নাজমীন মর্তুজা, লেখক ও গবেষক, অ্যাডিলেট, অস্ট্রেলিয়া:

আমার নি:শ্বাসের বায়ু এসে দাবী করে মানুষ বাতাসের তৈরি
অতএব সাধনা করো দমের .....
মস্ত একটা টান দিয়ে ব্রহ্মান্ডের সমস্ত বাতাস নিজের মধ্যে ধারণ করলেও ... দমের বেলুন হার মানেন মৃত্যুর কাছে ....
“হায় রে মানুষ ... রঙিন ফানুস দম ফুরাইলেই ঠুস! “
আবার -
“গোপনে রয়েছে খোদা তারে চেন নি
কাম গোপন প্রেম গোপন লীলা নিত্য গোপন,
দেহেতে তোর মক্কা গোপন
তাও হইল জানাজানি।।
আদমে আহাদ গোপন
মিমে দেখ তার নূর গোপন,
নামাজে হয় মারফত গোপন
তাও আবার জান নি।।
আছে আরশ – কুরছি লহুকালাম গোপন
তাই বলে ফকির লালন,
উপরে আল্লাহ গোপন
পীরের নিশানি।”
গানের বাণী লালনের -লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘বাউল-সম্রাট’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে ।
বাউল গানগুলো মূলত মানবতাবাদি জীবন দর্শন ।
“লালন” যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তাঁর গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,কাজী নজরুল, ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে।
“বাউলের জন্ম দ্রোহ থেকে। তার সাধনা প্রচলিত শাস্ত্র ও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মকে অগ্রাহ্য-অস্বীকারের স্পর্ধার প্রতীক। তার দর্শন বর্ণশোষণ ও জাতপাতের বিরুদ্ধে ‘মানুষসত্যে’র উদার মানবিকতার দর্শন। তার গান রূপক-প্রতীকের আড়ালে প্রবল প্রতিবাদের গান- প্রচলিত আচার-প্রথা-বিশ্বাসকে চূর্ণ করা নবজীবনের গান। বিশ্বাসের বদলে যুক্তি, প্রথার শাসন থেকে মুক্তি, সংস্কার-আচারকে মুক্তবুদ্ধি দিয়ে প্রতিস্থাপন- বাউলের জীবনচেতনার মূল কথা। শুভবুদ্ধি ও কল্যাণচেতনায় অভিষিক্ত হয়ে প্রথা-শাস্ত্র-ধর্মকে আঘাত করার সামাজিক শক্তি অর্জনের প্রয়াসী সে। লালনে এই বাউলচেতনার পূর্ণ প্রকাশ লক্ষ করা যায়। তাই বাউলসাধনার উৎস ও ধারা বিশ্লেষণ করে লালনকে মরমী ও দ্রোহী- এই দুই পরিপূরক চেতনার সমন্বিত রূপ-বৈশিষ্ট্যের আলোকে চিনতে পারলেই তাঁর স্বরূপ স্পষ্ট হয়ে ধরা দেবে- তাঁর বক্তব্যের তাৎপর্য আবিষ্কৃত হবে- জীবন ও সমাজসত্যের” আবুল আহসান চৌধুরীর লেখা থেকে বেশ ভালো করে বিশ্লেষন করেছেন লালনের সাধনার
লালনের গানে এই মানবদেহ কখনো ‘ঘর’, কখনো ‘খাঁচা’, ‘নৌকা’, আবার কখনো বা ‘আরশিনগর’ নামে চিহ্নিত। সময় বুঝে বাঁধাল বাঁধলে না।
“জল শুকাবে মীন পালাবে পস্তাবি রে মন-কানা
মাস-অন্তে মহাযোগ হয়
নীরস হতে রস ভেসে যায়
করিয়ে সে যোগের নির্ণয়
মীনরূপে খেল্ দেখলে না “

যৌন-সম্ভোগ নয়, যৌন-সংযম ও কাম-নিয়ন্ত্রণই বাউলের মোক্ষের সঠিক পথ। ‘কামলোভী মনে’র ‘মদনরাজার গাঁটরি-টানা’ই যাতে সার না হয়, লালন তাই হদিশ দিচ্ছেন সঠিক পথের
রিপুকে জয় করে ‘কামের ঘরে কপাট’ না মারলে সাধন-ভজনের সকল আয়োজনই বৃথা। লালন তাই কামলোভী ভণ্ড সাধকের কৃত্রিম ভজনাকে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘প্রেম জানে না প্রেমের হাটের বুলবুলা’, কেন না ‘তাঁর মন মেতেছে মদনরসে, সদায় থাকে সেই।'
এই সব গানের বাণী শুনলে  কেমন যেন একটা নিজের ভেতরের শূন্যতা মাঝে মাঝে বুঝতে না পারার অপূর্ণতা অপারগতা ,অনুভব হয় , ঠিক  তখন মনে হয়-
“ মন হাওয়ায় পেয়েছি তোর নাম ...
হাওয়ায় হারিয়ে ফেললাম ......”
“যেদিন থেকে পৃথিবী যৌনতাকে লুকাতে শুরু করেছে সেদিন থেকেই আমাদের দুর্ভাগ্য শুরু । আমরা জীবনের সবচেয়ে প্রতিদিন যে বিষয়টি লুকাই বা গোপন করি তা হচ্ছে আমাদের যৌনতা বা যৌনচিন্তা । এই লুকানো বা গোপনের কারনে আমরা অনেক মানসিক বৈকল্যের শিকার । আপনি ভাবতেই পারবেন না । আপনার পরিচিত ভদ্রলোকটির যৌন আচরন কেমন । আমরা সদাই দেখে থাকি - ভদ্র লোকের বাড়ী থেকে বহু স্ত্রী বিবাহের পরের দিন পালিয়ে গেছে । কারন রাতে যার চেহারা দেখেছে তা অচেনা ভিতিকর ! কেউ কেউ শুধু গোপনে সয়ে যায় । কেইস স্টাডি থেকে জানা যায় - ভদ্র লোক যৌন কার্যের সময় স্ত্রীর স্তন কামড়িয়ে ছিড়ে ফেলেছে । বা এমন ভাবে যৌনকাজ করতে আসে যেন লিঙ্গ দিয়ে এখনি যৌনাঙ্গ এফোঁড় ওফোঁড় করে ফেলবে । কেউ কেউ যৌন কাজ করতে এসে বীর্যপাত ঘটে যায় আর সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ে ।
কতো গুরুত্বপুর্ন জীবনাচার- আমরা লুকালুকির  মাঝে  রাখি ।
ঠিক তেমনটা ধর্মের মধ্যেও কি তা কম আছে । সেটা ইসলাম বলুন আর হিন্দু বলুন আর বৌদ্ধ , খৃষ্টান ! উপরের গানের বাণী গুলো লালনের , এখানে আছে প্রেমানুভুতি এবং স্থিরতা । যৌনাচার নয় । যুগল বন্ধন । ব্রহ্ম রস থেকে সোমরস । আর এ আপনার এই বিরিয়ানী  বা মোগলাই ডিশ  নয় যা থেকে কাম বীর্য বা উত্তেজক রসের যন্ত্রনায় আপনি নারী দেখলেই ঝাপিয়ে পড়বেন।“
লালন অনুসারিদের খাদ্য অভ্যাস ভিন্ন । যে চারচন্দ্র খাওয়ার কথা বললেন তা আপনি যদি তা আপনার বিরিয়ানি খাওয়ার মল মনে করেন তাহলে ভুল হবে । শিশুর মল দেখেছেন ,প্রস্রাব দেখেছেন - তা দেখে কি ঘেন্না লাগে । খাদ্যের উপর নির্ভর করে আপনার মল কি রকম হবে । কি গন্ধ হবে । “গ্রামে প্রায় হুজুরের দেখবেন দুই তিনটে করে বউ আছে । আর মাদ্রাসা শিক্ষকের হাতে , কিংবা পুরোহিত , ফাদারদের হাতে তো ছেলেমেয়ে কেউ নিরাপদ নয় । কিন্তু লালন অনুসারী বা বাউল কতৃক কেউ ধর্ষন বা ধর্ষিত হয়েছে এমন খবর কখনও শোনা যায়নি । তাই গ্রাম বাংলায় ঘরের নারীরা তার দুখের কথা বাউল বৈষ্ণবকে বলতো।"

এই চরিত্রটাই বড় আদরের ছিল বড় মায়ার । তার দিকে দেখলেই চোখ উদাস হয়ে যায় । এ পথের মানুষগুলোর চাহনী সবসময় অনেক দূরে।

এখন সাঁই যদি মানবের কল্যান ভাবে তো এই সমস্যা নিয়ে তিনি ভাববেন না । একটা সমাজের যৌন ভাবনা মানে সমাজের কল্যান বা ধ্বংস সেখানেই নিহিত । অর্থনৈতিক সাম্যের আগে যৌনতার ন্যাযতা তৈরি হওয়া উচিত ।বর্তমান সমাজের যে মানস তার প্রশ্রয়েই ব্যাক্তি পুরুষ তার আয় রোজগারের জন্যই যতো অশান্তি করে । তার টাকার যোগ্যতার উপর নির্ভর করে যৌন অধিকার । তার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে যৌনতার যথেচ্ছাচার।
তাই লালননীয় যৌন জীবন মানুষকে দেয় ভিন্ন জীবন বা সুন্দর সমাজের স্বপ্ন।

“যৌনতা নিয়ে ইসলামের ঔদার্য যেদিন অনুভব আসলো বিস্ময়ে হতবাক !
যারা কট্টর , খালি ধর্ম ধর্ম করে- তাদের একজনকে বলেছিলাম- আচ্ছা মদীনায় হিজরেতর পর আনসার আর মুহাজিরদের মাঝে কি হয়েছিল জানেন?
না সূচক বলতেই ঘটনাটা জানালাম।
আনসারদের অনেকের একাধিক  স্ত্রী ছিল। অথচ মুহাজির রা রাত কাটাত একা। তখন তিনি বললেন তোমরা নিজেদের পছন্দের এক বা দুজনকে রেখে বাকীদের তোমাদের ভাইদের দিয়ে দাও।
উনি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে জিভ কেটে না না বলতে থাকলেন।
মুচকি হেসে বললাম - নারীরা শস্যক্ষেত্র স্বরুপ সেখানে যথেষ্ছা গমন কর এই আয়াতটা কোরআনে আছে তাতো মানেন।
মাথা ঝাকালেন।
এর শানে নুযুল আয়াত অবতীর্ন হবার কার্যকারণ টা জানেন?
আবারো নেতিবাচক মাথা ঝাকালেন।
বললাম দয়া করে বাসায় যান। বাংলা অনুবাদ তাফসির প্রচুর পাওয়া যায়। পড়ুন। অনুভব করুন। দেখবেন অনেক কিছু সহজ।”

সেই সহজিয়াকেই খুঁজে পাই গুরু লালনের জ্ঞানেও।
বিস্ময়কর গভীর জ্ঞানী মহাজনের করকমলে বিনম্র শ্রদ্ধা।

শুধু বীর্জপাতেই যৌনতার সমাপ্তি নয় যৌনতার সঙ্গা অনেক বিস্তৃত । শুধু কামভোগ নয় কামনার চোখে তাকানোও যৌনতার পর্যায়ে পরে, আধুনিক জগতের সকল প্রকার আইন সে কথাই বলে । যৌনতার আরাধনার মাধ্যমে নিজের শুদ্ধি না খুঁজে যৌনতার ঝুঁকি হতে দুরে থেকে নির্মোহ সাধনাই অধিক পরিমানে বুদ্ধি প্রসুত বলে মনে হয় ।
যাহোক, বাউল সাধনায় যৌনতার আলোচনায় লালন ফকিরের নাম আসতেই পারে । তবে লালন উন্নতমানের একজন সাধক, গায়ক ও কবি হিসেবে সুধী সমাজে অনেক আগেই বিশাল মর্যাদা লাভ করেছেন।
ব্যপকভাবেই বলা হয়ে থাকে লালন ও তার শিষ্য বাউলরা দেহতত্ত্বে বিশ্বাসী। লালনের বাউল গানের কথার মর্ম ভেদ করা সকল শ্রোতার পক্ষ সম্ভব নয়। এটা পারে কেবল দীক্ষিত শিষ্যরা। বাউলদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোক আছে। কিন্তু এরা জনপ্রিয় শাস্ত্রীয় ধর্ম কতটুকু গভীরভাবে মানেন তা নিয়ি নানা  জনে রয়েছে মতভিন্নতা ।

লালনের গানে আকর্ষণ আছে তবে তার সাধনার ক্ষেত্র হচ্ছে দেহতত্ত্ব। লালনের সাধনা দেহবর্জিতও নয়। এই সাধনা নারীবর্জিতও নয় অথচ সন্তানবর্জিত যা নিয়েই মুলত সামাজিক মানুষের মনে সন্দেহ ও অশ্রদ্ধা । বাউলরা সমাজে থাকে না, এদের সম্পত্তি থাকে না, দিনভর গান গেয়ে বেড়ায়। রাত্রে আখড়ায় মিলিত হয়। এই সাধনায় নারী হচ্ছে সাধন সঙ্গিণী। সে তুলনায় মুসলিম সুফিদের সাধনা নারীবর্জিত।
খোদা প্রেমই হলো সুফিদের আসল কথা।
লালনীয় বাউলরা মানবিকবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়েছেন কামসাধনার পথ, লালনের গানে আছেঃ-
“ করি কেমনে শুদ্ধ প্রেম রসের সাধন
প্রেম সাধিতে কেঁপে ওঠে কাম নদীর তুফান…।
বলবো কী হইলো প্রেমের কথা
কাম হইলো প্রেমের লতা
কাম ছাড়া প্রেম যথা, তথা নাইরে আগমন।”
তবে এই মানুষে সেই মানুষকে দেখার কথা বলে বাউলগন দেহের ভিতর দেহাতীতের সন্ধান করেন নরনারীর যুগল সাধনার মাধ্যমে যার নমুনা মনে হয় এই জিজ্ঞাসার উত্তর তারা খোঁজেন কাম সাধনায়। এই কারণে বাউলরা জোড়ার জোড়ার থাকেন। বাউল সাধনা একাকী পুরুষের বা একাকী নারীর সাধনা নয়, সেখানে আছে‘সাধনসঙ্গিণী’ ‘প্রেমভজা’ প্রভৃতি কাম আরাধনা । সেটা ফলববতি হোক কিংবা নিষ্ফল হোক তা কোন বিষয় না ।
সুফি সাধন মার্গের তিনটি স্তর আছে যথা শরিয়ত, তরিকত ও হাকিকত। সুফিদের রাস্তায় হাঁটতে হলে প্রথমেই ইসলামী শরিয়তের পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করতে হয়। দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে তরিকত- সুফি সাধনার বিশেষ ধারা। সুফিরা নানা অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে, নানা মঞ্জিল অতিক্রম করেন, হাকিকত যার মাধ্যমে আল্লাহর দর্শনে সমাপ্তি ঘটে। এই দর্শনকে বস্তুজগতের অভিজ্ঞতা দিয়ে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। সুফিরা তখন নিরবে আল্লাহর জিকির করেন, আল্লাহর সিফাত বা গুণাবলী নিজেদের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করে উন্নত মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেন। সুফি সাধনার সাথে তাই বাউল সাধনার বেশ বড় একটা মৌলিক পার্থক্য দেখা যায় ।
। বাউল সাধন পদ্ধতিতে যে যৌন মনের প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই যতই হোক না তা নিয়ন্ত্রিত , নাইবা থাকল তরল কামরসে সিক্ত , সে তুলনায় সুফি সাধনায় এসব কল্পনাই করা যায় না।

অনেকেই বলে থাকেন বাউল মতাদর্শ একটা প্রবল জনপ্রিয় ও বিপ্লবী বিষয় যার বন্যায় অবগাহন করে বাংলাদেশের মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তির আস্বাদ পেয়েছে। কিন্তু বাউল দর্শনের মধ্যে মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক-আধ্যাত্মিক মুক্তির কথা তেমন করে কি কিছু উঠে এসেছে ?
এর মধ্যে নেই মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা মোকাবেলা করার কথা। জীবনের সর্ব বিষয়ের সাথে অসম্পৃক্ত এরকম দর্শন নিয়ে মানুষ বাঁচতে পারে না।
লোক-সংস্কৃতি সব দেশেই থাকে। কিন্তু সে দেশের সংস্কৃতি বলতে কেবল লোক-সংস্কৃতিকে বোঝায় না। তার চেয়ে উঁচু স্তরের সংস্কৃতিও একটা থাকে। সেই সংস্কৃতি দেশের মানুষের মননশীলতার প্রতীক।
লালন কে নানা ধরনের মতোবিরোধ আছে
ধর্মীয় পন্ডিত গণ মনে করেন যে -
 মানুষ কোন যৌনতার মননশিলতায়  বিশ্বাসি নয় । লোক-সংস্কৃতি লোকরঞ্জণের অনুপম উৎস। লালনের গান লোকরঞ্জণকারী হিসেবে বহুদিন বেঁচে থাকবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। একে লালন করতে আমাদের কোন অসুবিধা নেই , তবে একে আমাদের বৃহত্তর মুসলিম সমাজে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিকসিত হতে দিলে একটি বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে । এটা নিয়ে নিকট অতীতে বেশ বড় সর সমস্যা নারা চারা দিয়ে উঠতে দেখা গেছে ,কুষ্ঠিয়া ও ঢাকায় লালনের ভাস্কর্য স্থাপন সংক্রান্ত বিষয় উল্লেখ যোগ্য ।

যাহোক ,বাংলাদেশের জনমানসে লোক-সংস্কৃতির যে জায়গা আছে সেটা সব সময় থাকবে। সেই জায়গায় লালনের স্থান, ।
আর ইসলামের মুল জায়গায় ইসলাম থাকবে, যে যার মত অনুসরন করবে এর মধ্যে যৌনতার বিষয় অবতারনা করে কোন ফ্যাসাদ কাম্য নয় । লালনের কথা দয়াল পার কর আমারে, আর ইসলামের মুল কথা সুন্দর নির্ভেজাল সমালোচনাহীন পরিশুদ্ধ সামাজিক জীবন যাপন করে আল্লার কাছে বল মাফ কর আমারে।

সচেতন মানুষেরা বুঝে নিক মানবতার মুক্তি ও খোদাপ্রেমের সর্বোত্তম উপায় কোনটি , কথা হল খাটাও মাথা নিজ নিজ বুদ্ধি বিবেক ও বিধাতা প্রদত্ত জ্ঞান প্রয়োগ করে ।
“কার বা আমি কে বা আর
আসল বস্তু ঠিক নাহি তার
বৈদিক মেঘে ঘোর অন্ধকার
উদয় হয় না দিনমণি “
..........লালন

তথ্য সুত্র:- লালনের গান শুনে ও বই পড়ে , এবং লালনের গান সম্পর্কীয় বিভীন্ন গবেষকের বই , এবং ফিচার পড়ে । কিছু তথ্য নেট ফিচার থেকে নেয়া ।
কিছু নাম উল্লেখ করতে অপারগতা স্বীকার করছি , কারণ আমার সেইভ করে রাখা নোটে নাম ছিল না , বহুদিন পর লেখা ঘেটে লেখাটা একসাথে করেছি , তবে কোট আনকোট করে দিয়েছি।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

2 comments so far,Add yours

  1. নাজনীন মুরতজার লেখা পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। লালন আমার সাধনার অংশ। যদিও লালন সাগরে আমি একটা কণা মাত্র। আপনার লেখা পড়ে মুগ্ধ হলাম। শিখলাম।

    ReplyDelete