দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

২০১৬ সালের ৫মের কর্ম সমিতির এক রেজ্যুলেশনকে হাতিয়ার করে   আগাম সতর্ক ছাড়াই চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারী ভি বি ইউ ফা নামে এক অধ্যাপক সংগঠনের অফিস ঘর সিল করে দেয় বিশ্বভারতী। ওই শিক্ষক সংগঠনের মূল অভিযোগ, দীর্ঘ প্রায় চার বছর সেই নিয়ম বহির্ভূত রেজ্যুলেশন কেন কার্যকরী করা হল? তাঁদের দাবি, সাম্প্রতিক কালে স্বপন কুমার দাশগুপ্তের সি এ এ নিয়ে আলোচনা সভা ঘিরে ছাত্র আন্দোলনে তাদের উস্কানির সন্দেহে এই কোপ। যদিও, তারা জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলন ছিল স্বতস্ফূর্ত। তার শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বশংবদ হতে পারে নি মাত্র। বেনিয়ম দেখলে প্রতিবাদ করেছে মাত্র। তাই বাধ্য হয়ে কোলকাতা উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করে ওই সংগঠন। 

উপাচার্য সুশান্ত দত্ত গুপ্তের আমলে বিশ্বভারতী তে ২০১৪ সালে ৩১ জানুয়ারি একটি স্বতন্ত্র অধ্যাপক সংগঠনের জন্ম হয় নাম vbufa বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন। এর সিংহভাগ ছিলেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সভার সঙ্গে। ঐ বছরই এই সংগঠন অনুমোদন পায় aifucto অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনের সদস্য সংখ্যা একলাফে দুই শতাধিক হয়ে যায। ২০১৫ সালে   fedcuta  ফেডারেশন অফ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন এর অনুমোদন পায়। এমন কি বিশ্বভারতী পাল্টা অধ্যাপক সংগঠন অধ্যাপক সভার অনুমোদন তুলে নিয়ে ভিবিউফা কে সেই অনুমোদন দেয় fedcuta, বলে ভিবিইউফার দাবি।
বিশ্বভারতীর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের ২৪ জুন বিশ্বভারতী কর্ম সমিতি মিটিং করে সিদ্ধান্ত ঘোষনা করে যে বিশ্বভারতী অ্যাক্ট স্ট্যাটিউট অনুযায়ী একমাত্র প্রাক্তনী দের সংগঠন কে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। আর কোন সংগঠন কে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই ঐ দিন বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক সভা, কর্মী সভা, আধিকারিক সভা, এবং ভিবিউফা মত চার টি সংগঠন কে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক কর্মীদের জন্য ভলেন্টিরী সংগঠন বলে ঘোষনা করা হয়।

যেখানে বিশ্বভারতীতে অন্য সংগঠনের অফিস বহাল তবিয়তে, সেখানে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সংগঠন ভিবিউফা অফিস ঘর সীল করে দিল বিশ্বভারতী।বিশ্বভারতী কর্ম সচিব এর স্বাক্ষর করা  নোটিশ লাগিয়ে দিয়ে ১৫ জানুয়ারি আচমকা ভিবিউফা অফিস ঘর টি কাউকে না জানিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তালা লাগিয়ে সিল করে দিয়ে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। এই নিয়ে সংগঠনের অভিযোগ, ভিবিউফা কতৃপক্ষ কে কোন কিছু না জানিয়ে এই কাজ করছে বিশ্বভারতী।

যে রেজ্যুলেশন বলে বিশ্বভারতী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা উপাচার্য স্বপন দত্ত আমলের। ২০১৬ সালের ৯ এপ্রিল কর্ম সমিতির বৈঠক শেষে যে রেজুলেশন পাশ হয় তাতে ঘোষনা করা হয় সমস্ত অধ্যাপক দের একটি সংগঠনের ছাতার তলায় আসতে হবে। তাও আবার নির্দিষ্ট করে অধ্যাপক সভার অধীনে। ফলে ভিবিউফা অনুমোদন কেড়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকে আন্দোলন শুরু করে ভিবিউফা।

 বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কর্ম সমিতির মিটিং করে ঘোষনা করে ঘোষণা করা হয় ২০১৫ সালের কর্ম সমিতির সিদ্ধান্ত মতো, সব সংগঠন কে ভলেন্টিরী সংগঠন হিসাবে মান্যতা দেওয়া হয়। সেই মত বিশ্বভারতী আশ্রম এলাকায় অধ্যাপক সভা এবং ভিবিউফা, কর্মী সভা কে তাদের জন্য একটি করে অফিস ঘর বরাদ্দ করা হয়। আচমকা বুধবার সেই ঘরের দখল নেয় বিশ্বভারতী।

 এর আগে বিশ্বভারতী সূত্র মারফত জানা যায়,  বহুবার চাইলেও ঐ সংগঠনের সদস্য কত সেটাই দেখাতে পারেনি। তাই এটা সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তখন সংগঠনের তরফে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়, সদস্য সংখ্যা ৩০০ অধিক। তার তালিকা একাধিক বার দেওয়া হযেছে। আর যদি তা না থাকে তা হলে তাদের অনুমোদন দেওয়া হযেছে কেন?

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours