ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

অনেকক্ষন নিরব  থেকে  তারাপ্রসন্ন  বললেন," ঠিক  আছে  মিশিরজীকে  বরং পাঠিয়ে  দেবো! তোর  বাড়ীর  সামনে পাহারা  দেবে!"
     "না এটাও  মানতে  পারছি  না! আমি  পুত্র সন্তান  হয়ে  জন্মাইনি! আমি 'আত্মদীপ' হতে পারি  নি ! এটাই  কি  আমার  অপরাধ? আমি  একাই  থাকবো জ্যেঠু ! আপনি  বরং  ঁমা আনন্দময়ীর  মন্দিরের  ভিতরে  দেওয়ালে  কীলক  থেকে  যে  খাঁড়াখানা ঝুলছে   মিশিরজীকে  দিয়ে  প্রকাশ্য  দিবালোকে  পাঠিয়ে  দেবেন! সবাই জানুক  - গভীর  রাতে  অনধিকারী  অন্যায়ভাবে  এ  ভিটেয়  মাথা  গলালে  তাকে  খড়গধারিনীর  সন্মুখীন  হতে  হবে!
          তারাপ্রসন্নের  বাক্যস্ফুর্তি  হ'ল না! তাঁর  মনে  পড়ে  গেল  ভারতচন্দ্রের  একটি  অনবদ্য পংক্তি "এ তো  মেয়ে  নায়  দেবতা  নিশ্চয়!"
          না - হটীকে  একা  ভিটেতে রাত্রি বাস  করতে  হয় নি! সেদিন  সন্ধ্যাতেই  রূপেন্দ্রর২ ভিটেতে  হাজির  হলেন ' একমুঠি বাবা '! তিনি  মুক্তপুরুষ! সামাজিক  বিধানের  ঊর্ধে ! সমাজপতিদের  অঙ্গুলীলেহনকে  ভ্রুক্ষেপ  করেন না!তাঁর  বিচিত্র  আধা-হিন্দি,আধা- বাংলায়  যা বললেন তা  সদ্য  শ্বশুরালয়ে  নবাগতা  নববধূর  অনুকরনে -" আমারে  টুক  শুতে  দিবি  নাতবৌ? আমার  শুবার  কুনু  ঠাঁই  নাই!"
         একমুঠিবাবা  বৃদ্ধ  বয়সে  তাঁর জীবনযাত্রার  ছকটাই  পালটে  ফেললেন !তেল -সিঁদুর  মাখা বাঁধানো বটগাছতলার সাবেক  ডেরাটা  গুটিয়ে  ফেলে  কম্বল  বিছালেন  একবগ্গা  ঠাকুরের  ঘরের  দাওয়ায়! তিনি  সিদ্ধান্ত  নিলেন - দৈনিক একমুঠি  ভিক্ষাও আর  চাইবেন না কারো  কাছে!শেষ  বয়সে  চাকরী  করবেন  ! পাহারাদারের  চাকরী!পারিশ্রমিক  দিনান্ত  একবার একমুঠো  চালের  হবিষান্ন!
        খড়্গটি ঁআনন্দময়ী  মায়ের  মন্দির  থেকে  আর  আনতে  হয়নি!একমুঠি  বাবার  চিমটাটাই  যথেষ্ট! আর  তাছাড়া  শিউজীর  ত্রিশূলটা তো  আছেই.....(চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours