই পড়া? শিশুরা অনুরকন প্রিয়। একটা বয়স অবধি বাড়িতে যা দেখে তাই করে। আপনি নিজে ভালো বই পড়বেন না, ভালো গান শুনবেন না, ভালো কোনো বিষয়ের ওপর আলোচনা করবেন না,...তাহলে ভালো প্রজন্ম তৈরি হবে  কোথা থেকে?!!!  আর মা দের দায়িত্ব এবিষয়ে সব থেকে বেশি। বাচ্চা ছোটো থেকে দেখছে...মা স্কুলের সামনে থেকে খালি কুর্তি, লেগিংস কেনে। সে এটাই জানবে....জীবনের সারসত্য লুকিয়ে আছে সাজগোজে।
সে ও তার বয়সকালে....নিজের মত সাজবে.....পিঠে আবির দিয়ে বাড়া লিখে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর স্কুলের মালিক প্রোমোটার এদের কাছে একই।.দু জনেই তাদের ডিগ্রী পাওয়ার জন্য একটা প্রতিষ্টান বানিয়ে দিয়েছেন।
তাই যারা এসব  করছে....তারা তো মোটামুটি গোল্লায় গেছেই. ..তাদের ছবি শেয়ার না করে কচিকাঁচাদের মা এবং বাবাদের কাছে অনুরোধ নিজেদের একটু বদলান  না। একটু বই পড়া, বাচ্চাকে পড়ে শোনানো,ভালো গান শোনা, ভালো কথা আলোচনা.....সন্তানদের সঙ্গে,  ছোটোর থেকে নানান বিষয় ওদের পরিনতমনস্ক বানায়, বড় করাও সহজ হয়।এই সবগুলোই পরীক্ষিত এবং প্রমানিত। আখেরে তাতে আপনার ভালোই হবে। জীবনটাও একটু সরল হবে। আর ওই রকম ছবিগুলোতে নিজের সন্তানকে খুঁজে পেয়ে , তার নিচের কমান্টস এ গালির বন্যা দেখে আঁতকাতে হবে না।
এতটা টাইপ করেই মনে হল....দুস কি দরকার এসব লিখে।.এক্ষুনি তো দশটা কমান্টস্ পরবে....আমি কতওওও প্রাচীন ধ্যান ধারনার মানুষ প্রমাণ করতে।
ভুলেই গেছিলাম....সোনালীতো কবেই বীজমন্ত্র দিয়েছিল....কোন সে ঊষালগ্নে। তোর থেকে ছোটো কোনো ছেলেমেয়ের ব্যবহার অসহ্য লাগলে ...ভুল ধরিয়ে ভুল প্রমানিত হতে যাবি না....মনের দরজা জানলা বন্ধ করে..দশবার জপ করে নিবি....পরের ছেলে পরমানন্দ
                    যত গোল্লায়.যায় ততই আনন্দ ।

তবুও.. .  ..

শিক্ষার মান কত নেমেছে...উচ্চশিক্ষার সুযোগ কত নিম্নমানের মানুষ পাচ্ছে.....এই ঘটনাগুলো তারই প্রমান রেখে যাবে। দিন দিন যে সব নীতি নেওয়া হচ্ছে শিক্ষাকে সর্বসাধারনের জন্য, সহজ লভ্য করার জন্য তাতে এররম প্রজন্মই তৈরি হবে অশিক্ষিত -উচ্চশিক্ষিত এক শ্রেনী। ভাবতে ভয় লাগে সেদিন কি হবে। বিনা পরিশ্রমে, অতি সহজে পাওয়া শিক্ষা যে কি ধরনের বকচ্ছপ তৈরি করছে সমস্ত ঘটনা সেদিকেই নির্দেশ দিচ্ছে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours