রিয়া ভট্টাচার্য, লেখিকা, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর:

মনুষ্যজন্ম..... এক অন্তহীন খোঁজের ঠিকানা। রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে, সকল বিপদ তুচ্ছ করে মানুষ খুঁজে চলে, নব আবিষ্কার - স্বচ্ছল জীবন কিছুই তাকে বাঁধতে পারেনা পুরোপুরি।

একটি শিশু জন্মিয়ে আগে বাতাস খোঁজে, খোঁজে আলো। নিরন্তর অন্ধকারের সঙ্গে জীবনধারণের যুদ্ধ শেষে যখন পৃথিবীতে তার প্রথম পদচিহ্ন আঁকে সে, নতুন দুনিয়ার বর্ণ - শব্দে বিভ্রান্ত হয়ে কঁকিয়ে কেঁদে ওঠে৷ এরপরেই শুরু হয় তার নিরন্তর খোঁজের পালা, নতুন নতুন আশ্চর্য আবিষ্কার করতে করতে ধীরে ধীরে পরিনত হয়ে ওঠার পালা।

ভাগ্য কখনই ঈশ্বরদত্ত নয়। যদি তা হত, তবে চারিদিকে এত ব্যর্থতা - অনুযোগ - অসন্তোষ বা আত্মহননের পালা চলত না৷ বরং সবকটাকেই ঈশ্বরের দান হিসাবে মেনে নিয়ে মানুষ সুখে শান্তিতে বাস করত, এত দ্বেষ - হিংসার মেঘে ঢেকে যেত না পৃথিবী।

প্রতিটি মানুষ সুখী হতে চায়। নিজের প্রিয় মানুষের চোখে দেখতে চায় স্বীয় প্রতিচ্ছবি৷ তাই সে নিরন্তর খুঁজে বেড়ায় সেই একটি মানুষ যার সামনে আপন হতে নুয়ে আসে মাথা, যার চোখে চোখ পড়লে থমকে যায় সময়৷ প্রকৃত আত্মার আত্মীয় খুঁজে পাওয়া বড়ই কষ্টসাধ্য, একজীবনে অনেকেই খুঁজে পায়না তার প্রকৃত মনের মানুষটিকে৷ কারণ সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বদলায় তার চাহিদা, ভালোবাসার সংজ্ঞা। তাই সে খুঁজে চলে মানুষের মিছিলে, প্রকৃত ভালোবাসার সন্ধানে পাড়ি দেয় যোজন পথ৷ কখনো ঠকে, আহত হয়, বুক চেপে গুঙিয়ে ওঠে মনভাঙানিয়া যন্ত্রণায়.... তারপর আবার খুঁজে ফেরে, যতদিন না তার মন শান্ত হয়ে যায়, হতোদ্যম হয়ে পড়ে।

বিধাতা আমাদের ভাগ্য লেখেন কথাটা বড়োই আপেক্ষিক। আদপে দুর্বল মানুষ অলৌকিক শক্তির হাতে অদেখা ভবিষ্যৎ সঁপে শান্তি পায়। যদি বিধাতাই আমাদের ভাগ্য লিখতেন তবে কোনো মায়ের কোল অকালে শূন্য হত না।
হা রে মনুষ্য জনম!


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours