শেখ ফরিদ, প্রগতিশীল লেখক, বাংলাদেশঃ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান,  বলেছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান পাকিস্তান থেকে নির্বাচন করলে, বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন। পৃথিবীতে কোন নেতা অন্য কোন দেশের নেতা সম্পর্কে আজ পর্যন্ত এমন মন্তব্য করেছেন বলে আমার জানা নেই। যদিও পাকিস্তানের বিরোধী দল সংসদে বসেই অভিযোগ করে থাকে, যে, ইমরান খান ইলেক্টেড নয়, সিলেক্টেড প্রধানমন্ত্রী।  তা ছাড়া পাকিস্তানি জেনারেলদের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি ক্ষমতায় এসেছেন তা সারা পৃথিবীই জানে।

তার এক হালি বিয়ের, সর্বশেষ বিয়ের গল্পটাও হাস্যকর ও রহস্যজনক। তার বর্তমান বিবি বুশরার সাবেক স্বামী স্বপ্নে দেখেছিলেন,  ইমরান খানের কাছে তার স্ত্রীর বিয়ে দিতে হবে! স্বপ্নে দেখেছেন বুশরার স্বামী! আর তাতেই তার বিবি বুশরা ও অক্সফোর্ড পড়ুয়া, ক্রিকেটার, প্লেবয়  তেহরিক এ ইনসাফ পার্টির প্রধান ইমরান খান বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন! গল্পটায় কোথায় যেন কিছু লুকিয়ে আছে। কারো কারো অভিযোগ বুশরা বিবি আসলে আইএসআই এর এজেন্ট। যিনি প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে  শতভাগ  নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই এ বিয়ে স্বপ্ন নাটক। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর বিবি বুশরা "জ্বীন" পুষেন বলে জনশ্রুতি আছে। এ কথা কোন অজোপাঁড়া গাঁয়ের জাদু টোনা করা ভন্ড কবিরাজের বউয়ের কথা নয়। একজন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর কথা বলছি। সেই জ্বিন পোাষা বিবির স্বামীর নাম ইমরান খান এবং দেশটির নাম পাকিস্তান। সাল দুই হাজার বিশ। গল্পটা এক হাজার বছর আগের নয় কিন্তু!
বিবি নামের সেনা এজেন্টের হাতে বন্দী, এমন গল্পের নায়ক,  শিশুসূলভ অরাজনৈতিক বক্তব্য দিতেই পারেন। যে, আপনি (এরদোগান) আমার দেশে নির্বাচন করলে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন! তবে এটা বলেননি, এরোদগান নির্বাচন করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেও পাঁচ বছর টিকতে পারতেন কি না। কারন, পাকিস্তানের ইতিহাসে নির্বাচন করে কেউ তার মেয়াদকাল  পুরন  করতে পারেনি৷ ইমরান খানও পারবেন না। এরদোগানও  পারতেন না৷ পাকিস্তানের নির্বাচনের ইতিহাস তো আমাদের তাই বলে। পাকিস্তানীরা অদ্ভুত জাতি। বাঙালিদের উপর প্রভূত্ব  করতে চেয়েছিলো। তাই বঙ্গবন্ধু নির্বাচনে বিজয়ী হলেও তাকে ক্ষমতা দিতে চায়নি। শ্রেফ বাঙালি বলে।  আবার তুর্কীদের বিপুল ভোটে জিতিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাতে চায়। একটি হিপোক্রেট ও দেওলিয়া জাতির উজ্জল দৃষ্টান্ত পাকিস্তান। তা ইমরান খানের  কথা ও কাজে আবার প্রমান হচ্ছে। এই পাকিস্তানীদের চোখেই আবার আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাহিনীর আমীর, ওসামা  বিন লাদেন নাকি হিরো! এমন দাবি খোদ পাকিস্তানি নেতারাই করে থাকে।

পাকিস্তানি বিজ্ঞানী পারভেজ হুদভাই একজন বিজ্ঞান মনস্ক,  সেকুলার মানুষ। বিজ্ঞানের অধ্যাপক, রাজনৈতিক বিশ্লেষকও। তিনি পাকিস্তানের দ্বিজাতিতত্ত্ব ভুল মনে করেন। তিনি মনে করেন, যে কোন রাষ্ট্রর সেকুলার থাকা উচিত। বিজ্ঞান শিক্ষায় জাতিসমূহকে এগিয়ে নেয়ার পক্ষে কথা বলেন। তিনি নারী শিক্ষা ও নারীর স্বাধীনতার কথা বলেন। তিনি মনে করেন পাকিস্তান থেকে  ভারত শিক্ষায় ও বিজ্ঞানে  অনেক এগিয়ে৷ এমন কি তিনি মনে করেন, ৭১ পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া অনেক পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশটিও এখন পাকিস্তান থেকে  বহু বিষয়ে এগিয়ে। যা আমরা এর আগেও পাকিস্তান টিভিতে পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবীদেরকে বলতে  শুনেছি।  "খুদা কে ওয়াস্তে হামে বাংলাদেশ বানা দো"।

সম্ভবত পাকিস্তান টিভি ও পাকিস্তানি কট্টর পন্থীদের চোখে পারভেজ  হুদ ভাই এর বক্তব্য হজম হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। একজন পাকিস্তানীর মুখে ভারত ও বাংলাদেশের  প্রশংসা।  এতে পাকিস্তানিরা,অনেকেই লজ্জা পাচ্ছে। নিজেদের পরাজয় মনে করছে।  যদিও তাদের উচিত ছিলো এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। তা তারা করছে না। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়া পাকিস্তানের ইতিহাসে ছিলো না , আজো নেই।  আর তাই তাদেরই  বিজ্ঞানী পারভেজ হুদ ভাইকে,  গাদ্দার, পাকিস্তানের শত্রু,  জাল সনদধারী অধ্যাপক প্রভৃতি নিন্দা সূচক শব্দে ভাসিয়ে দিচ্ছে। কেবল এখানেই শেষ নয়। পাকিস্তান টিভিতে দেখা যাচ্ছে; পাকিস্তানের শেষ অস্ত্র," ইসলামের  শত্রু " বলে ঘোষনা করছে  পাকিস্তানি অধ্যাপক পারভেজ হুদ ভাইকে।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours