অর্পিতা মন্ডল, কবি ও চিত্রশিল্পী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, দ্য অফনিউজ, কলকাতা:

যেখানে, ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে এখনো লকডাউনকে অমান্য করছে মানুষ, সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু শ্রেণীর মানুষ আবার ভয় পেয়ে কিনেও ফেলছে "হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন" ড্রাগটি।

মূলত এটি আর্থারাইটিস, অ্যান্টি ম্যালেরিয়া ও লুপাস এর ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও ব্যবহার অনেক কমিয়ে দিচ্ছে ভারত সরকার, সঙ্গে রপ্তানিও। কারণ এই ড্রাগটি এইমুহূর্তে সব থেকে বেশি দরকার তাদের, যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের দেখাশোনা করছে। কিন্তু ড্রাগটি যদি এইমুহূর্তে বাইরে রপ্তানি করা হয় তাহলে দরকারের সময় এই ওষুধ পাওয়া যাবে না।

কিন্তু মানুষজন এতটাই আতঙ্কিত যে দিকবিদিক শুন্য হয়ে কিনে ফেলছে এটি। ভ্রূক্ষেপ দিচ্ছে না যে এই ওষুধ সকলের জন্য নয়। বার বার বলা হয়েছে চোদ্দ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এটি নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেকেই করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়েও এই ড্রাগটি নিচ্ছে যা তাঁদের শরীরের জন্য একদমই উপযুক্ত  নয় এবং এই ড্রাগের ওভারডোজে বড় সমস্যাও দেখা দিতে পারে সমাজে।

বহু বছর ধরে এই ড্রাগটি কিন্তু পাওয়া যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এটি মারণাস্ত্র হিসাবে কাজ করছে সমাজে। সেইকারণেই এই ড্রাগটি কেনার কোনও প্রয়োজন নেই সাধারণ মানুষের কিন্তু আমেরিকায় বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে এই ড্রাগটি কেনার চেষ্টা করছিলো, বর্তমানে ভারতেও এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ভারতে বহু মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে এই ড্রাগটি কেনার চেষ্টা করছে। সেই কারণে ভারত সরকার বাধ্য হয়ে ভারতেও এই ড্রাগটি সীমিত ভাবে বিক্রি করার নির্দেশ জারি করেছে।
ওপরদিকে লকডাউনের জেরে ২১ দিন ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে হবে ভারতের মানুষকে। এই অবস্থায় বেঁচে থাকতে গেল কাছের মানুষকে ভালবাসা হলো সময় কাটানোর মোক্ষম ওষুধ। অফিস, কাজ, ব্যস্ততা এসবের মধ্যে পড়ে মানুষ ভুলেই গেছে ঘরে একসঙ্গে অনেক দিন থাকতে। আর বাড়িতে থাকা হতো না বলেই নিজের পার্টনারকেও সময় দেওয়া হতো না। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জন্য এখন বাড়িতে বন্দি মানুষ। আর এই সুযোগেই অনেকে নিজের পার্টনারকে নতুন করে আবিষ্কার করছে, ভালবাসছে। আর এই ভালাবাসার তাগিদেই যৌনতাতেও হাওয়া লেগেছে বসন্তের।

কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতে কন্ডোম বিক্রির হার বাড়তে শুরু করেছে সেই সঙ্গে বাড়ছে কন্ট্রাসেপটিভ পিল বিক্রির হারও। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক মানুষকে গৃহবন্দি করেছে ঠিকই যা কিছুটা হলেও বিরক্তি বাড়াচ্ছে কিন্তু সেই বিরক্তি থেকে অনেক বেশি বাড়ছে কাপলদের মধ্যে ঘনিষ্টতা। মানুষ নিজের কাজ নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে যৌন জীবন প্রায় হারাতেই বসেছিল। অনেক দম্পতির মধ্যে বাচ্চা না হওয়ার সমস্যাও ছিল। কিন্তু এই গৃহবন্দি দশা এবার হয়তো তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ করে দেবে।

তবে দেশে যে হারে কন্ডোম বিক্রি বেড়েছে তাতে নিশ্চিত করে বলা যায় কাপলদের এই ২১ দিন আতঙ্কের মধ্যেও ভালোই আনন্দে কাটবে। দিল্লিতে অবস্থিত স্যার গঙ্গা রাম হসপিটালের একজন মনোরোগ চিকিৎসক জানিয়েছেন , "যুদ্ধ এবং আতঙ্কের সময় সব পার্টনারদের মধ্যেই ইন্টিমেসি বেড়ে যায়, তাই ২০২০ ডিসেম্বরে হয়তো আমরা দেখবো চারিদিকে করোনা ভাইরাসের জন্য অনেক সন্তান জন্ম নেবে ঘরে ঘরে"।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours