জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা, দুর্গাপুর:

মহাযুদ্ধ বা স্বাধীনতা, সনাতনিত্বে সুপার-ইম্পোজড/সংস্কার আন্দোলনও উবে গিয়েছিলো।
অংশ সায়ত্রিশ।
ইতিমধ্যে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে

বুঝে নেওয়ার কথাঃ
বিশ্বের সব দেশের জাতীয়তার শক্তিতে যে  ধনাত্মক কিংবা ঋণাত্মক বদল ঘটে চলেছে তার প্রধান কারনঃ
ভেতরের আর্থ-সামাজিক দ্বন্দ্বগুলিকে কীভাবে বিশ্ব-দ্বন্দ্বের অসন্তুলিত রুপ প্রভাব বিস্তার করতে থাকবে তার উপর।
 প্রথমতঃ
 সেখানে মানতে হবে  ইউরোপীয় কিংবা বিশ্বের উন্নত পুজিতান্ত্রিক দেশগুলিতে জাতীয়তার রুপে, যে ,ঋণাত্মক  বদল ঘটছে সেটা তৃতীয় বিশ্বের তুল্য মূল্যে অনেক কম। এই গ্রুপে যদি এমন কোন কোন  দেশ  থাকে জাতীয়তা যথেষ্ট পরিমান ধনাত্মক, মানতে হবে - সেই জাতীয় সত্বা, জাতীয়তা নিজের সীমা অতিক্রম করেছে এবং মানুষ মেনে নিয়েছে, যেন
---- দ্বিতিয় বিশ্ব যুদ্ধের পরিনাম, সেই দেশের মানুষকে বিশ্বের অভিবাক বানিয়ে দিয়েছে ।

দ্বিতীয়তঃ
অন্যদিকে এসিয়ায় তৃতীয় বিশ্বে স্বাধীনতার সময় সব থেকে হত-দরিদ্র দেশ হিসেবে, একমাত্র চিনে যদি  বিগত ৭ দশক ধরে সাধারনভাবে জাতীয়তার কোন ঋনত্বক তো নয়ই
-----  এক অখন্ড নিরন্তরতায়,  সে বিশ্বদন্দ্বের ঋণাত্মক দিকগুলিকে মোকাবিলা করে জাতীয়তার ধনাত্মক দিকটি  অর্থনীতির সাথে  যুগলবন্দিতে, বিশ্ব পুজির কেন্দ্রিকতার আঘাতকেই আটকে দিয়েছে, তাই নয় হিটলার তন্ত্রের উত্তরাধীকারিকেও টাইট করে দিয়ে, জাতীয়তাকে কার্য্যতঃধনাত্মক চেহারায়
দাড়  করিয়ে দিয়েছে।
তৃতীয়তঃ
সাধারনতঃ তৃতীয় বিশ্বের ইন্দোচিনের সমাজতান্ত্রিক বা উন্নত প্রজাতান্ত্রিক দেশ সমুহ এবং লাতীন আমেরিকার অধিকাংশ দেশে জাতীয়্তায় , ধনাত্মক বিকাশ ঘটলেও, অধিকাংশ দেশেই আন্তর্জাতীক দ্বন্দ্বের ঋণাত্মক প্রভাবে,জাতীয়তা ধ্বসাত্মক।
চতুর্থত এবং ভারতের ক্ষেত্রে বিপর্য্যয়কর
----- ভারতে যখন জাতীয়তা কার্য্যতঃ ধ্বসে গেছে, তখনই 'বিবিধের মাঝে মিলন মহানের যয়গায়  দ্বিজাতী ভিত্তিক এক রাষ্ট্রের কথা বলা হচ্ছে।
এটা হচ্ছে, যখন ভারতীয়তার গৌরব মাটিতে মিলিয়ে যাচ্ছে।
এতোদিন পর্য্যন্ত, দার্জিলিং এবং কাশ্মীরের একটা অংশ, নিজেদের পৃথক
জাতীয়তা বিচারে, অন্যপ্রান্তের মানুষদের ইন্ডিয়া থেকে বলে মেনেছে। যেমন বাংলাদেশের হিন্দুরাও, এদিকের বাংগালীদের ইন্ডিয়ান বলে সম্বোধন করেন।
------ যেটা বিপরয্যয়কর, 'ভারত মাতার' নামে জয়ধ্বনীর কলরবে নেতাদের ভাষনে শোনা গেলেও, --"আমি ভারতবাসি' বলে দাবীকরার মানুষ এদেশে
কার্য্যতঃ ১০% ভাগ রয়েছে কি না, সে সম্পর্কেই সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
এমনটি যে ঘটছে,
কিঞ্চিত গবেষনাতেই ধরা পরবেঃ
দেশে স্বাধীন শিল্পপুজি ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে সাম্যবাদী এবং শ্রমিক আন্দোলন, সরকারীয়ানায় ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে,
------ বিশ্বদ্বন্দ্বের ঋনাত্মক দিকের প্রত্যাঘাতে জাতীয়তা এখন ঔপনিবেশিকতা এবং দাসত্বের পদতলে। দেশ ফ্যাসিবাদের মুখোমুখি।

দুই।

এই সুত্র ধরেই সমাজ বিজ্ঞানকে তিনটি বিষয়কে বিবেচনায় আনতে হয়ঃ
প্রথমতঃ
দ্বিতীয় যুদ্ধের পর আন্তর্জাতীক দ্বন্দ্বগুলি কোন পথে এগূতে চাইবে এবং হিটলার বিনাশের পর, হিটলার তন্ত্র বা কেন্দ্রভূত পুজি কোন পথ ধরে চলবে।
দ্বিতীয়তঃ
দ্বিতীয় যুদ্ধের পর যারা স্বাধীন হয়েছেন, স্বাধীনতাকালে, তাদের জাতীয়তার ভিত্তি কতদুর বিস্তৃত ছিলো ।
তৃতীয়তঃ
স্বাধীনতা সংগ্রামের পুজি বা জামিদার বিরোধী অবস্থান এবং দ্বিতীয় যুদ্ধে ধনাত্মক অথবা ঋনাত্মক অবস্থান নিয়েছিলেন তার উপরে/
চতুর্থতঃ
স্বাধীনতাত্তোর কালে,
বিশ্বদ্বন্দ্বের ৠনাত্মক দিকগুলিকে আটকাতে জাতীয়তায় শক্তি যোগানোর প্রশ্নে
দেশকে একাত্ম রাখার প্রশ্নে সাম্যের অভিমুখের সাথে সাথে অর্থনৈ্তিক স্বয়ংসম্পুর্নতায় শিল্পপূজীর বিকাশের সাথে সাথে প্রতিরক্ষার স্বাধীন শক্তি।

তিন।

উল্লেখিত সুত্র ধরেই,
তৃতীয় বিশ্বের স্বাধীনতা এবং জাতীয়তার বিকাশের প্রশ্নে,
দ্বিতীয় যুদ্ধ এবং স্বাধীনতাত্তোর কালে,
কমরেড স্তালিনের ভূমিকার কথা মনে পরছেঃ

যদি ১৯৩৯ থেকে যুদ্ধ শেষ সময় কাল থেকে,
স্বাধীনতাত্তোর কালে ভারতে জাতীয় স্তরে
 রাজনৈতিক বিন্যাসের দিকে
যদি  তাকিয়ে দেখা যায়
--- তবে দেখা যাবে প্রথমকালে সাম্যবাদীদের বাইরের
দল হিসেবে  জাতীয় রাজনীতি এবং
নেহেরু, আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র এবং রবীন্দ্রনাথ ব্যতিরেখে
বুদ্ধিতন্ত্রের প্রায়  সবটাই, যদি সনাতনিদের  সাথে মিশে থেকে
থাকে, তবে সেটাই হয়তো স্বাভাবিক ছিলঃ
-----কংগ্রেস রাজনীতি, যেহেতু মূলতঃ জমিদার বা চিরস্থায়ী বন্দোবস্থের
সাথে যুক্ত ছিলেন, এবং  তৎকালিন শিল্পপুজি হিটলার নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে কিংবা বৃটিশ পুঁজির বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থান কখনো নেন নি।

চার।

এই সুত্রেই বুঝে চলতে হয়। আজ  ভারতীয় জাতীয়তাকে যদি  শ্রীমোদি এবং শ্রীঅমিত সাহ, ফ্যাসিস্তদের কাছে,  আত্মসমর্পনের পথে ঠেলে থাকে, তবে মেনে চলতে হবেঃ
নরসিমহা রাও এবং  মনমোহন সিংহের যুগলবন্দি যদি, সেদিন খাল খেটে
কুমীর নিয়ে এসে থাকেন, চিনের প্রজাতন্ত্র  খালের মুখটা বন্ধ করেই বিশ্বায়নকে মেনেছিলেন।
তফাৎটা সম্পর্কে আরো কিছু কথা বলা প্রয়োজন হবে। তার পূর্বে
হয়তো, আমাকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে, বৈদিকভাবনার পচনে
যে 'সনাতনি' ব্রাহ্মনত্ব গড়ে উঠেছিলো,সেটার সাথে বাংলার সংস্কার আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্তসম্পর্কটা আলোচনা প্রয়োজন হবে।
শুধু আগাম বলে রাখিঃ
নরসিমহা রাও এবং মনমোহন সিংহ যেঁ দরজা খুলেছিলেন, শ্রী মোদি এবং
শ্রী অমিত সাহরা শেষ কাজটা করে দিলেন
----- দুধে এবং আম একাকার হয়ে গেলো। (ক্রমশঃ)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours