প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান:
একটা শরীরের রূপান্তর যখন প্রজননের সক্ষমতা লাভ করে, আসে মস্তিষ্ক থেকে গোনাডে সংকেত - বয়ঃসন্ধি। তবে কি কামনার সমুদ্রে প্রেমাবিষ্ট হয় উদ্যত ভালোবাসা! আকারে আধার রাত্রি বেলাভূমি থাকে না আর। কেবল আকার নয়, গঠনের সাথে পুরুষ নারী নির্বিশেষে অনুভূতিগুলিও বদলে যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এস্ট্রাডিওল হরমোন ও ইস্ট্রোজেন হরমোনের দ্বারা বৃদ্ধি নির্ধারিত হয়। ছেলের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাব বেড়ে যায়৷ বিলুপ্তির দীর্ঘশ্বাস মনে হলেও, লিঙ্গ আকর্ষণ প্রকৃতির নিয়ম। মনে করিয়ে দেয়....
"বিচ্ছেদেরি ছন্দ লয়ে
মিলন ওঠে নবীন হয়ে। "
তাই আগ্রহ যে থাকবেই অনুভূতির, এটা বলাই যায়। প্রেমানুভূতি জাগরণ অন্যায় নয়, পাপও নয়। দৈহিক সম্পর্ক তো ভিত্তি নয়, বুঝিয়ে দেওয়া যে নিরাপত্তার অভাব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনটা প্রয়োজন। প্রেম তো পাপাচার নয়, বরং স্বাভাবিক প্রক্রিয়া৷ শরীর আত্মশ্রুতি নয় যে "abused" করতে হবে! না বুঝে ছ্যুৎমার্গ বা লুকোচুরি তো আরো পথভ্রষ্ট করে৷ প্রয়োজনে যেন হৃদয় দিয়ে, শরীরের চাহিদা যেন বিপরীতে চালনা না করে ; আধ্যাত্মিক দিয়ে ধর্মীয় আচরণ দিয়ে শরীরের চাহিদাকে যতই চাপা দেওয়া হোক, আখেরে প্রেম তো প্রেমই। সবটুকুই হরমোনের কারসাজি। জ্ঞানদাসে আমরা পাই, অঙ্কুরে খেলার সাথী, তারপর বন্ধু৷ কৈশোরে প্রেম পাপড়ির উন্মোচন, উপলব্ধি গভীরে নাম, প্রেম। চেতনার প্রকাশ দেখেই তো শিল্প সাহিত্য বিকাশ।
আসি! সাহিত্য পরিক্রমায়। রবীন্দ্রনাথের "অতিথি " গল্প জুড়ে প্রেমের ভাব জাগ্রত হয়। চারুর শতেক রাগ, অনুরাগ, আবার উদবেগের ভালোবাসা । তারাপদকে দেখলে চারুর ঈর্ষা, এতো সবার৷ প্রেমের পরিচয় যে অভিমানে। কাঁদতে ভালো লাগে, তার বুকে আশ্রয় নেবো বলে। মনে হয়, এই বুঝি বুকে আগলে নেবে সে ; আর সোনামনির মতো যদি প্রিয় সখী এসে বলে, আত্মীয় হবে তার, তবে! অধিকার বোধ এসে বলে, আমার তুমি। অতি শৈশবের সখী তখন অনাদরের হয়ে যায়। প্রেমের মালা পড়িয়েছি যাকে, তাকে কি অন্য হাতে দিতে পারি! আর যখন তারাপদের হৃদয়ে বসন্ত স্পর্শ আসে, বিদ্যুতের স্পন্দন খেলে যায়, অপূর্ব চাঞ্চল্য আসে। এতো স্বপ্ন, বিয়ের আগেই তারাপদের বিশ্ব পৃথিবীর ডাক।
মনে পড়ে যায় মানকুমারী বসুর সুনীল আর নলিনীর কথা। ভালোবাসার এই আবেগ মূর্চ্ছনায় নলিনী বয়সে নবীন। সময়ের ব্যবধানে সে পরিণতি
ভাগ্যক্রমে বিবাহে পর্যবেসিত হয়। আসলে অদ্ভুত বলেই কি "oxymoron" হয়! আমরা যা জানি না তাই অদ্ভুত বলি৷ এরপর আসে প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের "প্রণয় পরিণাম"। মাণিকলালের প্রেম তো শারীরিক সৌন্দর্যে কুসুমকে অনুরক্ত করে। সিক্ত বাসনা কামার্ক তপ্ত কুসুমের উপর আসক্তি থেকে মানিকের কবিতা লেখা। তখনও কি পিতার বিরক্তির অত্যাচারে মাণিকও বলেছিল মনে মনে,
" কোথাও লুকালে তুমি,
আমায় কাঁদাবে বলে.. " ;
লঘুরসের এই প্রেমে আর্তি তো শরীরে ছিলো। অনুরাগের অনুরক্তির যে গভীরতা ছিলো না, তাই পরিণতিও মলিনতা পেলো।
মানুষ কি স্বপ্ন হৃদয়ে বেছে নেয় কিশোরী ছাপ!! তাই তো ভুলতে পারে না সত্যেন্দ্র, রাধারাণীর মুখ। শরৎ সাহিত্যে চরিত্র দ্বিধান্বিত হয়, বুক ফাটে কিন্তু মুখ ফোটে না৷ সত্যেন্দ্রের প্রেম এক নারীর জীবনকে নিখাদ সোনা করে গড়ে তোলে৷ বিকালের মেঘে বকুল নিবিড় টানে কিশোরী বাইজীর জীবন "বাইজী " শব্দের চিতাভস্মে শেষ হয়ে যায়। কি ছিলো সেদিন রূপের অন্তরালে!! পরিণতিতে প্রতিশোধের বাহানা! আচ্ছা ভালোবাসাকে ঘৃণা করা যায়!! স্তব্ধতা যে গুমরে ওঠা জীবনের স্বাদকোরকে তরঙ্গ বয়ে আনে, তাই কি প্রত্যাঘাত এসেছিল!!
এমন করেই ভোলা কি যায় "গায়ে হলুদ "। পুঁটির প্রেম ছুঁয়ে ছিলো অহংকার। কিন্তু সুবোধের প্রতি যে তার অনুরাগ সে তো সূর্যভাঙা আলোর নেশার মতো বাহ্যিক কালি কলমের আকর্ষণ। সে প্রেম বিনষ্ট হলো সুবোধ ফেল হলে। তবে নারী সত্ত্বার জাগরণকে জিতিয়ে দিলেন বিভূতিভূষণ। এরপর আসি " চুয়াচন্দন " গল্পে। এক ষোড়শীর প্রতি অনুরক্ত হয় প্রসিদ্ধ সওদাগরের রূপসাগরের পুত্র চন্দন দাস৷ চুয়া যে অবৈধ ভাবে মাধবের তন্ত্রে বাগদত্তা হয়ে যায়। চুয়ার শরীরে খেলা করবে বলেই তো মাধবের নেশা লাগে৷ কিন্তু চন্দন যে ভালোবেসেছে৷ অপরিণত কিন্তু চুয়া তো চন্দনের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতেই ঝাঁপ দিয়েছে অথৈ জলে। এই বয়স যে ঝুঁকি নিতে পারে, ভুললে চলবে না। আবার বনফুলের কলমে জৈবিক নিয়ম বেঁধে দেন।
এই পুলক, এই শারীরিক শিহরণ স্মৃতির কাঁথা। সৈনিকের মতো দেহে বাস করে। আসে আর উচাটনের গুলির আঘাতে নিহত নয়, মানুষ বদলে যায়। অনেক জায়গায় মানুষ প্রেমের বুকে রক্তে জাগা পুরানো সূর্যে ডুব দিয়ে স্ফীত জরার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু পরিণতি হয় বেদনার। তবে কি হয় যখন প্রেম হয় একতরফা!! মনে পড়ে যাচ্ছে "কণিকার প্রেম "। অগ্রাহ্যের ঘরে আচামকা মদনবাণে কণিকা। আর আবেগের ঘরে গণেশের আঘাত যেন মনস্তত্ত্বকে ফুটিয়ে তোলে সাবলীলতায়। তাই আঘাতের শিহরণে যে আলাপনের ব্যথা, তা যদি নাথ হয়ে প্রেমের মালা হয়, ক্ষতি কি!!
প্রতিভা বসুর " অনর্থক " গল্পে প্রেম তো মণি ও অশোকের প্রেম। তবে এখানে সমীরের প্রেম যেন ত্রিভুজ প্রেমে পরিহাস করে। কিন্তু নীরেন্দ্রনাথ মিত্রের "রাণু যদি না হতো ", তে রাণু যে ভাবে বেঁচে উঠেছে, তা যে বয়ঃসন্ধিকে স্যালুট করে। বর্তমানের বুকে বয়ঃসন্ধি বড়ো বেশি বিপন্ন৷ আবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আঁকলেন কুসি ও টাবুর শরীর সর্বস্বতা প্রেম। শরীরের জ্বালা আর পেটের জ্বালাকে একসাথে নেভায় পরিতৃপ্তির বয়ঃসন্ধি। নির্মল ভালোবাসার কাম গন্ধহীন টান ঘিরে অসামান্য প্রেম।
সুস্মিতা মৈত্রের " তোমার নইলে " গল্পটিও বয়ঃপ্রেমের গল্প৷ একটি কিশোর আকৃষ্ট হয়, অপূর্ব সুন্দরী রুণু মাসীর প্রতি৷ সুজনে শরীর জুড়িয়ে থাকে সম্পর্কে। পরিণতির শোকে রাণু মাসি ডাকে কিশোরকে। সেও যে আসে প্রেমের কাছে শূন্য হাতে নয়, পূর্ণ প্রাণে৷ জীবনের বিচিত্র সন্ধিক্ষণে আছে বয়ঃসন্ধি। বয়স জুড়ে থাকে পলাশের রঙ। তবে মানসিক বিকাশটাই বাধা পায় সময়ে। "Period of life from puberty to adulthood characterised by marked physiological changes, development of sexual feelings, efforts towards the construction of identity and a progression from concrete to alestract thought. "
প্রেম তুলাদণ্ডের পরিমাপ করে না। প্রেম হৃদয়ের অনুভব৷ আবেগ প্রয়োজন, কিন্তু আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নয়৷ কোনো বন্ধন নিরস্ত্র করতে পারে না এই প্রেম। তবে অনুভবের মূল্য বুঝে বিকাশের লগ্ন জুড়েই প্রেমের সার্থকতা।
একটা শরীরের রূপান্তর যখন প্রজননের সক্ষমতা লাভ করে, আসে মস্তিষ্ক থেকে গোনাডে সংকেত - বয়ঃসন্ধি। তবে কি কামনার সমুদ্রে প্রেমাবিষ্ট হয় উদ্যত ভালোবাসা! আকারে আধার রাত্রি বেলাভূমি থাকে না আর। কেবল আকার নয়, গঠনের সাথে পুরুষ নারী নির্বিশেষে অনুভূতিগুলিও বদলে যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এস্ট্রাডিওল হরমোন ও ইস্ট্রোজেন হরমোনের দ্বারা বৃদ্ধি নির্ধারিত হয়। ছেলের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাব বেড়ে যায়৷ বিলুপ্তির দীর্ঘশ্বাস মনে হলেও, লিঙ্গ আকর্ষণ প্রকৃতির নিয়ম। মনে করিয়ে দেয়....
"বিচ্ছেদেরি ছন্দ লয়ে
মিলন ওঠে নবীন হয়ে। "
তাই আগ্রহ যে থাকবেই অনুভূতির, এটা বলাই যায়। প্রেমানুভূতি জাগরণ অন্যায় নয়, পাপও নয়। দৈহিক সম্পর্ক তো ভিত্তি নয়, বুঝিয়ে দেওয়া যে নিরাপত্তার অভাব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বনটা প্রয়োজন। প্রেম তো পাপাচার নয়, বরং স্বাভাবিক প্রক্রিয়া৷ শরীর আত্মশ্রুতি নয় যে "abused" করতে হবে! না বুঝে ছ্যুৎমার্গ বা লুকোচুরি তো আরো পথভ্রষ্ট করে৷ প্রয়োজনে যেন হৃদয় দিয়ে, শরীরের চাহিদা যেন বিপরীতে চালনা না করে ; আধ্যাত্মিক দিয়ে ধর্মীয় আচরণ দিয়ে শরীরের চাহিদাকে যতই চাপা দেওয়া হোক, আখেরে প্রেম তো প্রেমই। সবটুকুই হরমোনের কারসাজি। জ্ঞানদাসে আমরা পাই, অঙ্কুরে খেলার সাথী, তারপর বন্ধু৷ কৈশোরে প্রেম পাপড়ির উন্মোচন, উপলব্ধি গভীরে নাম, প্রেম। চেতনার প্রকাশ দেখেই তো শিল্প সাহিত্য বিকাশ।
আসি! সাহিত্য পরিক্রমায়। রবীন্দ্রনাথের "অতিথি " গল্প জুড়ে প্রেমের ভাব জাগ্রত হয়। চারুর শতেক রাগ, অনুরাগ, আবার উদবেগের ভালোবাসা । তারাপদকে দেখলে চারুর ঈর্ষা, এতো সবার৷ প্রেমের পরিচয় যে অভিমানে। কাঁদতে ভালো লাগে, তার বুকে আশ্রয় নেবো বলে। মনে হয়, এই বুঝি বুকে আগলে নেবে সে ; আর সোনামনির মতো যদি প্রিয় সখী এসে বলে, আত্মীয় হবে তার, তবে! অধিকার বোধ এসে বলে, আমার তুমি। অতি শৈশবের সখী তখন অনাদরের হয়ে যায়। প্রেমের মালা পড়িয়েছি যাকে, তাকে কি অন্য হাতে দিতে পারি! আর যখন তারাপদের হৃদয়ে বসন্ত স্পর্শ আসে, বিদ্যুতের স্পন্দন খেলে যায়, অপূর্ব চাঞ্চল্য আসে। এতো স্বপ্ন, বিয়ের আগেই তারাপদের বিশ্ব পৃথিবীর ডাক।
মনে পড়ে যায় মানকুমারী বসুর সুনীল আর নলিনীর কথা। ভালোবাসার এই আবেগ মূর্চ্ছনায় নলিনী বয়সে নবীন। সময়ের ব্যবধানে সে পরিণতি
ভাগ্যক্রমে বিবাহে পর্যবেসিত হয়। আসলে অদ্ভুত বলেই কি "oxymoron" হয়! আমরা যা জানি না তাই অদ্ভুত বলি৷ এরপর আসে প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের "প্রণয় পরিণাম"। মাণিকলালের প্রেম তো শারীরিক সৌন্দর্যে কুসুমকে অনুরক্ত করে। সিক্ত বাসনা কামার্ক তপ্ত কুসুমের উপর আসক্তি থেকে মানিকের কবিতা লেখা। তখনও কি পিতার বিরক্তির অত্যাচারে মাণিকও বলেছিল মনে মনে,
" কোথাও লুকালে তুমি,
আমায় কাঁদাবে বলে.. " ;
লঘুরসের এই প্রেমে আর্তি তো শরীরে ছিলো। অনুরাগের অনুরক্তির যে গভীরতা ছিলো না, তাই পরিণতিও মলিনতা পেলো।
মানুষ কি স্বপ্ন হৃদয়ে বেছে নেয় কিশোরী ছাপ!! তাই তো ভুলতে পারে না সত্যেন্দ্র, রাধারাণীর মুখ। শরৎ সাহিত্যে চরিত্র দ্বিধান্বিত হয়, বুক ফাটে কিন্তু মুখ ফোটে না৷ সত্যেন্দ্রের প্রেম এক নারীর জীবনকে নিখাদ সোনা করে গড়ে তোলে৷ বিকালের মেঘে বকুল নিবিড় টানে কিশোরী বাইজীর জীবন "বাইজী " শব্দের চিতাভস্মে শেষ হয়ে যায়। কি ছিলো সেদিন রূপের অন্তরালে!! পরিণতিতে প্রতিশোধের বাহানা! আচ্ছা ভালোবাসাকে ঘৃণা করা যায়!! স্তব্ধতা যে গুমরে ওঠা জীবনের স্বাদকোরকে তরঙ্গ বয়ে আনে, তাই কি প্রত্যাঘাত এসেছিল!!
এমন করেই ভোলা কি যায় "গায়ে হলুদ "। পুঁটির প্রেম ছুঁয়ে ছিলো অহংকার। কিন্তু সুবোধের প্রতি যে তার অনুরাগ সে তো সূর্যভাঙা আলোর নেশার মতো বাহ্যিক কালি কলমের আকর্ষণ। সে প্রেম বিনষ্ট হলো সুবোধ ফেল হলে। তবে নারী সত্ত্বার জাগরণকে জিতিয়ে দিলেন বিভূতিভূষণ। এরপর আসি " চুয়াচন্দন " গল্পে। এক ষোড়শীর প্রতি অনুরক্ত হয় প্রসিদ্ধ সওদাগরের রূপসাগরের পুত্র চন্দন দাস৷ চুয়া যে অবৈধ ভাবে মাধবের তন্ত্রে বাগদত্তা হয়ে যায়। চুয়ার শরীরে খেলা করবে বলেই তো মাধবের নেশা লাগে৷ কিন্তু চন্দন যে ভালোবেসেছে৷ অপরিণত কিন্তু চুয়া তো চন্দনের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতেই ঝাঁপ দিয়েছে অথৈ জলে। এই বয়স যে ঝুঁকি নিতে পারে, ভুললে চলবে না। আবার বনফুলের কলমে জৈবিক নিয়ম বেঁধে দেন।
এই পুলক, এই শারীরিক শিহরণ স্মৃতির কাঁথা। সৈনিকের মতো দেহে বাস করে। আসে আর উচাটনের গুলির আঘাতে নিহত নয়, মানুষ বদলে যায়। অনেক জায়গায় মানুষ প্রেমের বুকে রক্তে জাগা পুরানো সূর্যে ডুব দিয়ে স্ফীত জরার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু পরিণতি হয় বেদনার। তবে কি হয় যখন প্রেম হয় একতরফা!! মনে পড়ে যাচ্ছে "কণিকার প্রেম "। অগ্রাহ্যের ঘরে আচামকা মদনবাণে কণিকা। আর আবেগের ঘরে গণেশের আঘাত যেন মনস্তত্ত্বকে ফুটিয়ে তোলে সাবলীলতায়। তাই আঘাতের শিহরণে যে আলাপনের ব্যথা, তা যদি নাথ হয়ে প্রেমের মালা হয়, ক্ষতি কি!!
প্রতিভা বসুর " অনর্থক " গল্পে প্রেম তো মণি ও অশোকের প্রেম। তবে এখানে সমীরের প্রেম যেন ত্রিভুজ প্রেমে পরিহাস করে। কিন্তু নীরেন্দ্রনাথ মিত্রের "রাণু যদি না হতো ", তে রাণু যে ভাবে বেঁচে উঠেছে, তা যে বয়ঃসন্ধিকে স্যালুট করে। বর্তমানের বুকে বয়ঃসন্ধি বড়ো বেশি বিপন্ন৷ আবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আঁকলেন কুসি ও টাবুর শরীর সর্বস্বতা প্রেম। শরীরের জ্বালা আর পেটের জ্বালাকে একসাথে নেভায় পরিতৃপ্তির বয়ঃসন্ধি। নির্মল ভালোবাসার কাম গন্ধহীন টান ঘিরে অসামান্য প্রেম।
সুস্মিতা মৈত্রের " তোমার নইলে " গল্পটিও বয়ঃপ্রেমের গল্প৷ একটি কিশোর আকৃষ্ট হয়, অপূর্ব সুন্দরী রুণু মাসীর প্রতি৷ সুজনে শরীর জুড়িয়ে থাকে সম্পর্কে। পরিণতির শোকে রাণু মাসি ডাকে কিশোরকে। সেও যে আসে প্রেমের কাছে শূন্য হাতে নয়, পূর্ণ প্রাণে৷ জীবনের বিচিত্র সন্ধিক্ষণে আছে বয়ঃসন্ধি। বয়স জুড়ে থাকে পলাশের রঙ। তবে মানসিক বিকাশটাই বাধা পায় সময়ে। "Period of life from puberty to adulthood characterised by marked physiological changes, development of sexual feelings, efforts towards the construction of identity and a progression from concrete to alestract thought. "
প্রেম তুলাদণ্ডের পরিমাপ করে না। প্রেম হৃদয়ের অনুভব৷ আবেগ প্রয়োজন, কিন্তু আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নয়৷ কোনো বন্ধন নিরস্ত্র করতে পারে না এই প্রেম। তবে অনুভবের মূল্য বুঝে বিকাশের লগ্ন জুড়েই প্রেমের সার্থকতা।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours