ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ

আজ  একুশে  ফাল্গুন  রূপেন্দ্র - কন্যা  হটীর  বিয়ে! কিন্তু  দ্বাদশী  তিথি  হওয়ায়  ক্ষুন্ন  হটী! রূপেন্দ্র একমাত্র কন্যার  বিবাহে  আড়ম্বর করেন  নি ! গ্রামের  ভদ্রজনের  নিমন্ত্রন  হলেও  যেসব  বড়  বড়  পরিবারের  সাথে  তাঁর  সখ্যতা  গড়ে  উঠেছিল! তাঁদের  নিমন্ত্রন  করেন  নি রূপেন্দ্র!বস্তুত মধ্যবিত্ত পরিবারে সে  আমলে  তা  সম্ভবও  ছিল  না! তবুও  লোক  মারফৎ  ত্রিবেনীতে দুটি  নিমন্ত্রনপত্র  পাঠিয়ে ছিলেন! একটি গুরুদেবকে অন্যটি  হটীর  পাতানো  দাদু  মাহেশের  ভবতারন  গঙ্গোপাধ্যায়কে! যদিও  জানতেন  তাঁরা  কেউই  আসবেন  না!
         কিন্তু  আশাতীতভাবে বাচস্পতি মশাই  স্বকন্যা  মালতীকে  নিয়ে বিয়ের  চারদিন  আগেই  উপস্হিত  হলেন! সাদর  অভ্যর্থনা  জানালেন  রূপেন্দ্র !
       হটী  দুর  থেকে  দেখতে  পেয়ে  ছুটে  এসে  তার  সোনা  মাকে  জড়িয়ে  ধরে! তারপর  লক্ষ্য  করে  বাবার  কোলে  ঘুমন্ত   একটি শিশুকন্যা ! সেই  নিস্পাপ  শিশুটিকে  চুমায়  চুমায়  ভরিয়ে  তোলে!হঠাৎ  ঘুম  ভেঙে  কেঁদে  ওঠে  শিশুটি!
       হটীকে  ধমক  দিয়ে  রূপেন্দ্র  বললেন," অমন  করে  ঘুমন্ত  শিশুকে  কেউ  চুমা  দেয়? দিলি তো  শ্যামার  কাঁচা  ঘুমটা  ভাঙিয়ে!"
     
  "শ্যামা  ওর  নাম?" অবাক  হয়ে  জানতে  চাইলো হটী!
      'শ্যামা '  ওর ডাক  নাম  ! ভাল  নাম  ' শ্যামা মলতী 'বললেন  রূপেন্দ্র!
    শুধু  হটী  নয়  বিস্মিত  বাচস্পতি  মশাই! তিনি  বললেন ঠিক  বলেছেন! কিন্তু  আপনি  জানলেন  কেমন  করে?
        স্বকন্যা  মালতীর  আগমনে  রূপেন্দ্র  খুশী  হলেও  সেটা  প্রকাশ  না  করে  মৃদু  হেসে  বললেন," বুঝলি,মা  আমি  ভৃগু  আয়ত্ব  করেছি  দেখলেই  মানুষের  মনের  কথা  বুঝতে  পারি!
        মালতী রহস্যটা ভেদ  করে  না! শ্যামা  মালতীর  জন্মের  আগেই  তাঁর কন্যার  নামকরন  করে  ছিলেন  রূপেন্দ্র!
            একটু  জিরিয়ে  নিয়ে  বাচস্পতি  মশাই  একখানি  পত্র  তুলে  দিলেন  রূপেন্দ্রর  হাতে! রূপেন্দ্র  জিজ্ঞাসা  করলেন," পত্র প্রেরক  কি  তাঁর  গুরুদেব?"
             বাচস্পতি মশাই বললেন," না পত্রখানি  মাহেশ  থেকে  এসেছে!সম্ভবতঃ
  ভবতারন  গঙ্গোপাধ্যায়  পাঠিয়েছেন "
মুখবন্ধ  চিঠিটি  দেখে  প্রখর  বুদ্ধিমান  রূপেন্দ্র  বুঝতে  পারলেন  বাচস্পতি  মশাইয়ের  অনুমানটি  ভ্রান্ত! নির্জনে  খামটি  খুলে  বুঝতে  পারলেন তাঁর  অনুমান  সঠিক  পত্রলেখিকা  শ্রীমতি  তুলসী  গঙ্গোপাধ্যায়!
       অবাক হলেন  রূপেন্দ্র! তাহলে  আজও  তুলসী  অরক্ষনীয়া?
   জামাইবাবুকে  প্রনাম  জানিয়ে  তুলসী  লিখেছেন! হটীর  বিয়েতে  যেতে  না  পারলেও  সে  খুব  আনন্দিত  এবং  একটি  আংটি  আর্শীবাদ স্বরূপ পাঠিয়েছেন এবং  জানিয়েছেন  আগামী  বৈশাখে  ভাটপাড়ায়  তাঁর  বিবাহ  হচ্ছে! তিনি  চান  তাঁর  জামাইবাবু  তাঁকে  যেন  দুর  থেকে  আর্শীবাদ  করেন!
(যাবো)




Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours