তিজলহাটি গ্রাম! সোঁয়াই গ্রাম থেকে তিন ক্রোশ দুরে দামোদর নদের তীরে গ্রামটি খুব বড় না হলেও ছোটও নয়! গ্রামে কায়স্হদের আধিক্য ! গ্রামের জমিদারও কায়স্হ, পাঁচ সাত ঘর রাঢ়ীশ্রেনীর ব্রাক্ষ্মন পরিবারের বাস! (এই গ্রামটি সমভবতঃ বর্তমান গলসী থানার অন্তর্গত, গ্রামের নামটি পরিবর্তিত হয়েছে)! এঁদের মধ্যে ঘোষালরা ধনী ও সম্পন্ন পরিবার! প্রচুর জমি জমা পুকুর বাগান থাকলেও আর্থিক কৌলিন্যের অন্যতম কারন লবনের একচেটিয়া কারবার!
হঠাৎ ভেষগাচার্য রূপেন্দ্রর আগমনে বিস্মিত হলেন পাঁচকড়ি ঘোষাল!তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানেলেন!পরে আগমনের হেতু জানতে চাইলেন! ভেষগাচার্য প্রত্যুত্তরে জানালেন, আজ তিনি রোগী দেখতে আসেন নি! নিজের প্রয়োজনে এসেছেন!দুজনে কিঞ্চিৎ কুশল বিনিময় ও বাক্যালাপের পর রপেন্দ্র ঘোষাল মশাই - এর নিকট জানতে চাইলেন, সৌমসুন্দর কোথায়? সে কি গুরুগৃহে তর্কসিদ্ধান্ত মশাই এর চতুষ্পাঠিতে কৃষ্ননগরে?
না, এখন সে এখানেই এক জ্ঞাতিভগিনীর বিবাহ উপলক্ষে এসেছে ! এক্ষুনি ডেকে পাঠাচ্ছি ..বললেন ঘোষাল মশাই!
রূপেন্দ্র আবার বললেন, "যদি আপনি আপত্তি না থাকে তার সন্মুখেই আমি প্রস্তাব রাখতে চাই !"
কিঞ্চিৎ ভ্রকুঞ্চিত হ'ল ঘোষাল মশাই এর!
ইতিমধ্যে সৌম্যসুন্দর এসে দুজনকেই প্রনাম করলেন! রূপেন্দ্র জিজ্ঞাসা করলেন, " শেষ উপা
সৌম্য নত নয়নে বলল," উপাধি লাভ নয় আমি জ্ঞান লাভেই আগ্রহী!
" শুনে খুব প্রীত হলাম বাবা " সৌম্যর উদ্দেশ্যে করজোড়ে রূপেন্দ্র বললেন! এবার ঘোষাল মশাইকে বললেন," আমি এসেছি একাধিক কন্যাদায়গ্রস্হ পিতা হিসাবে !"
একথা শুনে স্তম্ভিত পাঁচকড়ি ঘোষাল!তাঁর,মুখে কথা সরছে না!
রূপেন্দ্র পুনরায় বললেন, " আমার একমাত্র সন্তান রূপমঞ্জরী! এখন সে দ্বাদশবর্ষীয়া! আমি তার পিতা, হয়তো নিজ সন্তান বলে আমার কথাটা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে, কিন্তু তার রূপ ,স্বভাব, শিক্ষা....কথা থামিয়ে ঘোষাল মশাই বললেন," একি কথা বলছেন ভেষগাচার্য, এতো আমার পরম সৌভাগ্য! আপনি স্বয়ং রূপে কন্দর্পকান্তি, গুনে আপনার তুল্য মানুষ সারা বঙ্গদেশে কত জন আছেন?আর শুনেছি আপনার স্ত্রী পঞ্চগ্রামের শ্রেষ্ঠা সুন্দরী ছিলেন! আপনাদের সন্তান যে রূপে লক্ষ্মী গুনে সরস্বতী হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না!আমি এ প্রস্তাবে সন্মত!কোন শর্ত আছে বর পক্ষের তরফে? জানতে চাইলেন রূপেন্দ্র!
ঘোষাল মশাই-এর উত্তর আদৌ না! তিজলহাটির ঘোষাল বংশ ধন্য হয়ে যাবে এই বিবাহে!
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours