জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

খবরের সত্যতা যাচাই না করেই বলছি। একটি বাংলা দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে, দল নাকি সাম্যবাদী আন্দোলনে বিভাজন-পূর্বের কয়েকজন স্বর্ণঝরা তাত্বিক এবং সংসদ-কাপানো নেতাকে ভারতীয় সাম্যের অংশিদার হিসেবে মেনেছেন।  গণশক্তি সংবাদের সত্যাসত্য সম্পর্কে কিছু বলে নাই  । তবে এই সংবাদ যারা করেছেন, তারা দিল্লী পার্টি কেন্দ্র থেকে কোন ট্যুইট হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
খবরটি ঠিক হোক, কিংবা না হোক, বিষয়টি ইতিহাসগত এবং সাম্যবাদী আন্দোলনের ভবিষ্যতের দরজা উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও লুকিয়ে আছে। সেজন্য এরকম সম্ভাবনাকে স্বাগতঃ জানিয়ে রাখাটাও অনেক সম্ভাবনার দিক নির্দেশ করবে, সাম্যবাদী আন্দোলনের কর্মী এবং সাধারন সমর্থকদের মধ্যে।
------ বিষয়টা এখানে।এটা ঠিক ভারতের  সাম্যবাদী আন্দোলনে বারংবার ভাঙ্গন এসেছে । এইসব ভাঙ্গনের পরিনাম হিসেবে, অনেকে যেরকম ভেবে থাকেন, জীবন রায় কখনো  সেরকমটি ভাবতে চায় নাই । সাধারনভাবে, সাম্যবাদী সমর্থকরা তো বটেই, দলের মধ্যেও অনেকের মধ্যে এমন ধারনা রয়েছে, যেন এসব ভাঙ্গন ভারতীয় সাম্য তথা, জনগনের বিপুল ক্ষতি হয়েছে।
-----  বিপরীতভাবে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিপ্লবী উত্তোরনের ইতিহাস থেকে বুঝেছি, অতি-প্রাচীনত্বের মোড়কে মোড়া, ধর্ম বর্ণে স্ত্রী-পুরুষ, দাসত্বে ছেয়ে থাকা  বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জণসংখ্যার দেশে, পাহাড় ডিঙ্গিয়ে, মরুভূমীর বুক চিরে
-----  চুক্তি করে স্বাধীনতা পাওয়া কোন দেশে, সংসদ বহির্ভূত আন্দোলনের  অধিনায়কত্বকে বজায় রেখে, সংসদীয় সংগ্রামে সাম্যকে আবেগ হিসেবে  এবং  ক্রমে তা  বিজ্ঞানের স্তরে উঠিয়ে আনায়
-----  যে অগনিত সংগ্রামের ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মেলন এবং বিচ্ছুরনের প্রয়োজন ছিলো, সেই প্রকৃয়ায় যে তাত্বিক বুৎপত্তির কারনে যে সংঘাত প্রয়োজন ছিলো, এসব ভাংগনের সুত্র ধরেই এগুলি সামগ্রিকভাবে সাম্যকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি ভারতীয়  জনগনের এক বিপুল অংশ ক্রমে সাম্য সম্পর্কে একটা ধারনা অর্জন করেছে। এইভাবে এসব সংগ্রাম, ভারতীয় ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। তেমনি ভাঙ্গন  এবং পূর্ণগঠনের সংগ্রামগুলিও সাম্যবাদী তথা জনগনের সম্পদ।

এসব সংগ্রামকে ফিরিয়ে না নেওয়া গেলেও, পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যারা যোগ দিয়েছেন, তাদের যেমণ কিছু কিছু বিচ্যুতিএর কারন হয়েছেন,  অনেক সময় এসব বিচ্যুতি মারাত্মক রুপ নিলেও, এগুলি সবাইকারই বিপ্লবী প্রেক্ষাপট বিপুল পাহাড়ের মতো এবং কাউকে ভারতীয় সাম্যের  ইতিহাস থেকে বাতিল করা যায় না। শুধু সেকালের পাহাড় সমুহ নয়, জীবন রায়ের মতো অতি ক্ষুদ্র প্রাণীও  আজ দলের বাইরে থাকলেও এবং যে লক্ষ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা  পরোক্ষভাবে, সাম্যের জন্য আত্মবলিদান করেছে, সবাইকেই সাম্যের ইতিহাসে সম্পৃক্ত থাকতেই হবে। নামের উল্লেখ থাকুন কিংবা নয়।
-
------ এসব কারনেই সম্ভভবত; একটা সাম্যবাদী দলের ইতিহাস লেখাটা খুব কঠিন কাজ। সে ইতিহাস লিখন অতি মাত্রায় যেমণ অনুভবি মনের প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন মনের সন্তুলন। সেই সন্তুলণ নির্মানে ইতিহাসবোধ নিশ্চিত থাকতে হবে। এখানে মার্ক্সসবাদী জ্ঞানতত্ব এবং দ্বন্দ্ব তত্ব ব্যতিরেখে যে কোন ইতিহাসই লেখা সম্ভব নয়, আজকাল বুর্জোয়া ঐতিহাসিক কিংবা সাহিত্যিকরাও খাতায় কলমে না মানলেও, মন ও ইতিহাস বিচারের মানদন্ড হিসেবে মার্ক্সের জ্ঞানতত্বের বাইরে অন্য কোন  মানদন্ড বিশ্ব চিন্তনে জন্ম নেয় নাই।
যাইহোক, ইতিহাস লেখার এই প্রকৃয়া্কে নিয়ে লিখতে যাওয়ার পেছনে, অন্য একটা অভিজ্ঞতা কাজ করেছে। বিষয়টা ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, কমরেড মানবেন্দ্র রায়কে নিয়ে একটা ছবি পোস্ট করা এবং সেখানে একটি নির্দোষ  মন্তব্য জুরে দেওয়ার প্রশ্নে। ফেস বুকেই, লেনিনের পাশে দাড়িয়ে থাকা মানবেন্দ্রের ছবিটা দেখে, খুব আনন্দ হয়েছিল। মনে হোল, লেনিনের পাশে তাদের একজনকে দেখলে, ভারতের সাম্যবাদী সমর্থকরা খুশি হবে। কিন্তু এই লেখাটি , কোলকাতার  একজন বন্ধু এবং প্রবীন পার্টী নেতার বিরক্তির কারন হয়। তিনি লিখে দেন, মানবেন্দ্র যে ভূলের জন্য আন্তর্জাতীক থেকে এবং সাথে সাথে দল থেকে বিতারিত হয়েছিলেন, সেটা ব্যখ্যা না করে, এইভাবে ছেপে দেওয়ায় মানবেন্দ্র সম্পর্কে সাধারনের মধ্যে মোহ নির্মান হবে। তিনি আমায়, একথাও স্মরন করে দিয়েছিলেন, যে একটি  সাম্যবাদী দলের সাংসদ হিসেবে যথেষ্ট দায়ীত্ববোধের পরিচয় দেওয়া উচিত ছিলো।
---- উনাকে সরাসরি না লিখলেও, অন্য একই বিষয়ের উপর অন্য এক বন্ধুর মন্তব্যের উপরে, ইতিহাস সম্পর্কে একজনের দৃষ্টিভংগি কী হওয়া উচিত, সে বিষয়ে আমার কথাগুলি লিখে দিয়েছিলাম। যে মানুষটি ভারতে সাম্যবাদী দল গঠনে নিজে এবং  স্ত্রী অপরিসীম ভূমিকা নিলেন, ভারতে তার লেখাই ছিল প্রথম সাম্যবাদী সাহিত্য, যার লেখাতেই কংগ্রেস ভেংগে দলে দলে মানুষ সাম্যবাদী দলে প্রবেশ না করলেও,
---- কংগ্রেসের ভেতরেই  বামপন্থী প্রবাহ নির্মানে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন সেকালে, সাহিত্যে সর্বপ্রথম নিশ্ব=রিক্ত রাজনৈ্তিক অস্তিত্ব খুজে পেলেন, পরেরকার ত্রুটীর জন্য তাকে কি করে ইতিহাস থেকে বিমুক্ত করা যেতে পারে? 
---- এইভাবে উল্লেখ করলাম, ইতিহাস নির্মানে  কোন ব্যক্তিরই ইতিবাচক দিকগুলির অনুদানকে বাদ দেওয়া যেতে পারে না। অনুরুপভাবে নেতিবাচক দিকতুলিকেও তুল্যমূল্যে হিসেবে না নিলে ইতিবাচকতার প্রকৃত ওজনকে পরিমাপ একেবারেই সম্ভব হবে না।এইভাবে নেতিবাচকতাকে বাদ দিয়ে যেমণ ইতিবাচকতাকে বিচার করা যায় না , তেমনি ইতিহাস লেখার কালগত দিকের বিবেচনাতেও ইতিবাচকতার দিকের সাথে নেতিবাচকতাকেও হিসেবে আনতে হবেই।
----- অনুরুপভাবে, বুঝতে হয়,কোন কালের ইতিহাস যখন নির্মান হচ্ছে, তখন তার মূল্যায়ন নিশ্চিতভাবে শ্রেনীমুখীন হবেই। কিন্তু কালান্তরের পর ণতুন কালের প্রতিক্ষায় যখন পুর্বকালের মূল্যায়ন হবে, সামগ্রিকতার মধ্যেই করতে হবে। ...। উদাহারন হিসেবে, ইতিহাসের সব থেকে বিতর্কীত ব্যক্তি মহম্মদবিন তুঘলখের কথা ধরা যেতে পারে।সাধারনভাবে উনার
 নাম যখন করা হয়, তার নামে হাস্যকৌ্তুক করা হয়। অথচ তিনিই, ভারতে প্রথম বিনিময় ব্যবস্থা হিসেবে 'টাকার' প্রচলণ করেছেন।ঔরাঙাবাদে দেখেছি, উনার রাজধানী স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শণ । অনুরুপভাবে, ইতিহাস আউঙ্গজেবকে যতই  ভিলেন বলে মানা হোক না কেন, ঔরাঙ্গাবাদে গিয়ে দেখেছি - ব্যক্তিগত খরচার এক পয়সা তিনি রাজকোষ থেকে নিতেন না।

কাজেই ভারতে এখন সাম্য যখন জীবনবোধের জলতরঙ্গ, প্রত্যেক সাম্যবাদীর  প্রত্যেকটি অনুদান, ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক, উল্লেখে তাদের সবাইকে সাম্যবাদী আন্দোলনের সেই জলতরঙ্গে স্থান করে দিলেই ভারতীয় সাম্যের প্রকৃ্ত ইতিহাসটি খুজে পাওয়া যাবে। সেই অর্থে মেনে চলতে হবে - সততার প্রতীক এবং জনশ্রোতের অভিমুখ হলেও সাম্যবাদী আন্দোলনে কেউ দেবত নন ।
------  কমরেড ডাংগেকে যখন আমরা সমালোচনা করেছি, সেই কালের নিরিখেই সমালোচনা করেছি। করতে পেরেছি তাই আমরা পবিত্র হওয়ার যজ্ঞে নিজেদের যুক্ত করেছি। করতে পেরেছি কারন, তাকে আমরা দেবতা হিসেবে দেখতে চাই নাই । অনুরুপভাবে কমরেড জ্যোতি বসুকেও দেবতা বানানোর কোন চেষ্টাই মারাত্মক বিপদের কারন হবে। আজকে, ভারতীয় সাম্য যে বিশ্ব রাজনীতিতে এক স্বর্নময় অধ্যায়ে প্রবেশ করতে পেরেছে, রাজনৈতিক দিক থেকে, তার অবদান সব থেকে বেশী। এর অর্থ এই নয়, বর্তময়ান কালের রাজনৈ্তিক সন্তুলনে সাম্য ঝুলে যাওয়ায় সব দায় নিচু তালার উপরে চাপিয়ে রেখে, নিজে অব্যাহতি পেতে পারেন।

----- মজার ব্যপার, বিজেপি এর এই 'বিশ্বাস' ভিত্তিক ভাবাদর্শের প্রভাব প্রতিটি বুর্জোয়া দলে যদি  বিপুল ভাবে থাকে সাম্যবাদী দলেও তার প্রভাব কম নয়। দেখি অনেক সময় নেতা ধরে ধরে যখন 'গালাগালি' হয় তাতে কিছু কিছু সাম্যের প্রতি দায়বধ্য কমরেডরাও, বুর্জোয়া মিডিয়ার প্রভাবে গা' ভাষিয়ে দেন। অন্যদিকে দেখেছি,  যে সাম্যবাদী মহাকায়্টি, জীবনের প্রতিটি মোড়ে মার খেতে খেতে ---- এদেশে একম অদ্বিতীয় ছিলেন,
 ইতিহাস, তত্ব এবং প্রয়োগের , যিনি একমাত্র হয়েছিলেন ট্রেড ইউনিয়ন গণতন্ত্রের আকাশচুম্বি রুপের সাথে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার সন্তুলণ প্রতষ্ঠায়, তিনিই সব থেকে অনাদৃত । গত বছর, তার জন্ম দিনে ফেস বুকে, জীবন রায় সমেত মাত্র দু'জন তার ছবি প্রকাশে এনেছিলেন। অথ মেহণতিদের প্রত্যেকে তো বটেই, আমরা যারা সাম্যের নামে মাতাব্যরি করি প্রত্যেকে ঋনী। অনেক ভ্রুলত্রুটী সত্বেও যে তিন চারটি আন্দোলণ ভারতকে কাপিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছিলো, তার রাজনৈ্তিক নেতৃত্বে তিনিই ছিলেন।

আমার মনে ইতিহাস সম্পর্কে এসব বিভ্রমই ভারতীয় শ্রমিক তথা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে, ভারতীয় সাম্যবাদী আন্দোলনের স্বর্ণময় ইতিহাসের কোন চিত্র-লেখা থেকে বঞ্চিত করেছি।
----- লেনিনের সাথে ,মানবেন্দ্রের  ছবিটি যেদিন  ছাপিয়ে দেওয়ার জন্য জীবন রায় তিরস্কৃত হয়েছিলেন, সেদিন তিনি ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে ,কমরেড এস এ ডাংগের অবদানের কথা উল্লেখ করেছিলেন। প্রশ্ন করেছিলাম, কালগত দিক থেকে ভারতীয় শ্রমিক, অর্ধস্কিল্ড থেকে অতি উচ্চ স্কিল্ড হয়ে যাওয়ার পর, গণতন্ত্রকে আর হুকুমতন্ত্রে সীমাবদ্ধ রাখা যেতো না - তাই তার পতণ। সেকারনে কী করে তিনি ভূলে যেতে পারেন যে, কমরেড  শ্রীপাদ অমৃত ডাংগে এবং নীহার মুখার্জী ছিলেন - তার প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন শিক্ষাগুরু
 ---- অবস্য কমরেড ডাংগের পতন যে কারনে ঘটেছে, তার প্রথম উৎস হোল,  ভারত-সোভিয়েত সম্পর্কের সুত্র ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে এবং ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের  সমীকরন টানতে গিয়ে, কোন স্বাধীন ভারতীয়  পথ চিহ্নিত করতে অস্বিকাস্র করেছিলেন। এতে সত্রুরা ক্রমাগত সুবিধা আদায় করে নিচ্ছিলো।
লেখাতা শেষের দিকে যেতে, ইতিহাসের নির্মান কাল এবং কাল যখন ইতিহাস হয়ে যায় তার একটা জীবন্ত উদাহারন দিলে ভালো হবে। কোন বুর্জোয়া সংবাদ পত্রটি, সি পি আই এম, যাদের কে   সাম্যের ইতিহাসে যুক্ত করেছেন, বলে দাবী করেছে, তাদের মধ্যে, কমরেড ভূপেশ গুপ্তের নাম উল্লেখে আছে।
---- মণে আছে, তখন দল ভাগ  হওয়ার প্রস্তুতি চলছে।কমরেড ভূপেশ গুপ্ত চিহ্নিভাবে, দক্ষীণ পন্থি কমিউনিষ্টদের সাথে।সে সময়ে রাজ্য সভার এক নির্বাচন। রাজ্যকমিটি যুক্ত কমিটি। সি পি আই (এম) দল কমরেড গুপ্তের বিপরীতে খুব সম্ভবতঃ কমরেড স্নেহাংসু আচার্য্যকে প্রার্থী  করলেন (পূর্ব বাংলায় আমার জেলার ক্ষাতিমান মানুষ, শ্রমজীবিদের খুব কাছের) । ভাগাভাগির হিসেব অনুজায়ই নাকি দুই ভোট কম ছিলো। কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত কমরেড ভূপেশ গুপ্ত জিতে গ্যালেন। একটি ভোট ভেতর থেকেই ওদিকে গেলো। অন্যটি আটকে গেলো, অন্যটি আটকে গেলো, কোলকাতার রাজপথের গাড়ী জ্যাম হয়ে যাওয়ায় কমরেড হরেকৃষ্ণ কোনার সময় মতো পৌছুতে না পারার জন্য। এটা হোল ইতিহাস নির্মান কালের সংগ্রাম।
------ এবারে দেখুন, প্রনব বাবুর মুখে শুনেছি, শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ভূপেশ গুপ্তকে সংসদীয় ইতিহাসের জনক মানতেন। প্রধান মন্ত্রী অটলের এক ভাষন  অনুযয়ায়ী - কোন আইনকে যদি আটকে দেবেন ভাবতেন, তবে তিনি ভাষনই বন্ধু করতেন না।কখনো তিনি তিন/চারদিন  বলতেন।
------ তাই বলি ভারতীয় সংসদীয় কাঠামোটি স্বর্গ থেকে নেমে এসে কোন বাবা নির্মান করে দেয় নাই । মনে আছে, কমরেড প্রোমোদ দাসগুপ্ত চিন দেশে মারা যাওয়ার পর প্রথম সংবাদ শ্রীমতি ইন্দিরার মাধ্যমে ভূপেশ গুপ্তের কাছে আসে।

কাজেই সি পি আই (এম ) দল যদি সাম্যের ইতিহাসে প্রতিষ্ঠা কালের  নেতাদের তালিকায় কমরেড মানবেন্দ্র,  কমরেড ভূপেশ গুপ্ত, কমরেড পি সি জোশি অথবা  কমরেড সোমনাথ লাহিড়ীর নাম নামাংকীত থাকে  তাতো ইতিহাসে তাদের অবস্থানের কারনেই থাকবে।  আশ্চর্য্য হওয়ার কারন ছিলো না, কিংবা তাকে সি পি আই (এম) এর বদান্যতা বলে ভাবার কারন নেই।সংবাদপত্রটি লিখেছে "ভারতে কমিউনিষ্ট পার্টীর প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপনে নেমে সিপিম নেতৃ্ত্ব "স্মরণে শপথে ভারতের কমিউনিষ্ট উজ্জ্বল নক্ষত্ররা" শীরোনামে কমিউনিষ্ট নেতৃ্ত্বের একটি তালিকার কথা বলে, উল্লেলেখিত তিনজনের নাম স্থান পেয়েছে বলে বিস্ময়ের ভান করেছেন। এই তিনজন, উপরে উল্লেখিত চারজনের, মানবেন্দ্রের পরের তিন জনের কথা বলা হয়েছে। এমনিতেই ইতিহাসের কারনে মানবেন্দ্রের নাম থাকতে বাধ্য এবং রয়েছে।
------ খুটিয়ে দেখার প্রয়োজন কেউ বাদ গিয়েছে কী নয়। খালিচোখে কমরেড চারু মজুমদারের নাম কোথায়ো উল্লেখিত হয়েছে কী না, নজরে পরে নাই। যদি না থাকে, তার নামও আসা উচিত। সিপি আই এর তালিকায় কমরেড চারু মজুমদারকে অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বলে স্বিকার করা হয়েছে।তিনি যে ভূলই করুন না তা সৎ বিশ্বাস থেকেই করেছেন। তাকে স্থান দিয়েই ইতিহাস তার ভূলগুলিকে চিহ্নিত করবে। অন্যথায়, আমরা যারা সেই ভূল সংগশোধণ করতে গিয়ে কিংবা সেই ভূলকে অনুসরন করতে গিয়ে রক্তের যমুনা নির্মান করেছিলাম, সবাই তো অনুভূতি জগতের বাইরেই হারিয়ে যাবো।

এতো সব কথার অর্থকে এমণ ভাবার কারন নেই  -
এসব কিছু দু'টি দলের এক হয়ে যাওয়ার অভিমুখে যাত্রা।
এমণটি  কখনো হবে না,  ১৯৬৪ সালে সিপি আই, অথবা ১৯৭০ সালে
এ আই টি ইউ সি যেখানে ছিলো সেখানে নেমে এসে কোন একতা্র অর্থ হবে,  সাম্যবাদী আন্দোলনের দিক থেকেই শুধু নয়
----- ভারতে উদারণৈতিক দল সমুহ কিংবা ব্যাক্তিদের সামনে থেকে, ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামের ভাবাদর্শগত যোগানের লাইনকেই প্রত্যাহার করে নেওয়া। আজ যদি সালকিয়া এবং বর্ধমান প্লেনামের অভিমুখ অথবা স্তালিন সংক্রান মুল্যায়নকে অস্বিকার করে অথবা কর্মসূচীতে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অবস্থান অথবা শ্রেনী নেতৃ্ত্ব সম্পরকিত ধারনায় জল ঢেলে কিংবা  গর্বাচভবাদ এবং পেরোস্ত্রোয়ীকাকে মান্যতা দিয়ে
---- সিপি আই (এম) সিপি আই এর কাছাকাছি এসে থাকে, সেটাকে স্থায়ী মেনে নিলে অন্য অনেক মধ্যমবর্গীয় নেতার সম্ভম বৃদ্ধি পেতে পারে, মেহণত এবং মেহণতির অমর্য্যদা মাটিতে গুড়িয়ে জাবে।

-----  However, there should be sincere pursuit towards unity and that unity must be unified approach towards both Marxism and Leninism এবং সেখানে যে সব যায়গায় সি পি আই এম জমি ছেড়ে দিয়ে, মেহণত এবং মেহণতিদের প্রতিরোধে বিপদের কারন হয়েছেন, সেগুলিকে সংশোধণ করতে হবে প্রথম।

---- অন্যদিকে, একতার শুরু করতে হবে, গণফ্রন্টগুলিতে। সেখানেও অন্য কারনে ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রে এ আই টি ইউ সি এর কেন্দ্রে একতা হবে, ফেডারেশণ কিংব বড় বড় ইউনিয়নগুলিতে একতা হওয়ার পর। ইস্পাতে চেষ্টা হয়েছিলও, মাঠে মারা গেলো, তদানিন্তণ এ আই টি ইউ সি নেতাদের কারনেই। কমরেড গুরুদাস এবং জীবন রায় একমত থাকা সত্বেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নাই। কাজেই, এক হয়ে যাওয়ার কাজটা মনে চলুক, বেশী হাওয়া করার প্রয়োজন নেই।



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours