জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

সাধারনভাবে যখন অন্যান্য দেশের মতোই, জনগনের এই অংশ,  ভারতীয় ব্যবস্থার আর্থ-, সামাজিক সম্পর্কগুলিকে অর্থনীতির অনুরুপে টিকিয়ে রাখা, রাষ্ট্রের  নিয়ন্ত্রক, সরকারি ও বেসরলার উৎপাদন ও বন্ঠনের নীতি নির্ধারকদের  'বুদ্ধির যোগানদারের' ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকারি-বেসরকারি  প্রশাসনের সর্বচ্চস্তর থেকে অফিসের দফতরি পর্য্যন্ত, সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ স্তর থেকে  সর্বনিম্নের উর্দিধারি পর্য্যন্ত, অর্থনীতিতে বিড়ম্বনা নির্মানের কারনে সর্বচ্চ জ্ঞানী ব্যক্তিটি থেকে কোন বর্ষায় জল মাপা কিংবা অর্রথনীতির পরিনামের হিসেব নিকেশ করার সর্বনিম্ন ব্যক্তিটি পর্য্যন্ত
-----  অনুরুপভাবে, কারখানা বা অফিস গেটে, অথবা বন্দরে, নর্দমা সাফাই থেকে শিক্ষা হয়ে হাসপাতাল ব্যবস্থা পর্য্যন্ত উল্লেখিতি নীতিগুলি, উপর থেকে নিদৃষ্ট পথ ধরে চলছে কিনা, ইত্যাদি সম্পর্কে যন্ত্র কেরানী থেকে মাছি-মারা কেরানীরা   এবং এমন কী
-----  এদের পরিবারবর্গ এবং তার সামাজিক সম্পর্কগুলি  সেই নিদৃষ্ট কোরডিওগ্রাফীর নৃ্ত্যভঙ্গিমায় কার্য্যরত কিংবা নয়, সে সব কিছুর প্রয়োগের রীতি নীতি, ইত্যাদির সব কিছুতে বুদ্ধির যোগানদার হিসেবে কাজ করে থাকেন।
আরো এগিয়ে গিয়ে বলতে হয়, বর্তমান কালে, ভারতীয় ধর্মবাদী ফ্যাসিস্ত এবং বিশ্বের পুঁজিকেন্দ্রিক ফ্যাসিস্তদের যুগল বন্দি নির্মানের কারনে
----- বিদ্যালয় শিক্ষার পঠন-পাঠন প্রনালীতে আদিভৌতিকবাদ (যেমন গাঁজা-খাইয়ে ক্যান্সার সারানো) বা ফিজিক্স থেকে ম্যাটা ফিজিস্ক এর পাঠ ঢুকিয়ে দিয়ে,  অখন্ড জ্ঞানকে খন্ডিত জ্ঞানে বদলে দিয়ে, বিজ্ঞান সাধানাকে ইংরাজী সাধনায় বদলে দিয়ে, অথবা
----- নান্দনিক কাজকর্ম  - যেমন সাহিত্য, কলা ভাষ্কর্য্য, ছায়া-ছবি সহ সংস্কৃতির স্বরলীপিকে বদল ইত্যাদিকে বদলে দিয়ে তাকে 'Abolition of History  বা ' ইতিহাসের বিলোপ' এবং 'চিরন্তন  দাসত্বে' পক্ষে' বা Eternal slavery   অনুকুলে
----- নতুন Dancing Cardiograph  বা নৃত্য কারডিওগ্রাফ নির্মানের প্রয়োজনী নৃ্ত্যভংগীমা নির্মানের 'বুদ্ধি' মধ্যবিত্তদের হাত ঘুরেই আসতে হয়। 'রবীন্দ্রবধের' রবীন্দ্র সুরের বদলে, কথার উপর পশ্চিমি সুর উপর থেকে বসিয়ে দেওয়া কিংবা দমাদম ঢাক ঢোল পিটে সংগীত হত্যার কার্য্য প্রনালীর 'বুদ্ধি' ওঃ
----  সেখান থেকেই বর্ষার দিনের কাঁদাজলের মতোই,  এই মধ্যমবর্গীয় বুদ্ধি সত্বা থেকেই নিয়ে আসতে হয়।
ভারতীয়, বিশেষ করে  বাংলার মধ্যবিত্তদের মধ্যে, ইতিমধ্যে, প্রাচীক ক্ল্যাসিক্যাল সংস্কৃতির সাথে  আধুনিক প্রগতিবাদি ধারার অভিমুখ যুক্ত করে ইতিমধ্যে বুদ্ধিসত্বার এক আকর নির্মান হয়েছিলো।
এতদসত্বেও  বিলিতিরা,  দাসত্ব প্রবক্তা হিসেবে  মধ্যবিত্ত্বের সন্ধানে ভারতীয় উপাদানকেই যদি বেশী পছন্দের হয় তার পেছনে  বেশ কিছু কারন রয়েছে। আমেরিকায় 'বুদ্ধিযোগ্য' লোকের যোগানই কম। ভারতে, গরু-রাম ভিত্থিক আর্থ-সামাজিক পরিমন্ডলের সাথে বিলিতি ফ্যাসিস্ত ভাব একত্রিত করার মতো উপযুক্ত শয়তান পাওয়া বিড়ল। ওদের দেশে অষ্টাবিংশ শতাব্দীর পূর্বেই গনতান্ত্রিক বিপ্লব হয়ে যাওয়ার কারনেই এই বিপত্তি। গরু এবং গরুপ্রশ্রাব কিংবা গাঁজা ভিত্তিক বুদ্ধিসত্বা ওরা নির্মান করতে যাবে কেন?
----- ওরা নিবিড়ভাবে লক্ষ করেছেন, ভারতীয় মধ্যবিত্তের মধ্যেই 'ভগবানের ঘারে ভূত চাপিয়ে' ভাগবান- ভুতু চরিত্র  নির্মানের যোগ্যতা বিদ্যমান। এরা এটাও বুঝেছে - বাংলা সিরিয়ালে স্বরযন্ত্রের পাঠে যেভাবে সন্ধ্যে থেকে দীর্যরাত পর্য্যন্ত টিভির সামনে মধ্যবিত্ত জনগনকে টেনে রাখতে পাড়ে
------- এমন 'চিত্রনাট্য' লেখার বুদ্ধিসত্বা,  বিশ্বের কোথায়ো খুজে পাওয়া  সম্ভব নয়, যা  ভারতীয় মধ্যবিত্তদের চিত্তপট থেকে টেনে তোলা সম্ভব। একটা ছায়াছবিতে আজকাল 'তিনটে মহিলা ভিলেন' না হলে এগুতেই চায় না।
আজ যখন রবীন্দ্রবধের পালাটাকে সামনে আনা হচ্ছে, মধ্যমবর্গীয় 'বুদ্ধিভান্ডারের অতীতকে' পাঁচনে ডুবিয়ে,  যেভাবে এই পালাটা ভারতীয় মধ্যবিত্তের ভেতর থেকে 'বুদ্ধি' খুজে বের করা যায়, বিশ্বের অন্য কোথায় নয়।তাই রেনেঁশা- পূর্ব,  জাগরন- সাহিত্যের সূর্য্যরশ্মীর গড়িয়ে যাওয়া কিছু চ্ছটাকে কাজে লাগিয়ে  যেমনভাবে দাসত্বের চালচিত্রের রসদ, ভারতীয় মধ্যবিত্তদের ভেতর থেকে টেনে তোলা যায় অন্যত্র কোথায়ো পাওয়ার কথা ভাবাই যায় না। 
ইতিহাসের ঝিলিক হিসেবে পৃত্থিরাজ, কিংবা আঔরংগ ধর্মান্ধতাকে জংগল কিংবা পাহারে যিনি তাড়া করে, ইতিহাসের অতীতের একটে চাপ্টারকে, কিংবা অনেক অনেক অতীতের রাজসত্বাকে
-----  'যুদ্ধ উন্মত্ততা'কে আধুনিক কালের প্রতিরক্ষার বিষয় এবং নিরুপদ্রপে  'আদিভৌতিক' ঐতিহাসিক সত্বায় বদলে দেওয়ার উপাদান এদেশের মধ্যবিত্তদের কাছ থেকই টেনে তোলা সম্ভব।
মধ্যমবর্গ থেকে নিস্কাসিত 'বুদ্ধিসত্বার' সর্বোৎকৃষ্ট উপাদানটির সাথে এই লেখকের পরিচয় হয়েছে, তার ১২ বছরের সংসদীয় জীবনে। তিনি অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন
----- কিভাবে মাত্র দুই দশকের সময় কালে, কোন সমাজতান্ত্রিক  হিসেবে সাংবিধানিকভাবে ঘোষিত,  খাঠোমোর মধ্যে,ছোটকালে আমরা যেমনভাবে বারুদ ঢুকিয়ে 'তুবরী'  বানাতাম......। তেমনি বেশ হিসেব কিতেব মতো 'সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর' মধ্যেই ঠেসে-ঠুশে, একপ্রান্তে আমেরিকা মিলিটারীতন্ত্রকে এবং ভারতীয় অতি-প্রাচীনত্বের আদিভৌতিকবাদের ফ্যাসিবাদী সত্বা একসাথে,ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।
ইতিহাস বিলুপ্ত এবং চিরন্তন দাসত্ব পন্থীরা জানে,
ভারতে দাসত্বের অনুকূলে এমন 'স্বর্নগর্ভা'    অবস্থাটি বিলেতিতের হাতে নির্মিত 'বাবুতন্ত্রের' আধুনিক সংস্করনই পারে
------- একটা তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে, পুরো মনমোহনতন্ত্র এবং মোদিতন্ত্রকে ঢুকিয়ে দিতে। সেটাই সাহেবেরা করিয়ে নিয়েছে। সংগে সেখানে শ্রী অমিত সাহতন্ত্রকেও ঢুকিয়ে নিয়েছে।
এই এক লোমহর্ষক কিন্তু বিস্ফোরক অথচ সম্ভাবনাপূর্ন
মনন সত্বার তলদেশ পর্য্যন্ত নেমে গিয়ে -----,
সেই ঈশ্বর চন্দ্রের হাত ধরে বঙ্কীম হয়ে রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে প্রাচীনত্বের ভেতর থেকে গৌরবগাথা সিঞ্চন, সেখান থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে - প্রেমচন্দ্র থেকে রাহুল পর্য্যন্ত নির্মিত ভাব সত্বার শ্রোত বেয়ে, কল্লোল যুগ এবং তারো পরে আই পি টি এর নির্মিত
------ভাব প্রবাহে নেমে এসে অমৃতের সন্ধান যে এখন আর সেই পুরানো
মধ্যবিত্ত সত্বার পক্ষে সম্ভব নয়, সে বার্তা ইতিমধ্যে ঘোষিত।
ভারতীয় সাম্য ঘোষনা করেছে,
আধুনিক সংগঠিতে শ্রমিক অংশের মধ্যে সঞ্চিত  সর্বোচ্চ চেতনের
 সংহতি ঘটিয়েই,
সব কুজ্ঝটিকে ভেদ করেই মানুষকে মুক্তি সাগরের কাছাকাছি পৌচ্ছে দিতে পারবে। সেখানে সব থেকে বড় প্রশ্নঃ
শ্রমিক আন্দোলন, আজকের কালগতভাবে বিবর্তিত  মদ্ধবিত্তের
বোধসত্বায় প্রবেশের চেষ্টা করবে কী না, সেটাই আজকের কালে
বৃহৎ প্রশ্ন। (ক্রমশ)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours