সীমন্তী দাস, লেখিকা, দুর্গাপুর:

আমাদের দোল উৎসবের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরষ্কার।

এবারে ৯ই মার্চ ২০২০
এবছরের  অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার কে পাচ্ছেন?
প্রাপকের নাম ঘোষণা করা হবে ঐদিনই উৎসব প্রাঙ্গনে।
২০০৩ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি দিশারী মুখোপাধ্যায়।
২০০৪ এই পুরস্কার পেয়েছেন কবি ব্রজকুমার সরকার।
২০০৫ সালে কবি সুশীল নাগ।
২০০৬ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন প্রয়াত কবি রজতশুভ্র গুপ্ত।
২০০৭ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি বিমান মাজি।
২০০৮ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি বিকাশ নায়ক।
২০০৯ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন প্রয়াত কবি শিখা সামন্ত।
২০১০ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়।
২০১১ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি সুবীর ঘোষ।
২০১২ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি পিনাকীরঞ্জন সামন্ত।
২০১৩ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি অমিত সরকার।
২০১৪ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি অচেনা অধিকারী।
২০১৫ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি স্নেহাশীষ মুখোপাধ্যায়।
 ২০১৬ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি জয়দেব বাউরী।
২০১৭ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৮ সালে অজিত মোহন গুহ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি গৌতম ভট্টাচার্য। ২০১৯ এ পুরস্কার পান কবি সুদীপ চক্রবর্তী। 
গৌতম ভট্টাচার্যর একটি কবিতা।

দোষ

এ কি শুধু একা তোমার কথা
গাছ মেঘ ধরে নেড়ে দিল আর
তোরঙ্গ খুলে বেড়িয়ে এল কমা,সেমিকোলন,পূর্ণচ্ছেদ
এমন তো নয়
দেওয়ালে কি আমার কথাও লেখা ছিল না ?

ডানায় রোদ্দুর মেখে যে পাখিরা ঘরে ফেরে
তাদের ছুঁয়ে দেখার, রোদ সাপটে নেবার ইচ্ছে শুধু তোমারই ছিল
আমার নয়? তোমার চোখের অমল কৈশোর কালো ভ্রমর হয়ে কৌটোয় রাখা ছিল,খুলেছি আমি, ঢাকনাও হারিয়েছি  আমি প্রবৃত্তির ব-দ্বীপে।

আসলে অবসর খুঁজে
সময় দিয়ে সময় গড়ে অসময়ের দিনলিপি এঁকে
ঘুমাতেই পারতে একা একা এক জীবন
অক্ষর কুড়াতে কুড়াতে শব্দের অভিমান বুঝে
তোমার পৃথিবীতে রাতের বাঁশি বাজিয়েছি
ঘুমাতে দিই নি তোমায় ছাপাখানার আর্তনাদে
তুমি তো দেখেছ ছড়ানো ছেটানো বর্ণমালা কেমন লেখা হয়ে উঠেছে
কালপুরুষের আদুল গায়ে, কারুকাজ তুলেছে সোনার ধুলোয়
এ শুধু তোমার কথা নয়
স্থির গাভীন সময় সব একাকীত্ব তোমার হাতেই দেয় নি
সব নৈঃশব্দ তোমার বিকেলে ভিড় করেনি
সব এলোমেলো হাওয়া তোমার বাগানের নয়
রুপোলি রোদ মায়া হরিণের মত
আমার আকাশ থেকে তোমার হাসনুহানা ছুঁয়ে চোখের হাসিতে মিশেছে

আজ যদি
রাতের বাঁশি বাউলের পথ আটকে দাঁড়ায়
বিপন্ন জীবন কথায়
দোষ তাতে আমারও কিছু কম নয়।

এই পুরষ্কার নিয়ে কবিদের মধ্যে বেশ আশা ও উৎসাহ চোখে পরে।নানা উপহারের সাথে একটা সুন্দর গাছ যেন এক অন‍্যমাত্রা যোগ করে।

অজিত মোহন গুহ পুরষ্কার নিয়ে যে এতো জল্পনা সেই মানুষটিকে একটু জানবেননা পাঠক?

বিশিষ্ট গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী শ্রী অজিত মোহন গুহ।১৯২৯ এ প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে দ্বারভাঙা থেকে কলকাতায় এসেছিলেন শ্রী গুহ। সোদপুরে এসে গান্ধীজীর সহায়ক শ্রী সতীশ দাশগুপ্তের সাথে সক্রিয় ভাবে ১৯৩০ সালে "লবন আন্দোলন" এ যোগ দেন।নানা সময়ে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন।
স্বাধীনতার ২৫বছর পুর্তিতে ভারত সরকার তাঁকে তাম্র পত্রে সম্মানিত করেন।
নানা জায়গায় ঘুরে তিনি শেষে অশোকনগরে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন।১৯৬৫ সাল নাগাদ।এই সময় অনুন্নত এই বর্ডার ঘেঁষা শহরের নানা জনকল্যাণ মুলক কাজে তিনি ছিলেন সক্রিয়।আদান্ত গান্ধীবাদী মানুষটি ছিলেন এই শহরের প্রাণপুরুষ।
সমাজসেবক ছাড়াও তিনি ছিলেন নাট‍্যপ্রেমী,সঙ্গীত অনুরাগী ও সাহিত্যপ্রেমী।সেকালের বিশিষ্ট নাট‍্য ব‍্যক্তিত্ব অহিন্দ্র চৌধুরী ছিলেন তাঁর বিশেষ বন্ধু।
অজিত মোহন গুহের যোগ্য সহধর্মিনী ছিলেন মৈত্রেয়ী দেবী।তাঁদের নয়জন সন্তান।প্রত‍্যেকেই বাবা মায়ের যোগ‍্য উত্তরসূরী।

শ্রী রনজিৎ গুহ,শ্রী অজিত মোহন গুহের সুযোগ‍্য সন্তান।তাই বাবার সম্মানার্থে তিনি এই পুরষ্কার চালু করেন।
১৩১৬সনের ৬ই ফাল্গুন শ্রী অজিত মোহন গুহের জন্ম।তাই রঙের উৎসবেই পিতৃ তর্পণ করেন শ্রী রণজিৎ গুহ। বাবার মতোই মানব প্রেমের পুজারী ছেলে বাবার জন্মদিনে সারা দুর্গাপুরবাসীকে উপহার দেন "আমাদের দোল উৎসব"।
এই প্রাণের উৎসব, সত্যিই যেন আজ দুর্গাপুরের সংস্কৃতির  প্রতীক।দেশ বিদেশের নানা গুণী মানুষের আসেন এই উৎসবে যোগ দিতে।

আজ তাই দুর্গাপুরের নিজস্ব উৎসব নিঃসন্দেহে "আমাদের দোল উৎসব"।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours