দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

আদালতের নির্দেশেই প্যারোলে মুক্ত অভিযুক্তের সাথে কনের চারহাত এক পর্ব সাঙ্গ হল মন্দিরে ! পাত্রীপক্ষ ও  বর পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে জেল হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত যুবক বর ও  অভিযোগকারিনী কনের চার হাত করে দিল পুরোহিত। পুলিশি ঘেরাটোপে বোলপুরের সতীপীঠ কংকালীতলা মন্দিরে বিয়ে হয় বন্দির।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুরের দ্বারন্দার বাসিন্দা স্বপন সর্দার৷ গত একবছর আগে  সেনাকর্মী হিসাবে বিএসএফের পাঞ্জাব রেজিমেন্টে যোগ দেয স্বপন ৷ চাকরীর আগেই গত চার বছর ধরে মহম্মদবাজার এলাকার এক আদিবাসী ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় স্বপনের৷ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি স্বপন ছুটি নিয়ে বাড়ি আসে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে। মেয়ে টিকে বোলপুরের একটি লজে ডেকে পাঠায়। অভিযোগ, সেখানেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করার। এদিকে চাকরি করা ছেলেকে অন্যত্র বিয়ে দেবার জন্য ছেলেটির বাবা মা আগেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। স্বপন তার প্রেমের কথা বাড়িতে জানালেও পরিবার মেনে নেয় নি। এই অবস্থায় স্বপন মেয়েটিকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।
এই ঘটনার পরেই ঐ মেয়েটি বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে স্বপন সর্দারের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে ৩৭৬, ৪১৭ ধারায় মামলা রুজু হয়। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে৷ আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতে নির্দেশ দেয।

এদিকে বেকাযদায় পরে  দুই পরিবারই আইনজীবীদের পরামর্শ নেয। বোলপুর আদালতে সরকারি আইনজীবী ফিরোজ পাল কে উভয় পক্ষই দুজনের বিয়ে দেবার কথা জানায়।  বিয়েতে রাজী হয় ছেলে ও মেয়ে৷ সেই মত আদালতে দুপক্ষই প্রস্তাব দেয়। এদিন আদালতে এই বিষযটি উঠলে আদালত বিয়ের অনুমতি দেয় শর্ত সাপেক্ষে। আদালত ছাড়পত্র দিলে ১ ঘন্টার প্যারলে পুলিশি ঘেরাটোপে এদিন বোলপুরের কংকালীতলা মন্দিরে বিয়ে হয় দুজনের৷ এক ঘন্টার মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। সেই মত বিবাহ হয়।

ছেলের বাবা ছবিললা সর্দার বলেন, "ছেলে চাকরি পাবার পর এই বিয়েতে রাজি হই নি। অন্যত্র বিয়ের ঠিক করছিলাম।কিন্তু আমাদের দুপক্ষের ঠিক করে আদালত কে আবেদন করি। আদালত অনুমতি দিয়েছে তাই বিয়ে হয়ে গেল।ছেলে ছাড়া পেলে বৌ ও ছেলে কে নিয়ে বাড়ি যাব।"

অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী বিশ্বনাথ সরকার বলেন, "দুই পরিবার ও পাত্র, পাত্রী বিয়েতে রাজী হয়। আদালতও বিষয়টি মেনে নেয়৷ সেই মত জেল হেফাজতে থেকেই এক ঘন্টার প্যারলে কঙ্কালী তলায় বিয়ে হয়।"পুলিশে নিরাপত্তায় এই বিয়ে দেখতে মন্দিরে ভিড় মানুষজনের। আগামী সোমবার মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য দুই পক্ষ আবেদন করবে বলে জানা গেছে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours